ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবিতে ৮১০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার বাজেট পেশ

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৬ জুন ২০১৯

ঢাবিতে ৮১০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার বাজেট পেশ

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৮১০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার বাজেট পেশ করা হয়েছে। এতে গবেষণার জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৪০ কোটি ৮০ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, যা মোট বাজেটের ৫ দশমিক ০৪ শতাংশ। গত অর্থবছরের তুলনায় বাজেট বেড়েছে ৬৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। বুধবার বিবেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত বার্ষিক অধিবেশনে এ বাজেট উপস্থাপন করা হয়। সিনেট চেয়ারম্যান ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে এতে বাজেট উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দীন। অধিবেশনে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. এনামউজ্জামান, সিন্ডিকেট সদস্যবৃন্দ, নির্বাচিত রেজিস্টার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। প্রস্তাবিত বাজেটের ৮১০ কোটি ৪২ লক্ষ টাকার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন থেকে ৬৯৪ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব খাত থেকে ৬৬ কোটি টাকা আসবে। বাজেটে সম্ভাব্য ঘাটতি ধরা হয়েছে ৪৫.৭৭ কোটি টাকা। গত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ ছিল ৭৬১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। মোট বাজেটের ৩১ দশমিক ৬৫ শতাংশ হিসেবে ২৫৬ কোটি ৫০ লাখ টাকা বেতন-ভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে, ভাতাদি বাবদ ১৯৫ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা যা মোট ব্যয়ের ২৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। পণ্য ও সেবা বাবদ ১৭১ কোটি ৭৬ টাকা যা মোট ব্যয়ের ২১ দশমিক ১৯ শতাংশ। বিশেষ অনুদান খাতে ১০ কোটি ৫৯ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা যা মোট ব্যয়ের ১ দশমিক ৩১ শতাংশ এবং অন্যান্য অনুদান খাতে ১৭৫ কোটি ৬৯ লক্ষ ৩৮ হাজার টাকা যা মোট ব্যয়ের ২১ দশমিক ৬৮শতাংশ। অভিভাষণে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে প্রায় তিন দশক পর ‘ডাকসু ও হল সংসদ’ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিনেটের আজকের অধিবেশনে পাঁচ সদস্যের ছাত্র প্রতিনিধি যোগ দিয়েছেন। আজকের দিনটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এক পরম গৌরবের দিন। ১৯৯৩ সনের পর আবারো সিনেট তার পূর্ণাঙ্গ রূপ পেল। ডাকসুর নির্বাচিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষণ এবং শিক্ষা ও গবেষণার উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ডাকসু’র আজীবন সদস্য পদ প্রদানের জন্য তিনি ডাকসু নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উদ্যাপনকে অর্থবহ করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। অবকাঠামোগত উন্নয়ন, বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি ক্রয় ও নান্দনিক ক্যাম্পাস বিনির্মাণসহ একটি পূর্ণাঙ্গ ‘মাস্টার প্লান’ তৈরীর কাজ চলছে। একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাজে গতি আনতে ‘সময়াবদ্ধ কর্মপরিকল্পনা’ নীতি অনুসৃত হচ্ছে। এ সবগুলোই কালক্রমে এসডিজি বাস্তবায়নে ও বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং উন্নয়নে সহায়ক হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন। অধিবেশন চলাকালীন বাইরে মানববন্ধন ॥ এদিকে সিনেট অধিবেশন চলাকালীন বিভিন্ন দাবি নিয়ে সিনেট ভবনের সামনে মানববন্ধন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মানববন্ধনে অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। সেখানে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক রাজিব দাসসহ অন্য নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের বহন করা ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াও’, ‘আবাসন সংকট নিরসনে বরাদ্দ দাও’, ‘লাইব্রেরী ২৪ ঘন্টা চালু রাখতে হবে’, ‘গেস্টরুম সংকটের সমাধান চাই’, ‘সকল উন্নয়ন ফি বাতিল কর’, ‘সকল রুটে রাত ৮টায় বাস চাই’, ‘ক্যাম্পাসে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ কর’ ইত্যাদি। এসব সমস্যার কথা উল্লেখ করে ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ বলেন, এগুলো সমাধানে সিনেটের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে সব সমস্যা সমাধানের পথ তৈরি হবে বলেও মনে করেন তিনি।
×