ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মতবিনিময় সভা

দারিদ্র্য কুশিক্ষা ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৩ অক্টোবর ২০১৯

দারিদ্র্য কুশিক্ষা ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সামাজিক অবক্ষয় রোধে অসাম্প্রদায়িক চেতনা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের অজানা ইতিহাস তুলে ধরতে প্রচুর গবেষণা প্রয়োজন। পাশাপাশি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে ঘটে যাওয়া নতুন নতুন অজানা অনেক বিষয়ে নিয়ে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। তারা বলেছেন, স্বাধীনতাযুদ্ধ শেষ হলেও মুক্তিযুদ্ধ শেষ হয় না। মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা বাস্তবায়ন করতে হলে দারিদ্র্য, অশিক্ষা-কুশিক্ষা ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। প্রজন্মকে কখনই বিপথগামী হতে দেয়া যাবে না। এজন্য ইতিহাস বিকৃতি রোধে সবাইকে সোচ্চার থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় বিশিষ্টজনরা এসব কথা বলেন। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য ‘বজলুর রহমান স্মৃতি পদক’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে দিনব্যাপী সভায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডাঃ সারওয়ার আলী, জিয়াউদ্দিন তারেক আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মেজর (অব) সামছুল আরেফিন, টিভি ব্যাক্তিত্ব নওয়াজেশ আলী খান, সিনিয়র সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফীন সিদ্দিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ হয়েছেন। প্রতিটি ঘটনা কখনও খুঁজে বের করা সম্ভব নয়। মুক্তিযুদ্ধের অনুদঘাটিত বিষয়গুলো সামনে আনা যায় কিভাবে সেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। তিনি আরও বলেন, তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অবক্ষয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে বুয়েটে একজন ছাত্রকে আটকে রেখে নির্যাতনের পর মেরে ফেলা হয়েছে। আমরা তো এই চেতনার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করিনি। একজন বাঙালি আরেকজন বাঙালীর জন্য একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন। আজকে এই রকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটবে ১৯৭১ সালে কেউ কল্পনাও করেনি। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। অসাম্প্রদায়িক চেতনার জন্য যুদ্ধ করেছি। তা যে কোন মূল্যে ধরে রাখতে হবে। তরুণ সাংবাদিকদের কাছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সাংবাদিকতা আরও গতিশীল হোক। এটি আরও কিভাবে গুরুত্বারোপ করা যায় এ নিয়ে ভাববার সময় এসেছে। মেজর (অব) সামছুল আরেফিন বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধ অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে সরকারী কর্মকর্তাদের সবাই যদি পাকিস্তান সরকারকে বর্জন করত তাহলে তারা কিভাবে প্রশাসন চালাত তা দেখার বিষয় ছিল। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত যারা পাকিস্তান সরকারে চাকরি করেছেন তাদের সংজ্ঞা কি হবে? তাদের অনেকেই এখন সমাজে বড় বড় জায়গার আছেন। নওয়াজেশ আলী খান বলেন, তথ্য ও গবেষণা নির্ভর আরও বেশি মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক রিপোর্ট হতে হবে। এক্ষেত্রে কোন ধরনের বিভ্রান্তি যাতে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। ডাঃ সারওয়ার আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি সংরক্ষণ এবং তা তরুণ প্রজন্মের কাছে ছড়িয়ে দেয়া জরুরী। সে জন্য গণমাধ্যমের অনন্য ভূমিকা রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গণমাধ্যম মার্চ ও ডিসেম্বরে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক রিপোর্ট করে থাকে।
×