ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সতর্কবার্তার সঙ্গে আছে আশাও

প্রকাশিত: ১০:১৮, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

 সতর্কবার্তার সঙ্গে আছে আশাও

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ৫ সেপ্টেম্বর একমাত্র টেস্টটি খেলতে নামার আগে সতর্কবার্তা দিচ্ছে আফগানিস্তান। শুরুতে যেভাবে ব্যাটিং করেছে আফগান দুই ওপেনার, তাতে সতর্কবার্তা মিললেও আসলে শেষ পর্যন্ত আছে আশা। এক আল-আমিন জুনিয়রের বোলিংয়েই যে ডুবে গেছে আফগানরা। বিসিবি একাদশের বিরুদ্ধে দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথমদিনে প্রথম ইনিংসে ৮৮.১ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৪২ রান করেছে আফগানিস্তান। ওপেনার ইহসানুল্লাহ ৬২ ও ইবরাহিম জাদরান ৫২ রান করে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এরপর আল-আমিন জুনিয়রের (৪/৫১) ঘূর্ণিতে কাত হয়েছে আফগানরা। স্পিনার আল-আমিন জুনিয়র ৪ উইকেট নিয়েছেন ঠিক। আফগানদের বিপদেও ফেলার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সেই বিপদ আসলে তৈরি হয়েছে যখন আফগানিস্তানের ওপেনাররা স্বেচ্ছায় অবসর নিয়েছেন। এর আগে খুব সাবলীলভাবেই ব্যাটিং করেছেন দুই ওপেনার ইহসানুল্লাহ ও ইবরাহিম জাদরান। শুরুতে বিসিবি একাদশের পেসাররা ও স্পিনাররা মিলে হতাশাই উপহার দিয়েছেন। একটি উইকেটও নিতে পারছিলেন না। ইহসানুল্লাহ ১৩৭ বলে ৬২ ও ইবরাহিম ১২৪ বলে ৫২ রান করার পর যখন স্বেচ্ছায় অবসর নেন, এরপর থেকেই আফগান ব্যাটসম্যানদের ওপর চড়াও হন বাংলাদেশ বোলাররা। অবশ্য সব বোলারই যে তা করতে পেরেছেন এমন নয়। পেসার সুমন হক প্রথম ও শেষ উইকেটটি শিকার করেন। প্রথম উইকেট নিতেই ১৩১ রান পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। প্রথম উইকেটটি যে দলের ১৩১ রানে গিয়ে পড়েছে। এরপর থেকে আল-আমিন জুনিয়র যে উইকেট পেতে শুরু করেন, ৪টি উইকেট শিকার করে ফেলেন। প্রথমদিন শেষ হওয়ার আগে শেষে ৯৮ রানে ৬ উইকেট হারায় আফগানিস্তান। মোহাম্মদ নবী (৩৩) ও আফসার জাজাই (২০*) হাল ধরাতে ২৪২ রানে যায় আফগানরা। আল-আমিন মূলত ব্যাটসম্যান। সঙ্গে পার্টটাইম স্পিনার। সব ম্যাচেই সমান তালে বোলিং করে যান, এমন নয়। কোন কোন ম্যাচে তো শুধু ব্যাটিংটাই করেন। প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে আবার বেশি উইকেট শিকারের দক্ষতাও নেই। তবে প্রথম শ্রেণী কিংবা লিস্ট ‘এ’, যে ফরমেটের ক্রিকেটই হোক ইনিংসে ৫ উইকেট নেয়া কৃতিত্ব ঠিকই আছে। বাংলাদেশকে যতই সতর্ক করুক আফগানিস্তান, আল-আমিনের বোলিং আশা দেখাচ্ছে। আল-আমিনের মতো স্পিন বোলার ও ২ উইকেট নেয়া সুমন হকের মতো পেসার যদি সুযোগ পেতেই আফগান ব্যাটিং লাইনআপ এমন ধ্বংস করে দিতে পারেন, তাহলে সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজের মতো স্পিনার ও তাসকিন আহমেদ, আবু জায়েদ রাহী, এবাদত হোসেনের মতো পেসাররা কি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন তা বোঝাই যাচ্ছে। আফগানদের দুই ওপেনার যদি সতর্কবার্তা ছড়িয়ে দেন, তাহলে আল-আমিন, সুমনরা আশা দেখান। শেষে যে ৯৮ রানে ৬ উইকেট পড়ে আফগানদের। শুরুতে যদি উইকেট শিকার করে নেয়া যায়, তাহলেই তো কাত হয়ে যাবে আফগানরা। একটু সতর্ক হয়ে খেললে ১৯ বছরের টেস্ট অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বাংলাদেশ দল যে মাত্র ২ টেস্ট খেলা আফগানিস্তানকে চেপে ধরবে সেই ধারণা ভালভাবেই মিলে যাচ্ছে। বাংলাদেশে আসার পর আফগানিস্তান অধিনায়ক রশীদ খান টেস্ট দল নিয়ে অনেক আশার বাণী শোনান। চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত। তার এই আশার পেছনে জুলাইয়ে যে আফগানিস্তান ‘এ’ দল বাংলাদেশে এসে অসাধারণ খেলে গেছে। সেই দলের ইবরাহিম জাদরান, আফসার জাজাই, কাইস আহমেদরা যে বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলা ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া বাংলাদেশ ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়ে একের পর এক ম্যাচে হারিয়েছেন; তাতেই রশীদের আশা বেড়েছে। তবে যে আশাই দেখা হোক এখন যে জাতীয় দলে আছেন, এমন ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে তো আর দীর্ঘ পরিসরের খেলা খেলতে হয়নি আফগানিস্তান ক্রিকেটারদের। প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথমদিনে তাই আফগান ওপেনাররা যতই সতর্কবার্তা দিক, এক আল-আমিনের বোলিংয়েই সেই সতর্কবার্তা উড়ে গিয়ে আশা তৈরি হয়ে গেছে। স্কোর ॥ প্রথমদিন শেষে ॥ আফগানিস্তান প্রথম ইনিংস- ২৪২/৬; ৮৮.১ ওভার (ইহসানুল্লাহ ৬২, ইবরাহিম ৫২, জাভেদ ৩, রহমত ৭, হাসমতুল্লাহ ২৬, আসগর ১৬, নবী ৩৩, আলীখিল ১, আফসার ২০*, রশীদ ৬*; আল-আমিন জুনিয়র ৪/৫১, সুমন ২/২১)।
×