স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশাখাপত্তম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বিশাল সংগ্রহ গড়েছিল ভারত। এবার পুনের মহরাষ্ট্র ক্রিকেট এ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দ্বিতীয় টেস্টেও বড় সংগ্রহের পথে স্বাগতিকরা। সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমদিন শেষে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান তুলেছে তারা। গত টেস্টে ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকানো মায়াঙ্ক আগারওয়াল আবারও সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন। তিনি ১০৮ রানে বিদায় নেন। চেতেশ্বর পুজারা অর্ধশতক হাঁকিয়ে সাজঘরে ফিরলেও অধিনায়ক বিরাট কোহলি অপরাজিত আছেন ৬৩ রানে। তবে প্রথম টেস্টের প্রথমদিনের চেয়ে এবার পুনেতে প্রথমদিন তুলনামূলকভাবে ভাল কাটিয়েছে প্রোটিয়ারা। কারণ গত টেস্টের প্রথমদিন ভারত কোন উইকেট না হারিয়ে ২০২ রান তুলেছিল, এবার সফরকারীরা প্রথমদিনেই ৩ উইকেট শিকার করতে পেরেছে। আর এই সাফল্যের শতভাগই এসেছে ডানহাতি পেসার কাগিসো রাবাদার দুর্দান্ত বোলিংয়ে।
পুনেতে উভয় দলই একটি করে পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে। ভারত হনুমা বিহারিকে বদলে পেসার উমেশ যাদবকে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা আনরিখ নর্টজেকে দলে টানে পিয়েটের বদলে। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম ঘরের মাটিতে তিন পেসার নিয়ে একাদশ সাজায় ভারতীয় দল। সেবার ব্যাঙ্গালুরুতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষেই ইশান্ত শর্মা ও বরুণ এ্যারনের সঙ্গে খেলেছিলেন স্টুয়ার্ট বিনি। টস জিতে আগে বোলিংয়ে নেমে বরুণ দুর্দান্ত লেগ কাটারে সে সময় ফর্মের তুঙ্গে থাকা হাশিম আমলাকে বোল্ড করে দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে সেই বরুণকে আর কখনও টেস্ট খেলতে দেখা যায়নি। তবে এবার টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েছে ভারত। টানা দুই টেস্টে টস হেরে হতাশা জানিয়েছিলেন প্রোটিয়া অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসিস। কিন্তু তাকে দ্রুতই সাফল্য এনে দিয়ে হাসি ফোটান রাবাদা। বিশাখাপত্তম টেস্টের উভয় ইনিংসে সেঞ্চুরি হাঁকানো রোহিত শর্মা (১৪) ইনিংসের ১০ম ওভারের শেষ বলে রাবাদার কাছে উইকেটের পেছনে শিকারে পরিণত হন।
দলীয় ২৫ রানেই প্রথম ধাক্কা হজম করতে বেশি সময় লাগেনি ভারতের। আগারওয়ালের সঙ্গে দুর্দান্ত খেলছিলেন পুজারা। দ্বিতীয় উইকেটে দু’জন ১৩৮ রানের জুটি গড়ে তোলেন। দু’জনের ব্যাট থেকেই বেরিয়ে আসে অর্ধশতক। ধীরস্থির আগারওয়াল ফিফটি করতে গিয়ে যেন জ্বলে ওঠেন, কেশব মহারাজকে চার হাঁকিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। আর পুজারা ১১২ বলে ৯ চার, ১ ছক্কায় ৫৮ রান করার পর রাবাদার দ্বিতীয় শিকার হন। ফিরতি স্পেলে এসে তিনি প্লেসিসকে সন্তুষ্ট করেন। তবে আগারওয়াল এগিয়ে যেতে থাকেন।
প্রথম টেস্টে কোহলি তেমন সুবিধা করতে পারেননি। তবে এবার প্রথম থেকেই বেশ সাবলীল ভঙ্গিতে ব্যাট চালিয়েছেন তিনি। তবে প্রোটিয়া পেসার ভারনন ফিল্যান্ডার ছিলেন দারুণ মিতব্যয়ী। তিনি উইকেটে রান তোলার দিকটা ভালভাবেই সামাল দিয়েছেন। সেই সুযোগটা নিয়ে রাবাদা তার পেস ও বাউন্সের সুবিধা কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন ব্রেক থ্রু। তবে কোহলি-আগারওয়াল জুটি বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে। সেই জুটি ৩৫ রানের বেশি বড় হয়নি। আগারওয়াল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। তবে নার্ভাস নাইনটিজে পৌঁছুনোর আগেই তিনি বিধ্বংসী হয়ে ওঠেন। ৮৭ রানে পৌঁছার পর মহারাজকে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে ৯৯ রানে ঠেকেন তিনি। পরের ওভারে ফিল্যান্ডারকে চার হাঁকিয়ে টানা দ্বিতীয় টেস্টে শতকের দেখা পেয়ে যান আগারওয়াল। ফিরতি স্পেলে আবার রাবাদা এসে তাকে শিকার করেন দুর্দান্ত আউটসুইংয়ে। আগারওয়াল ১৯৫ বলে ১৬ চার, ২ ছক্কায় ১০৮ রান করেছিলেন। তার বিদায়ের পর আজিঙ্কা রাহানেকে নিয়ে দিন শেষ করেন কোহলি। কোহলি কিছুটা দ্রুতবেগে ব্যাট চালালেও রাহানে উইকেট কামড়ে পড়ে ছিলেন। কোহলি ১০৫ বলে ১০ চারে ৬৩ আর রাহানে ৭০ বলে ৩ চারে ১৮ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। দিনশেষে ৩ উইকেটে ২৭৩ রান নিয়ে স্বস্তিতেই ভারত।
স্কোর ॥ ভারত প্রথম ইনিংস- ২৭৩/৩; ৮৫.১ ওভার (আগারওয়াল ১০৮, কোহলি ৬৩*, পুজারা ৫৮, রাহানে ১৮*, রোহিত ১৪; রাবাদা ৩/৪৮) * প্রথমদিন শেষে।