ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি

প্রকাশিত: ১২:০০, ১৩ নভেম্বর ২০১৯

উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন দাবি

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ প্রস্তাবিত উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সামাজিক সংগঠন ‘রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ’ এই কর্মসূচী পালন করে। কর্মসূচী থেকে অবিলম্বে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে দেশের আমলাদের জন্য রাজশাহীর প্রবেশপথ বন্ধ করা হবে। সড়কপথ, রেলপথ এবং আকাশপথে তাদের রাজশাহীতে ঢুকতে দেয়া হবে না বলেও ঘোষণা দেয়া হয় । কর্মসূচী থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজশাহীর বাঘা-চারঘাট থেকে পশ্চিমে রাজশাহী শহর রক্ষা বাঁধ ও মহানগরীর টি-গ্রোয়েন, পুলিশ লাইন্স হয়ে গোদাগাড়ী পর্যন্ত ১৭ কিলোমিটার নদীর তীর সংরক্ষণের কাজ স্থায়ীভাবে করার দাবি জানানো হয়। এছাড়া এসব এলাকাকে খরাপ্রবণ হিসেবে ঘোষণা করারও দাবি জানানো হয়। নগরীর শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। নগরীর বিভিন্ন প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিছিলটি। পরে নগরীর সপুরা এলাকায় রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এ সময় পাউবো কার্যালয় ঘেরাও করে দুপুর পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করা হয়। কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী। তিনি বলেন, উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলন করা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবায়ন হচ্ছে না। অথচ প্রকল্পটি কৃষি এবং কৃষকের জন্য জরুরী। এ কথা প্রধানমন্ত্রীও বিভিন্ন সময় বলেছেন। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়নি। তাই আমরা এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই। এছাড়া বর্ষা ও বন্যার সময় নদী তীর রক্ষার কাজ না করে শুষ্ক মৌসুমে কাজ করার জন্যও তিনি দাবি জানান। সমাবেশে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে বরেন্দ্র এলাকাসহ তিন জেলায় ভূ-উপরস্থ পানি দিয়েই সেচ ব্যবস্থার উন্নয়ন, পদ্মা নদীর প্রাপ্ত মাটির যথাযথ ব্যবহার, ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা কমানো, শষ্যের নিবিড়তা বৃদ্ধি করে ফসলের উৎপাদন বাড়ানো এবং আর্থ-সামাজিক ও পরিবেশগত অবস্থার উন্নয়ন সম্ভব। কিন্তু প্রকল্পটি বাস্তবায়নে অবহেলা করা হচ্ছে। দ্রুত এটির বাস্তবায়ন না হলে আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, প্রকল্পটির সর্বমোট এলাকা ১ লাখ ৭৮ হাজার ২০০ হেক্টর। যার মধ্যে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ১ লাখ ৩৩ হাজার ৭০০ হেক্টর এবং সেচযোগ্য এলাকা ৭৪ হাজার ৮০০ হেক্টর। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এত বিপুল পরিমাণ জমিতে ফসল ফলবে। জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব থেকে মুক্ত হয়ে এ অঞ্চল মরুকরণের হাত থেকেও রক্ষা পাবে। সমাবেশে বক্তব্য দেন- রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আবদুল মান্নান, সাংগঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা অধ্যাপক লুৎফর রহমান, এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, সাংস্কৃতিক কর্মী মিনহাজ উদ্দিন মিন্টু, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু তাহের খোকন, মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চের সভাপতি আবদুল মতিন, মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন আল আজাদ, মুক্তিযোদ্ধা বজলুর রহমান, জেলা লোকমোর্চার সদস্য আলিমা খাতুন লিমা, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) জেলার সহ-সভাপতি ডাঃ সেলিনা বেগম, প্রকৌশলী খাজা তারেক, ওয়েবের সভাপতি আনজুমান আরা পারভিন লিপি, ব্যবসায়ী আনসার আলী বাবু, যুবনেতা একেএম জুবায়েদ হোসেন জিতু, ছাত্রনেতা জাহিদ বাবু প্রমুখ। বক্তারা বলেন, প্রায় দুই যুগ ধরে উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং নদীভাঙন থেকে এলাকা রক্ষায় আন্দোলন চলছে। নদী তীর রক্ষায় আংশিক কাজ হলেও এখনও অনেক এলাকা অরক্ষিত। আর আলোর মুখ দেখেনি উত্তর রাজশাহী সেচ প্রকল্প।
×