ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঠেলে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশে

মিয়ানমারের আদলে ইয়াবা তৈরি হচ্ছে ভারতে

প্রকাশিত: ০৯:০০, ১১ জুলাই ২০১৯

মিয়ানমারের আদলে ইয়াবা তৈরি হচ্ছে ভারতে

স্টাফ রিপোর্টার, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ॥ সীমান্তের ওপারে ভারতীয় এলাকার একাধিক স্থানে ইদানীং মিয়ানমারের আদলে তৈরি হচ্ছে নকল ইয়াবা। এসব ইয়াবা ব্যাপক হারে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে। জনকণ্ঠে এ ধরনের একটি রিপোর্ট বের হলে অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছেন মাদক অধিদফতরের কর্মকর্তারা। ইদানীং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও নওগাঁ জেলার বিজিবি কর্মকর্তারা ব্যাপক হারে উদ্ধার করছেন ইয়াবা। এসব ইয়াবা মিয়ানমার থেকে আসছে, না কি ভারতীয় এলাকায় তৈরি হচ্ছে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য কিছু আটক ইয়াবা ঢাকা ল্যাবে পাঠিয়েছিল বিজিবি কর্মকর্তারা। এরপর এই বিষয়ে কিছু জানা না গেলেও অন্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। এসব ইয়াবা ভারতীয় এলাকায় তৈরি হলেও মানের দিক দিয়ে মিয়ানমারের চেয়ে অনেক উন্নত। তাই বিজিবি কর্মকর্তা কোন ধরনের তথ্য দিচ্ছে না। তবে প্রতিদিন নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী ও কুষ্টিয়া অঞ্চলে ইয়াবা আটক করে চলেছে বিজিবি। একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে পূর্বে সীমান্তের ওপারে যে সব স্থানে ও বাড়িতে ফেন্সিডিলের কারখানা ছিল সেইসব স্থানেই ইয়াবা তৈরির কারখানা করা হয়েছে। যদিও এই তথ্যের কোন ধরনের প্রমাণ নেই, তবুও জানা গেছে বিজিবি দীর্ঘদিন ধরে অবাধে ফেন্সিডিল তৈরির কথা বলে আসছিল। তাই ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বড় ধরনের নজরদারির মাধ্যমে এইসব কারখানা বন্ধ করে দিয়েছিল। ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীরা নতুন করে আবারও এইসব স্থানে ফেন্সিডিলের পরিবর্তে তৈরি করছে ইয়াবা। তবে এসব ইয়াবা পাচারে খুবই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়েছে ভারতীয়রা। তাই বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ইয়াবা আটক হলেও বহনকারীরা কেউ ধরা পড়েনা। তারা একটু টের পেলেই ইয়াবা ফেলে ভারতীয় অংশে ঢুকে পড়ে। তাই বিজিবি জওয়ানরা আটক করলেও সাধারণত কোন ইয়াবা পাচারকারী ধরতে পারেনা। অপর একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, ভারতীয় ইয়াবা বা মাদক পাচারকারীদের প্রায় প্রত্যেকের রয়েছে বড় ধরনের অস্ত্র ব্যবসা। তবে এই মাদক ব্যবসায়ীরা আগাম পয়সা ও চালানের অর্ডার না পেলে সাধারনত অস্ত্র পাচারে তেমনভাবে সক্রিয় হয়না। ইদানীং তাই চাঁপাই, নওগাঁ ও রাজশাহী বিজিবি অস্ত্র আটক করলেও ইয়াবার ন্যায় কোন ব্যক্তিকে আটক করতে পারেনা। ইতোমধ্যেই তিনটি এলাকার বিজিবি প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র আটক করলেও কোন ভারতীয় অস্ত্র বহনকারীকে আটক করতে পারেনি। যারা আটক হয়েছে তারা সীমান্ত এলাকার বাংলাদেশী যুবক। বাখের আলী সীমান্তে ১০ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে বিজিবি। এর মধ্যে রয়েছে ৬টি বিদেশী পিস্তল, ১টি রিভলবার ও ৩টি শূটার গান রয়েছে। এছাড়াও ১০টি ম্যাগজিন ও ৩৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে ৫৩ ব্যাটালিয়নের সদস্য। বিজিবি কর্মকর্তারা জানান, ১৫ সদস্যদের একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ২৭/৫ হতে আনুমানিক ৯০০ শ’ গজ বাংলাদেশের ভেতরে সদস্য উপজেলার সাদ্দামের চরে ভোরে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে একটি ভারতীয় ডিঙ্গি নৌকার সন্ধান মিলে। নৌকাটি ভারত হতে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। নৌকার মাঝি ইতোমধ্যেই টের পেয়ে যায় বিজিবি টহল দলের। তাই নৌকা ফেলে নদীতে লাফ দিয়ে ভারতের দিকে পালিয়ে যায়। টহলদলের নেতা লিয়াকত আলি মাঝিকে লক্ষ্য করে গুলি চালালেও মাঝি নির্বিঘ্নে পালিয়ে যায়। পরে ডিঙ্গি নৌকা তল্লাশি করে জালের নিচ থেকে ব্যাগে রাখা অবস্থায় অস্ত্রগুলো উদ্ধার করে। এভাবে এখন অস্ত্র পাচার হচ্ছে। এর বাইরে কোন তথ্য দিতে পারেনি। তবে অন্য একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, এই ধরনের ডিঙ্গি নৌকা অহরহ বাংলাদেশের মধ্যে প্রবেশ করে। যা অস্ত্রে ভর্তি থাকে। ইতিপূর্বে এই ধরনের অস্ত্রের ৫২ চালান নির্বিঘ্নে বাংলাদেশে প্রবেশ করে গন্তব্যে চলে যায়। আরও তথ্যে জানা গেছে, এই অস্ত্র ভারতীয় মাদক ব্যবসায়ীদের। তারা দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্রের এই ব্যবসা করে আসছে।
×