ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

কুড়িগ্রামে হস্তান্তরের তিন মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে পড়ল ব্রিজ

প্রকাশিত: ০৮:৩৩, ১৯ আগস্ট ২০১৯

 কুড়িগ্রামে হস্তান্তরের তিন  মাসের মধ্যেই ভেঙ্গে  পড়ল ব্রিজ

স্টাফ রিপোর্টার, কুড়িগ্রাম ॥ ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম গ্রামের বাঘখাওয়ার চরে ৩ মাস আগে নির্মাণ কাজ শেষ করা সেতুটি ভেঙ্গে পড়েছে। অনিয়ম আর নিম্নমানের কাজ করায় এ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল ভেঙ্গে ব্রিজটি হেলে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। পূর্ব ধনীরাম আবাসনগামী রাস্তায় মরাধরলার (নালা) ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যরে ব্রিজটি নির্মাণ করে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬শ’ ৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কুড়িগ্রামের পুরনো স্টেশন এলাকার এটিএম দেলদার হোসেন টিটু নামের এক ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেন। বাঘখাওয়ার চর এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। রড, সিমেন্ট, পাথর এ স্টিমেটের চেয়ে অনেক কম পরিমাণে ব্যবহার করেছে। এলাকাবাসী সেলিম, আব্দুর রহমান, আব্দুর রশিদ, শহর আলী, সেফাত আলী, দেলবর, জয়নাল, শাহালম, এনামুল, মমিনুলসহ অনেকে জানান, ঢালাইয়ের সময় পাথর পরিষ্কার না করে কাদামাটিসহ ঢালাই করেছে। বালু ও পাথরের তুলনায় সিমেন্ট কম দিয়েছে। নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদে সে সময় এলাকাবাসী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত এসে কাজ বন্ধ না করার জন্য তাদের হুমকি ধামকি দেন। এ সময় স্থানীয়দের সঙ্গে কর্মকর্তার বাগ্বিতন্ডা হয়। সে দিনের মতো কাজ বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে আবারও নিম্নমানের সামগ্রীতে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। ব্রিজের এ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল, ভিম ও ছাদসহ সব ধরনের ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার না করে শুধুমাত্র বাঁশ দিয়ে কাজ শেষ করে ঠিকাদারসহ তাদের লোকজন। স্থানীয়রা আরও বলেন, কয়েকদিন আগে ভার্টিক্যাল ওয়ালে ফাটল ধরেছে। কোরবানির ঈদের আগের দিন এটি ভেঙ্গে পড়ে। যে কোন সময় সম্পূর্ণভাবে ভেঙ্গে পড়বে ব্রিজটি। এতে প্রাণহানিসহ ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। পূর্ব ধনীরাম আবাসনের ৯০টি পরিবারসহ বাঘখাওয়ার চরের প্রায় ৫শ’ পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি। ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় এখানকার মানুষগুলো পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। দুর্ভোগ কমাতে সেতুটি ভেঙ্গে পড়ায় স্থানীয়রা বাঁশ দিয়ে কোন রকম চলাচল উপযোগী করে তুলেছে। জনবসতি এলাকায় সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সরকারী অর্থের অপচয় কার স্বার্থে করা হয়েছে।
×