ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ গণপিটুনি

প্রকাশিত: ১১:৩২, ১ আগস্ট ২০১৯

সমাজ ভাবনা ॥ বিষয় ॥ গণপিটুনি

স্বপ্নের সেতু ‘পদ্মা সেতু।’ অনেক ঝড় বয়ে গেছে এর ওপর দিয়ে। মন্ত্রিত্ব হারাতে হয়েছে এক মন্ত্রীকে। নানা অভিযোগে দাতা সংস্থা বিশ্বব্যাংক অর্থ যোগানে অপারগতা প্রকাশ করেছে। সব অভিযোগ খণ্ডন করে আত্মমর্যাদার দৃষ্টান্ত স্থাপনে নিজস্ব অর্থায়নে দৃশ্যমান করতে সক্ষম হয়েছে। চক্রান্তকারীদের চক্রান্তে অগ্রযাত্রা থমকে দাঁড়ায়নি। হিংসাত্মক মনোভাবের প্রতিফলনে শুনতে হয়েছে, ‘আপনারা কেউ পদ্মা সেতুতে উঠবেন না, ভেঙ্গে যাবে। জোড়াতালি দিয়ে তৈরি হচ্ছে। শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু বানাতে পারবেন না।’ এ ঝড় থামার পর আবার ঝড় উঠেছে পদ্মা সেতু কললা চায়, শিশুর রক্ত চায়। কললা, রক্ত সংগ্রহে গুজব ছড়িয়ে ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে নিরীহ এক মাকে মানবরূপী পশুদের হাতে। গণপিটুনিতে প্রাণ হারাতে হয়েছে বেশ ক’জন মানুষকে, এক প্রতিবন্ধী নারীকে। আতঙ্ক সৃষ্টিকারী, গুজব রটনাকারীদের কারণে ছেলেধরার হাতথেকে রক্ষা পেতে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে সময় কাটান। গুজব কখনই সত্যতার স্বীকৃতি পায় না। গুজবে কান দিয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া উচিত নয়, আবার আতঙ্কিত হয়ে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে মানুষ খুন করা দ-নীয় অপরাধ। গুজব রটনাকারীরা রাষ্ট্রে, সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টি করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটায়, নৈরাজ্য সৃষ্টি করে, প্রশাসনকে বেকায়দায় রাখে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে। আমরা বিবেকবান হই। গুজবকে না বলতে শিখি। কুসংস্কারের প্রথা থেকে বেরিয়ে আসি। কুচক্রীদের যে কোন ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে তৎপর হই। অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে শিখি। পাড়া, মহল্লায় গুজব বন্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলি। অপরাধীদের ঘৃণা করি। সভ্য সমাজ গড়তে শপথ নেই। দেশের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে সহযোগিতা করি। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হইÑ এ প্রত্যাশা রইল প্রতিটি নাগরিকের প্রতি। সন্দেহবশত যারা নিরীহ মানুষকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করছে এর সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা; অপরাধ দমন সংস্থাসহ আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীকে সততা, দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করা, স্থানীয় প্রশাসনকে গুজব বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করাসহ পুলিশের সহায়তা চেয়ে ৯৯৯-এ কল করার পাশাপাশি রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিককে সচেতনতা অবলম্বন করা উচিত। পঞ্চগড় থেকে
×