নিজস্ব সংবাদদদাতা, নোয়াখালী, ১২ জুলাই ॥ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, মহাত্মা গান্ধীর শান্তি, সম্প্রীতি ও অহিংসার চেতনা আমাদেরকে সব সময় ধারণ করতে হবে। সমাজে নানা অবক্ষয় রোধে এ চেতনার বিকল্প কিছু নেই। তিনি বলেন গান্ধী আশ্রমকে আন্তর্জাতিক মানের করা হলে এ শুভ কাজে সরকার পাশে থাকবে।
শুক্রবার নোয়াখালীতে অনুষ্ঠিত ঝর্ণাধারা চৌধুরীর স্মরণসভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন গান্ধী আশ্রম বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ও অনুষ্ঠানের সভাপতি দৈনিক জনকণ্ঠের নির্বাহী সম্পাদক স্বদেশ রায়। তিনি বলেন, আমাদের ওপর একটি গুরুদায়িত্ব এসে পড়েছে। ঝর্ণাধারা চৌধুরীর আদর্শকে টিকিয়ে রাখতে হলে গান্ধী আশ্রমকে শুধু নোয়াখালীতে নয়, গোটা এশিয়া বা সমগ্র বিশ্বে শান্তি-সম্প্রীতির কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। প্রয়াত এ মহীয়সী নারী ঝর্ণাধারা চৌধুরীর কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন হয়েছে। বাকিগুলো অব্যাহত আছে। তিনি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য সরকারের উচ্চ পর্যায়ের আন্তরিক সহযোগিতাও কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী আরও বলেন, একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষে তথা দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ঝর্ণা দি গোটা জীবন কাজ করেছেন। তার সে স্বপ্ন বাস্তবায়নের আমাদেরকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। শুক্রবার দুপুরে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা জয়াগ গান্ধী আশ্রমে সদ্য প্রয়াত গান্ধী আশ্রমের সচিব একুশে পদক, বেগম রোকেয়া ও ভারতের পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত শ্রীমতি ঝর্ণাধারা চৌধুরীর স্মরণ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। স্মরণ সভায় উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার রীভা গাঙ্গুলী। তিনি শ্রী ঝর্ণাধারা চৌধুরীর বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের স্মৃতি চারণ করে বলেন, আমার অথবা কারও পক্ষে ঝর্ণা দি‘র অবদান হিসেব করা সম্ভব নয় বিশেষত আজকের এ স্বার্থপর বিশ্বে ঝর্ণা দি‘র জীবন ছিল অন্যের জন্য নিবেদিত। শৈশবে দেখা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার স্মৃতি উনাকে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শের পথে কাজ করতে অনুপ্রাণিত করে। সে থেকে ঝর্ণা দি বিশ্বের কল্যাণে তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমরা সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এবং ভারত ও বাংলাদেশের বন্ধুত্বের প্রতি ঝর্ণা দি‘র অবদান স্মরণ করি।
এসময় তিনি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডক্টর এস জয়শঙ্করের একটি শোকবার্তা পাঠ করেন।
স্মরণ সভায় অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস এইচ এম ইব্রাহিম, শিক্ষাবিদ বঙ্গবন্ধুর চেয়ার অধ্যাপক ড. মুনতাসির মামুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল হাসান, অর্থনীতিবিদ ড. জামাল উদ্দিন আহম্মেদ এফসিএ, সমাজতাত্বিক গবেষক ড. সাখাওয়াত আলী, চটগ্রামে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার শ্রী অনিন্দ ব্যানার্জী, নোয়াখালী জেলা প্রশাসক তন্ময় দাস, পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেনসহ আরও অনেকে। গত ২৭ জুন ঢাকার একটি বেরসরকারী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শ্রীমতি ঝর্ণাধারা চৌধুরী শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।