ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান শিক্ষা উপমন্ত্রীর

উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে জাবিতে আন্দোলন চলছেই

প্রকাশিত: ১১:০৪, ৭ নভেম্বর ২০১৯

উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে জাবিতে আন্দোলন চলছেই

জাবি সংবাদদাতা ॥ আগের দিন হল ছাড়ার নির্দেশ দিলেও বুধবার সেই ঘোষণা উপেক্ষা করেই উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তার অপসারণ দাবি ছাড়াও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সংহতি সমাবেশ করেছেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে সক্রিয় আন্দোলনকারীরা। এদিকে শান্তি এবং শৃঙ্খলার স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। জাবি পরিস্থিতি নিয়ে বুধবার বিকেল চারটায় জরুরী সংবাদ সম্মেলনে উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এ আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, কারও কোন অভিযোগ থাকলে প্রমাণসহ উপস্থাপন করলে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অস্থিতিশীল করা যাবে না। আমরা চাই না পরিবেশ অস্থিতিশীল হোক। পরিস্থিতির অবনতি হোক। এর আগে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংহতি সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এছাড়া প্রীতিলতা হলের ছাত্রীরা তালা ভেঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেন এবং তারা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাবেন না বলেও জানান। এ বিষয়ে আন্দোলকারী শিক্ষার্থী তাপসী প্রাপ্তি দে বলেন, শিক্ষার্থীরা যাতে আন্দোলনে অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য হল তালা মেরে বন্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমরা এই আচরণের তীব্র নিন্দা জানাই। অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম কোনভাবেই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকেরা। দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত এই সংহতি সমাবেশে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন ড. মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহাসহ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায়, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন প্রিন্সসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংহতি সমাবেশে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার নিয়োগকৃত ভিসি এবং সরকারী ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে দুর্নীতি প্রকাশিত হয়েছে। এতদিন ধরে আন্দোলন চলে, অথচ সরকার কোন ব্যবস্থা নেয়নি, তদন্ত কমিটি গঠন করেনি। আমাদের দাবি থাকবে আজকের মধ্যেই এ সমস্যা সমাধানে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, ছাত্রলীগ, সরকারী দলের রিপোর্টের ভিত্তিতে উপাচার্য নিয়োগ হয়ে থাকে। আমরা দেখতে পাচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে যাদের নির্যাতন চলে তাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ভিসি টিকে আছে। সংহতি সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর তপন কুমার সাহা বলেন, চার বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালন করেছি, কিন্তু কখনও তো বিশেষ ছাত্র সংগঠনকে নামানোর প্রয়োজন হয়নি। এখন কেন হলো? শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা লাঞ্ছিত হওয়ার পর উপাচার্য এটিকে ‘গণঅভ্যুত্থান’ বলেছেন। এটি আসলে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র এবং শিক্ষক হিসেবে দুর্ভাগ্য। জাহাঙ্গীরনগরকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমার-আপনার-সকলের। অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের বিরুদ্ধে শুধু তদন্ত না বরং তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে। নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ভয় দেখিয়ে, পুলিশ দিয়ে, শিবির তকমা লাগিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই ন্যায়সঙ্গত আন্দোলন কখনোই বন্ধ করা যাবে না। মিথ্যাচার করে মসনদ টিকানো যাবে না। এই আন্দোলন আরও বেগবান হবে। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা প্রত্যাখ্যান করে এবং উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলনের ডাক দিয়ে সংহতি সমাবেশের পর বিকেল সাড়ে চারটায় পুরনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি মিছিল উপাচার্যের বাসভবনের সামনে যায়। সর্বশেষ সংবাদ পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান করছে। উপাচার্যের বাসভবনের সামনে নিরাপত্তার দায়িত্বে প্রায় ১২০ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা যায়। শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার আহ্বান শিক্ষা উপমন্ত্রীর সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সরাসরি হস্তক্ষেপ করে না উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি জ্ঞানের ক্ষেত্র। এটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। এখানে নির্দিষ্ট একটি কাঠামো রয়েছে। তারপরও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা সেটি তদন্ত করে দেখব। কেউ এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেননি। তাছাড়া অভিযোগ আনলেই তো হবে না, সেটি প্রমাণও হতে হবে। উপমন্ত্রী বলেন, আন্দোলনকারীরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় এসেছিলেন, ৮ নবেম্বরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট বিষয়ে তারা অভিযোগ জমা দেবেন তথ্য প্রমাণাদিসহ। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় যে সেটা হওয়ার আগেই আমরা দেখতে পেয়েছি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত উপচার্যের বাসভবন ঘিরে একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করা হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সেখানে অবস্থান করে অবরোধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছেন। এর ফলশ্রুতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আপাতত বন্ধ রাখার। আন্দোলনের ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উল্লেখ করে উপমন্ত্রী বলেন, সেখানে উন্নয়ন কাজের পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে গেছে। এর ফলে আমাদের সন্তানরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। আমরা চাই না একে অপরের দ্বিমত প্রকাশের মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীদেরই ক্ষতি হোক। সকলের নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে যেন কেউ আইন নিজের হাতে তুলে না নেন। উপমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের কাছে মূল অভিযোগ তথ্য-প্রমাণাদিসহ দয়া করে আমাদের কাছে উপস্থাপন করুন, আমরা তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। বিশ্ববিদ্যালয় এই মুহূর্তে বন্ধ ঘোষণা হয়েছে, আমরা আশা করি সেখানে শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি বজায় থাকবে এবং ছাত্রছাত্রীরা যার যার মতো যেটা ব্যবস্থা নেয়ার সেটা ব্যবস্থা নেবেন। গত দুই মাস ধরে অচলাবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ব্যবস্থা নেয়া প্রসঙ্গে উপমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো স্বায়ত্তশাসিত, সেখানে নিজস্ব প্রশাসন আছে, মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক উপাচার্য নিয়োজিত হয়েছেন, সিন্ডিকেট আছে সেখানকার বডিগুলো ভিন্ন। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে সরাসরি হস্তক্ষেপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে করি না। সেখানে কোন ধরনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া সরাসরি হস্তক্ষেপ করব, আইনী কাঠামোতে সেটা সম্ভব নয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির আইনী কাঠামো মধ্য থেকেই আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়। উপাচার্যের বাসভবন অবরোধ প্রসঙ্গে উপমন্ত্রী বলেন, উপাচার্য মহোদয়ের বক্তব্য হচ্ছে- সেখানে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়েছিল সেজন্য তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছিলেন। আমাদের দাবি-দাওয়া থাকতে পারে, কিন্তু একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির বাড়ি ঘেরাও করে অবরুদ্ধ করে ফেলি, সেটা অমানবিক এবং স্বাভাবিকভাবেই সেটা নৈতিকতার পর্যায়ে পড়ে না। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়ে উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষকম-লীদের বিশেষ করে আহ্বান জানাব তাদের মাধ্যমেই তো আমাদের ছাত্রছাত্রীরা শিখবে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মত-দ্বিমতের সংস্কৃতি থাকবে, সেগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমের সৌন্দর্য। সেটা সহিংসতায় রূপান্তরিত হলে আমাদের হস্তক্ষেপ করতে হয়, তবুও আমরা চেষ্টা করি একটা নির্দিষ্ট মাত্রায় করতে পারি। এখানে বল প্রয়োগের কোন বিষয় নেই। সহিংস কাজ যারা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। উপমন্ত্রী বলেন, দুই পক্ষের এমন এটা পর্যায়ে পৌঁছানোর প্রবণতা আমরা দেখছি যেখানে সহিংসতাকে উস্কে দেয়ার জন্য তৃতীয় কোন পক্ষ সেখানে পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে করে তুলতে পারে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে সব সময় দেখেছি একটি অপরাজনৈতিক শক্তি প্রগতিশীল রাজনৈতিকর আন্দোলনে নানান ধরনের ষড়যন্ত্র করে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য চেষ্টা হয়েছে, তাই আমরা শঙ্কিত। আমরা বলছি না সেটা এখানে হয়েছে, তবে সেই ধরনের শঙ্কা আছে তৃতীয় পক্ষ সেখানে সুযোগ নিতে পারে। আমরা সবার কাছে আহ্বান জানাব শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য। তিনি আরও বলেন, তথ্য-প্রমাণাদির ভিত্তিতে আমাদের ব্যবস্থা আছে। পাশাপাশি ফৌজদারি দ- ব্যবস্থা আছে। এত এজেন্সি থাকতে ধৈর্যচ্যুতি হওয়া অস্বাভাবিক এবং অনাকাক্সিক্ষত। আমরা চাই না উত্তেজনাটা এমন পর্যায়ে পৌঁছাক যে সেখানে সহিংসতা সীমা অতিক্রম করে। এক প্রশ্নে তিনি বলেন, একটা পক্ষ বলছেন সেখানে দুর্নীতির গন্ধ পেয়েছেন বা আশঙ্কা করছেন, আরেকটা পক্ষ বলছে সেখানে তো অর্থ ছাড়ই হয়নি সেখানে দুর্নীতি কীভাবে হয়েছে। সেখানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঠিক রাখাই আমাদের দায়িত্ব। ছাত্রছাত্রীদের হলে থাকতে বাধ্য করা হলে কাম্য নয় এবং তাদের মতো করে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষেত্রে কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে তাহলে সেটা আমাদের দেখতে হবে। মহিবুল হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলনের পর উপাচার্যের পদত্যাগের পর আর অভিযোগ হারিয়ে যায়। অভিযোগকারীও সে অভিযোগ নিয়ে আর আলোচনা করেন না। আমরা আহ্বান জানাব যে উপাচার্যের পদত্যাগই কি এখানে মুখ্য? উপাচার্য পদত্যাগের পরপরই অভিযোগ হারিয়ে যায় বাতাসে মিলিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগকারীও অভিযোগ নিয়ে কেন যেন আলোচনা করে না। যদি সত্যিকার অর্থে আন্দোলন করে থাকি তাহলে পদত্যাগের পরও ফলোআপ করতাম। ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, এটা অনেকাংশেই অনভিপ্রেত। ছাত্রলীগের নামধারী বা পদবিধারী কেউ যদি সেখানে থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যস্থা নেয়া হবে। সরকারী দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে অপরাধ করে পার পেয়ে যাবেন- এই সংস্কৃতি আর থাকবে না। কোন পক্ষ ৮ তারিখের আগে আজকে বাসভবন অবরুদ্ধ করার কাজটা করেছে, সেটাও আসলে অনিভিপ্রেত। এদিকে আন্দোলনে শিবিরের মদদ ও অর্থ দেয়ার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেছে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের জাবি শাখার সভাপতি জুয়েল রানা। তিনি বলেন, আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি তদন্ত করার দাবি নিয়ে গিয়েছিলাম। ভিসি (উপাচার্য) ম্যাডামকে মুক্ত করতে যাইনি। জুয়েল রানা বলেন, ছাত্রলীগের প্রতি জাবির ভিসি যে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, সেটি তার ব্যক্তিগত জায়গা থেকে জানিয়েছেন। তবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ খারাপ কিছু নয়। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন তিন মাস ধরে চলছে। ভিসিকে উদ্ধার বা আন্দোলন প্রতিহত করতে গেলে আগেই যেতাম। আমরা অনুমানের ভিত্তিতে কিছু বলছি না। এই ছাত্রলীগ নেতা আরও বলেন, আন্দোলন করার অধিকার বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার আছে, ভিসিকে রক্ষা করার দায়িত্বও আমার নয়। তবে ছাত্রলীগের বক্তব্য হচ্ছে, শিবিরমুক্ত ক্যাম্পাস চাই। আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে, অডিও আছে। কে অর্থ দেয়, কে টাকা নেয়, সব প্রমাণ আছে। তবে, সবাই যে শিবির তা নয়, অনেক শিক্ষক আছেন, যাদের ব্যক্তিগতভাবে চিনি। তারাও জানেন না যে, তাদের পাশে শিবির আছে। আমাদের যুদ্ধ ঘোষণা শিবিরের বিরুদ্ধে। আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে নয়। তারা শিবিরকে বাইরে রেখে আজ আন্দোলন করছেন। আমাদের কোন আপত্তি নেই। যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তারা কিন্তু আজ ক্যাম্পাসে নেই। এতেই প্রমাণিত হয়, তারা শিবিরকর্মী ছিলেন। ঢাবিতে মিছিল, সমাবেশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা বিশ^দ্যিালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্র সংগঠনগুলো। রবিবার দুপুরে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সমাবেশ করেছে বাংলাদেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। সমাবেশে ডাকসু ভিপি নূরুল হক নূর, ডাকসু সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেন, বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হোসেনও বিন ইয়ামিন মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
×