ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড. আখতারুজ্জামান আবারও ঢাবির উপাচার্য

প্রকাশিত: ১০:৪৬, ৪ নভেম্বর ২০১৯

 ড. আখতারুজ্জামান আবারও ঢাবির উপাচার্য

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অধ্যাপক ড. মোঃ আখতারুজ্জামানই হলেন ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য। দীর্ঘ ৬ মাস পর উপাচার্য পেল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিনকে (আরেফিন মাতিন) বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য হিসেবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রবিবার তিনটি বিশ^বিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের পৃথক পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ১৯৭৩ এর আর্টিকেল ১১-এর (১) অনুযায়ী সিনেট কর্তৃক মনোনীত প্যানেল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এই নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদে নিয়োজিত আছেন। চার বছরের জন্য ড. আখতারুজ্জামানকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে, রাষ্ট্রপতি প্রয়োজন মনে করলে এই নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। এর আগে, গত ৩১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল ভিসি প্যানেল চূড়ান্ত করে। ওইদিনই বিকেল সাড়ে তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তার আগের দিন সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের বৈঠকে তিন সদস্যের প্যানেল চূড়ান্ত হয়। প্যানেলে থাকা নীলদলের তিনজন ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এস এম মাকসুদ কামাল। দলের সদস্যদের ভোটে এই তিনজনের নাম চূড়ান্ত হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ সর্বোচ্চ ৪২ ভোট, উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান ৩৬ ভোট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির টানা তিনবারের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল ৩০ ভোট পেয়ে মনোনীত হয়েছিলেন। তবে ৩১ জুলাই অনুষ্ঠিত সিনেটের বিশেষ অধিবেশনে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনে কোন মতামত দিতে না পারার অভিযোগ তুলেছিলেন ঢাবি সিনেট সদস্যরা। উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান নিয়ম ভেঙ্গে একক সিদ্ধান্তে প্যানেলের ১ নম্বরে নিজের নাম দিয়েছেন বলে অভিযোগ তোলেন তারা। তবে, অভিযোগ অস্বীকার করেছেন উপাচার্য। নিয়ম মেনেই প্যানেল হয়েছে বলে দাবি করেছিলেন তিনি। ওই ঘটনার পর থেকেই সকলে অপেক্ষা করছিলেন কে হচ্ছেন উপাচার্য। এই সময়ে বেশ কয়েকবার উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে নানা গুজব ছড়ালেও শেষ পর্যন্ত তা গুজবই থেকে যায়। এরপর তিন মাসেরও বেশি সময় পর রবিবার দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেলেন ড. আখতারুজ্জামান। এদিকে দীর্ঘ ৬ মাস পর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. ছাদেকুল আরেফিনকে (আরেফিন মাতিন) রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে এই নিয়োগ দেয়া হয়েছে। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। চার বছরের জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তবে, রাষ্ট্রপতি প্রয়োজন মনে করলে এই নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন। এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ৪৫ দিন স্বেচ্ছায় ছুটি কাটিয়ে গত ২৭ মার্চ অবসরে যান বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এস এম ইমামুল হক। সেই থেকে শূন্য ছিল বিশ্ববিদ্যালয়টির সর্বোচ্চ অভিভাবকের এই পদটি। শূন্য এই পদে নিয়োগ পেতে দৌড়-ঝাঁপ শুরু করেছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন অধ্যাপক। এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য পদে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে নিয়োগ দিয়েছে সরকার। গত জুন থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসির চলতি দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনেটের মাধ্যমে নির্বাচিত প্যানেল থেকে নিয়মিত উপাচার্য নিয়োগ বা পুনরায় আদেশ না দেয়া পর্যন্ত শিরীন আখতারের নিয়োগ বলবৎ থাকবে। উপাচার্যদের সার্বক্ষণিকভাবে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে হবে বলেও আদেশ জারি করা হয়েছে। উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় এখন তাকে উপ-উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
×