ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কে হচ্ছেন বিমানের এমডি?

প্রকাশিত: ১০:১৬, ১৪ জুলাই ২০১৯

 কে হচ্ছেন বিমানের এমডি?

আজাদ সুলায়মান ॥ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে দেশী-বিদেশী এক ডজনের বেশি প্রার্থী অপেক্ষায় রয়েছেন। শনিবার তাদের মৌখিক পরীক্ষা হয়। তাদের মধ্যে দেশের চার ও বিদেশের দশ জন। তাদের মধ্যে থেকে কাকে পছন্দ করা হবে সেটা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। এভিয়েশন পেশায় কার কি ধরনের দক্ষতা অভিজ্ঞতা ও পেশাদারিত্ব রয়েছে- তার তুলনামূলক বিচার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। বিমান এখনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না- এ পদে দেশী-বিদেশী প্রার্থী কাকে নিয়োগ দেয়া হবে। তবে প্রাথমিকভাবে এক দেশী পাইলট ও একজন বিদেশী নাগরিককেই পছন্দের শীর্ষে রাখা হয়েছে। সূত্র জানিয়েছে, মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হকসহ পর্ষদের কয়েক সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত নিয়োগ কমিটি শনিবার বেলা এগারোটা থেকে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করে। এতে দেশের চারজন হাজির হন। বিদেশীদের পরীক্ষা নেয়া হয় স্কাইপেতে। রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিল তাদের পরীক্ষা। কমিটির একজন সদস্য জানিয়েছেন, দেশীয় প্রার্থীদের মধ্যে ক্যাপ্টেন শাহ আলমকে পছন্দের শীর্ষে রাখা হয়েছে। তিনি বর্তমানে কাতার এয়ারওয়েজে কর্মরত। বিমানের পাইলট হিসেবে তিনি কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। অন্যদিকে বিদেশীদের মধ্যে প্রায় এক ডজন প্রার্থী থাকলেও জর্জ রিলিডার নামের এক কানাডিয়ান নাগরিককে পছন্দের শীর্ষে রাখা হয়েছে। তিনি এক সময় বিমানের কাস্টমার সার্ভিস বিভাগে চুক্তিভিত্তিক কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। ব্রিটিশ এমডি জন স্টিভ কেভিনের সময় জর্জ বিমানের গ্রাউন্ড সার্ভিসের কনসালটেন্ট হিসেবে চাকরি করেন। এ প্রসঙ্গে একজন প্রার্থী জনকণ্ঠকে বলেন, বিমান এ পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঘোষণার পর দেশ বিদেশের ১১৮ জন প্রার্থী আবেদন করেন। তাদের মধ্যে প্রথমেই ক’জনকে বাদ দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না হওয়ায়। আবার সব ধরনের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ক’জন প্রার্থীকে বাদ দেয়া হয়েছে। এতে সংক্ষুব্ধ একজন প্রার্র্থী জনকণ্ঠকে বলেন, বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক যারা কোয়ালিফাই করে-তারা সবাই পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু বিমান তাদের কোন ধরনের সুযোগই দেয়নি। দেশীয় অনেক যোগ্য প্রার্থী থাকা সত্ত্বেও বিমান মাত্র চারজনকে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে একটি উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ক্যাপ্টেন শাহ আলমকে কোন ক্রাইটেরিয়ায় মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। কেননা বিজ্ঞপ্তির শর্তানুসারে বিমানের গ্রাহক সেবা, গ্রাউন্ড হ্যান্ডলিং, মার্কেটিং, প্রশাসন ও অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ শাখায় তার কাজের অভিজ্ঞতা নেই। তারপরও তাকে ডাকা হয়েছে। আবার এ সবক’টি বিভাগে কাজের সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা থাকার পরও তাদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হয়নি। বিমানের শীর্ষ এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নিয়োগ কমিটি যা ভাল মনে করেছে তাই করেছে। এ নিয়ে কারোর কোন ক্ষোভ হতাশা থাকবে কেন। দেশী-বিদেশী প্রার্থীদের মধ্যে আপাতত দুজনকে পছন্দের শীর্ষে রাখা হয়েছে। তারা হলেন ক্যাপ্টেন শাহ আলম ও জর্জ। এ দুজনের মধ্যে থেকেই একজনকে চূড়ান্তভাবে বাছাই করে নিয়োগ দেয়া হতে পারে। খুব শীঘ্রই এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হতে পারে। বিমান থেকে সদ্য বিদায়ী এক কর্মকর্তা জনকণ্ঠকে বলেন, নিয়োগ কমিটি প্রাথমিকভাবে ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত কানাডিয়ান নাগরিক জর্জকেই পছন্দের শীর্ষে রেখেছেন। তাকে প্রাথমিকভাবে পরবর্তী এমডি হিসেবে রাখা হলেও তিনি কতটুকু এ চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন খোদ নিয়োগ কমিটির একজন সদস্য। তার মতে, সত্তোরোর্ধ জর্জ রিলিডার এখন ঠিকমতো চলাফেরাই করতে পারছেন না। এমন স্বাস্থ্য নিয়ে তিনি বিমানের মতো একটা রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন্স পুূনর্গঠনে কতটা সক্রিয় ভূমিকা রাখতে পারবেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। উল্লেখ্য এর আগে দুজন ব্রিটিশ নাগরিক জন স্টিল কেভিন ও কাইল বিমানে এক বছর করে এম ডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। কেভিনের এক বছরেই বিমান সংস্কারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয় যা বিমানকে লাভজনক করতে অনেকটাই সহায়ক ভূমিকা পালন করে। কিন্তু তিনি এক বছরের মাথায় গুরুতর অসুখে আক্রান্ত হওয়ায় বিমান ছেড়ে যান। তারপর কাইলেরও একই অবস্থা দেখা দেয়। তিনিও বিমানে এসে মারাত্মক অসুখে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার স্বার্থে বিমান ছাড়তে বাধ্য হন।
×