ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ

প্রকাশিত: ১১:০২, ১ অক্টোবর ২০১৯

পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্পের কাজ শেষ

ফিরোজ মান্না ॥ ঢাকা ওয়াসার পদ্মা-যশোলদিয়া পানি শোধনাগার প্রকল্পের সব কাজ শেষ। আগামী ১০ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রকল্পটির উদ্বোধনের কথা রয়েছে। সোমবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন। প্রকল্পের কাজে সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রাজধানীবাসীকে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পানি সরবরাহ দেয়া হবে এই শোধনাগার থেকে। বর্তমানে পরীক্ষামূলকভাবে কিছু পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রকল্প উদ্বোধনের পর পুরোদমে পানি সরবরাহ করা হবে। তবে রাজধানীতে বিতরণ লাইন এখনও পুরোপুরি না হওয়ায় উৎপাদিত সব পানি সরবরাহ সম্ভব হবে না। বিতরণ ব্যবস্থার কাজ চলছে। অল্পদিনের মধ্যে উৎপাদিত পানির সুবিধা নগরবাসী ভোগ করতে পারবেন। সোমবার মন্ত্রীর সঙ্গে সরেজমিন পরিদর্শন গিয়ে দেখা গেছে ঢাকা মুন্সীগঞ্জ জেলার লৌহজং উপজেলার লৌহজং উপজেলার যশোলদিয়ায় মহাকর্মযজ্ঞের কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা নদী থেকে পানি এসে পড়ছে বিশাল শোধনাগারে। সেখানে পানি শোধন হচ্ছে। ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান-প্রকল্পের পিডি রফিকুল ইসলাম মন্ত্রী তাজুল ইসলাম ও সচিব হেলালউদ্দীনসহ সংবাদ মাধ্যমের কর্মীদের প্রকল্প সম্পর্কে ধারণা দেন। মন্ত্রী পরে গোটা প্রকল্প এলাকা ঘুরে ঘুরে দেখন। মোট ৯২ একর জমির ওপর নির্মিত এই শোধনাগার নির্মাণ করতে ৩ হাজার ৮শ’ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। শোধনাগারের প্রাথমিক উৎপাদন ক্ষমতা ধরা হয়েছিল প্রতিদিন ৪৫ কোটি লিটার পানি। কিন্তু জরুরী সময়ে প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার পানি উৎপাদন করতে পারবেন। প্রকল্প পরিদর্শন কালে মন্ত্রী বলেন, শতভাগ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা কোনভাবেই সম্ভব না। পৃথিবীর উন্নত দেশ গ্রেড ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি এমন কি আমেরিকাতেও শতভাগ বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে পারে না। তারা খাওয়ার জন্য বোতলজাত পানিই ব্যবহার করেন। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি যতটা সম্ভব বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ দিতে। মুশকিল হচ্ছে উৎপাদনের জায়গা থেকে যখন বিতরণে লাইনে পানি ঢুকে যায় তখন। কোন কারণে যদি বিতরণ লাইনে ত্রুটি থাকে তাহলে পানি নিরাপদ থাকে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বাড়ির ‘আন্ডারগ্রাউন্ড রিজার্ভার’ ও ‘ওভারহেড রিজার্ভার’ অপরিষ্কার থাকলে পানি নিরাপদ হবে না। এই জায়গায় বাড়ির মালিকদের সচেতন থাকতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, শতভাগ পানি নিরাপদ না হলেও নগরবাসী কিন্তু শতভাগ পানির আওতায় এসেছে। আগে ৬০ ভাগ মানুষ পানি পেত। বাকি ৪০ ভাগ মানুষের মধ্যে পানির জন্য হাহাকার ছিল। দিন বদল হয়েছে অনেক। এখন বস্তিবাসীও ওয়াসার পানি পাচ্ছে। কেউ কিন্তু এখন পানির সমস্যায় নেই। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, আইসিটিসহ বিভিন্ন খাতে যুগান্তকারী উন্নয়ন ঘটিয়েছে। সবার জন্য পানি নিশ্চিত করেছে। দেশে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। দেশের মানুষকে নিরাপদ ও দুর্নীতি মুক্ত রাখতে অভিযান চালাচ্ছে। মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। সরকারের সাফল্য অনেক। বর্তমানে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ডলার। আগামী কয়েক বছরে এই আয় দ্বিগুণ হবে। প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে এতসব সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কারণেই আজকে যশোলদিয়ায় পানি শোধনাগার প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। কারণ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দূষিত হওয়ার কারণে পদ্মা থেকে নগরবাসীর জন্য পানি সরবরাহ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছেন।
×