ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

রণদা প্রসাদ হত্যা মামলার রায়ে আনন্দিত মির্জাপুরবাসী

রণদা প্রসাদ হত্যা মামলার রায়ে আনন্দিত মির্জাপুরবাসী

প্রকাশিত: ০৮:৫৯, ২৮ জুন ২০১৯

 রণদা প্রসাদ হত্যা মামলার  রায়ে আনন্দিত  মির্জাপুরবাসী

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৭ জুন ॥ মুক্তিযুদ্ধের সময় দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা হত্যাকান্ডসহ তিনটি গণহত্যার অভিযোগে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার মানবতাবিরোধী অপরাধী মাহবুবুর রহমানকে মৃত্যুদন্ড দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যান বিচারপতি মোঃ শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেয়। এদিকে এ রায় প্রদানের পরপরই টাঙ্গাইল ও মির্জাপুরে মুক্তিযোদ্ধারাসহ সাধারণ জনগণ আনন্দ ও উল্লাস প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, দীর্ঘ ৪৮ বছর পর এ মামলার রায় দেয়া হয়েছে। আমরা এ রায়ে খুশি। সরকারের কাছে এখন আমাদের দাবি, রায় অনুযায়ী এখন কুখ্যাত রাজাকার মাহবুবুবের ফাঁসি কার্যকর করা। মির্জাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক দুর্লভ বিশ্বাস জানান, দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলেসহ মির্জাপুরে গণহত্যায় অংশগ্রহণকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়ায় জেলার মুক্তিযোদ্ধারা আনন্দিত। দানবীর রণদা প্রসাদ সাহার মতো মানবপ্রেমিককে যারা হত্যা করেছে তাদের সর্বোচ্চ সাজা দ্রুত কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি। জানা যায়, ৭০ বছর বয়সী মাহবুবুর রহমান একাত্তরে মির্জাপুর শান্তি কমিটির সভাপতি বাইমহাটী গ্রামের রাজাকার আবদুল অদুদের ছেলে। আসামি মাহবুবুর ও তার ভাই আবদুল মান্নান বাবার সঙ্গে রাজাকার বাহিনীতে ছিলেন। তাদের নেতৃত্বেই পাকিস্তানীরা মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামে গণহত্যা চালিয়ে ৩১ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করে। কুমিল্লার বাঙ্গরা উপজেলার খামার গ্রামের আবদুল অদুদ ১৯৪৬ সালে মির্জাপুরের এক মসজিদে ইমামতির চাকরি নেয়। ১৯৪৬ সালের ২৪ আগস্ট ওই মসজিদের পাকা ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে। পরে মসজিদটি টিনশেডে সমাপ্ত করেন। এরমধ্যে তিনি বাইমহাটী গ্রামের ছোবহান মুন্সীর ১৫ সন্তানের তৃতীয় কন্যা হাসনা ভানুকে বিয়ে করে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। তারা ৩ ছেলে ও ৫ কন্যা সন্তানের দম্পতি। জানা গেছে, ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ৭ মে রাতে এশিয়াখ্যাত দানবীর রণদা প্রসাদ সাহা ও তার ছেলে ভবানী প্রসাদ সাহা রবিসহ সাতজনকে নারায়ণগঞ্জের বাসা থেকে ধরে নিয়ে হত্যা করে। এর আগে ঘাতক দলটি ওই দিনই মির্জাপুর ও আন্ধরা গ্রামের ৫৫ জনকে ধরে নিয়ে গুলি করে হত্যা করে। আসামি মাহবুব জামায়াত নেতা ছিলেন। কিন্তু নির্দলীয়ভাবে তিন তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও প্রতিবারই পরাজিত হয়েছেন।
×