ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

যুদ্ধাপরাধী বিচার

রাজশাহীর রাজাকার সামাদের রায় যে কোন দিন

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ৯ জুলাই ২০১৯

 রাজশাহীর রাজাকার সামাদের রায়  যে কোন দিন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বাঁশবাড়িয়ার রাজাকার আব্দুস সামাদ ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসার রায় যে কোন দিন ঘোষণা করা হবে। রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রেখেছে ট্রাইব্যুনাল। প্রসিকিউশন ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্য বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার এ আদেশ প্রদান করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার এ মামলায় যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। সোমবার সর্বশেষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষের পর রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখা হয়। এটি হবে ট্রাইব্যুনালের ৩৯তম রায়। ট্রাইব্যুনালে এ সময় প্রসিকিউশন পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর ঋষিকেশ ও প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম। আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আব্দুস সাত্তার পালোয়ান। প্রসিকিউটর জাহিদ ইমাম জনকণ্ঠকে বলেন, ‘চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার জেরা শেষ হয়। এরপর গত বৃহস্পতিবার যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে সোমবার শেষ হলে ট্রাইব্যুনাল মামলাটির রায় অপেক্ষমাণ রেখে আদেশ দেন। অর্থাৎ রায় যে কোন দিন ঘোষণা করা হবে। আসামি পক্ষের আইনজীবী সাত্তার পালোয়ান বলেন, ‘উভয় পক্ষের মধ্যে এটা মূলত জায়গা-জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আদালতে সেটা প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি বলে মনে করি। তাই আসামির খালাস চেয়েছি।’ তদন্ত চলার সময় নাশকতার মামলায় গ্রেফতার হন এ আসামি। পরে ২০১৭ সালে ২৪ জানুয়ারি তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় পশ্চিমভাগ এবং গোটিয়া গ্রামে আাদিবাসী ও বাঙালীদের ওপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালান আব্দুস সামাদ মুসা ওরফে ফিরোজ খাঁ ওরফে মুসা রাজাকার। এ সময় তার নেতৃত্বে সেখানে চলে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা। ১৯৭১ সালের ১২ এপ্রিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী পুঠিয়া আক্রমণ করে মানুষ হত্যা ও অগ্নিসংযোগ শুরু করলে মুসা হানাদার বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেন। ১৯ এপ্রিল তিনি ৩০-৪০ জন হানাদার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে বাঁশবাড়িয়া গ্রামে যান। সেখানে তারা ২১ জনকে আটক করেন। তাদের নিয়ে রাখা হয় গোটিয়া গ্রামের স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নুরুল ইসলামের বাড়িতে। সেখানে দিনভর নির্যাতন করে ১৭ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়। হত্যা করা হয় চারজনকে। পুঠিয়ার দুর্গাপুরে তার নির্দেশে তাদের গুলি করে মারা হয়। এরপর মুসার নির্দেশে পশ্চিমভাগ মাদ্রাসার সামনে গুলি করে হত্যা করা হয় আক্কেল আলীর ছেলে আবদুস সাত্তারকে। মুসা পশ্চিমভাগ সাঁওতাল পাড়ার ধনাঢ্য আদিবাসী লাডে হেমব্রমের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করেন। আজহারের বিরুদ্ধে এ্যাটর্নি জেনারেলের লিখিত আর্গুমেন্ট ॥ একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আলবদর কমান্ডার জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের করা আপীলের কিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আনা লিখিত যুক্তিতর্ক (আর্গুমেন্ট) উপস্থাপন তৃতীয় দিনের মতো শেষ হয়েছে। এর পর মামলার যুক্তিতর্ক শুনানির কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করেছে আদালত। সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার সদস্যের আপীল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। সোমবার এ্যাটর্নি জেনারেল এই যুক্ততর্ক উপস্থাপন করেছেন। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা ও বিচারপতি নুরুজ্জামান। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
×