ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

নাব্য হারানো উত্তরের চার নদী রক্ষা ও বহুমুখী মেগা প্রকল্পে অচলাবস্থা

প্রকাশিত: ১০:২৫, ২৬ অক্টোবর ২০১৯

 নাব্য হারানো উত্তরের চার নদী রক্ষা ও বহুমুখী মেগা  প্রকল্পে অচলাবস্থা

সমুদ্র হক ॥ উত্তরবঙ্গের নাব্য হারানো চার নদীতে জোয়ার এনে নদীমুখী বহুমুখী উন্নয়নের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি নেই। গত বছর নবেম্বর মাসে ২ হাজার ২৩৫ কোটি টাকার ব্যয়ের প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদিত হয়েছে। বলা হয়েছিল, খুব দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। চলতি বছর জানুয়ারি মাসে প্রকল্প পরিচালক নিয়োগ দেয়া হয়। এরপর সরকারী নির্দেশ থমকে থাকে। চলতি বছর সেপ্টেম্বরে প্রকল্পের কয়েকটি অংশের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। আর এগোয়নি। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়নের অন্যতম প্রতিষ্ঠান বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী বদলি হয়ে নতুন নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান যোগদান করেছেন। নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান জানান, একনেকে অনুমোদিত মেগা প্রকল্পটির নাম ‘বাঙালী-করতোয়া-ফুলজোড়-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ।’ এর পাশাপশি যমুনায় তীর সংরক্ষণের একটি প্রকল্প প্রি একনেক পর্যায়ে রয়েছে। এর পাশাপাশি আরেকটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের অপেক্ষায় আছে। তা হলো গাইবান্ধার খুলশি থেকে বগুড়ার পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া করতোয়া নদী ড্রেজিং করে দুই ধারে দীর্ঘ সড়ক ও বাগান, বিনোদনের আকর্ষণীয় স্পট গড়ে তুলে দক্ষিণে শেরপুর উপজেলার বাঙালী নদীতে গিয়ে শেষ করা। এই প্রকল্পে ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা। প্রকল্পটি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানোর পর বগুড়া পাউবোর কাছে কয়েকটি বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে। উত্তর জমা দেয়া হয়েছে। এরপর আরও দুই ধাপ আছে। তবে প্রথমে কাজ শুরু হবে ‘বাঙালী-করতোয়া-ফুলজোড়-হুরাসাগর নদী সিস্টেম ড্রেজিং পুনঃখনন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প।’ কবে এই কাজ শুরু হবে এ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের শুরুতে আছে- নদীতে ক্যাপিটাল জ্রেজিং তারপর তীর সংরক্ষণ। কথা ছিল চলতি বছর জুন মাসে তীর সংরক্ষণের টেন্ডার আহ্বান করা হবে। তা না হয়ে এক মাস আসে কেবল কিছু অংশের টেন্ডার আহ্বান হয়েছে। এই বিষয়ে পাউবো সূত্র জানায় নদী ড্রেজিংয়ের বিষয়টি জটিল হওয়ায় আন্তর্জাতিক টেন্ডার আহ্বান করা হয়। দরপত্র আহ্বানের পর আরও কিছু সময় লাগে। এ অবস্থায় চলতি বছর প্রকল্পের ছোট অংশের কাজ শুরুর সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে পাউবো চেষ্টা করছে দ্রুত কাজ শুরুর। প্রকল্পে বগুড়াকে কেন্দ্রবিন্দু করে উত্তরে গাইবান্ধা ও দক্ষিণে সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যে বয়ে যাওয়া ২১৭ কিলোমিটরের মৃতপ্রায় নদীগুলোর নাব্য ফিরিয়ে গভীরতা ও স্রোতধারা বাড়ানো হবে। বাঙালী, করতোয়া, ফুলজোড় ও হুরাসাগর নদী পূর্বাবস্থার (জোয়ারের নদী) ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং পুনর্খননের পর নদীর প্রবাহ ধরে রাখতে তীর সংরক্ষণ করা হবে। এভাবে চারটি নদীর জোয়ারে বড় নদী যমুনার স্রোতধারা বেড়ে আরও অন্তত পাঁচটি নদী পূর্বের ধারা ফিরে পাবে।
×