স্টাফ রিপোর্টার ॥ বয়সসীমা বাতিলের দাবিতে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বৃহস্পতিবারও ২ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচী পালন করে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। কর্মসূচী পালন শেষে তারা বিএনপি হাইকমান্ডকে ২ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে রবিবার থেকে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয় ও গুলশান কার্যালয়ের সামনে কঠোর কর্মসূচী পালনের হুমকি দিয়েছে।
আগের দিনের মতো বৃহস্পতিবারও বেলা এগারোটা থেকে একটা পর্যন্ত অবস্থান কর্মসূচী পালন করে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। বয়সসীমা বাতিল করে অবিলম্বে নতুন কমিটি গঠনের দাবিতে ১১ জুন প্রথম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচী শুরু করে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির নেতারা। বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালা ও বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচী পালন করে তারা। এ সময় তারা ক’জন বিএনপির সিনিয়র নেতাকে নাজেহাল করে। যেসব নেতাকর্মী কার্যালয়ের ভেতরে ছিলেন তাদের বের হতে দেননি। দিনভর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তান্ডব চালিয়ে রাতে চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতাদের উপস্থিতিতে তারেক রহমানের সঙ্গে স্কাইপিতে কথা বলার পর দাবি আদায়ের আশ্বাস পেয়েছে জানিয়ে কর্মসূচী স্থগিত করে তারা।
দাবি আদায় না হওয়ায় আবারও ১৬ জুন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ২ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচী পালন করে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। ১৭ জুন পর্যন্ত কর্মসূচী পালন করে একদিন বিরতির পর বুধবার আবারও ২ ঘণ্টাব্যাপী কর্মসূচী পালন করেন। আর বৃহস্পতিবার ২ ঘণ্টা অবস্থান শেষে শুক্রবার ও শনিবার কর্মসূচী স্থগিত রাখার ঘোষণা দিয়ে এ সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে আন্দোলনের কঠোর হুমকি দেন।
জানা যায়, ছাত্রদলের এ আন্দোলন নিয়ে সিনিয়র নেতারাও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ চায় ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের দাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে নতুন কমিটি গঠন করা হোক। আর আরেক পক্ষ চায় আন্দোলনকারীদের দাবি না মেনে যাচাই-বাছাই করে নিয়মিত ছাত্রদের দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করতে। বিএনপি নেতারা এভাবে বিভক্ত হয়ে পড়ায় ছাত্রদল নেতাকর্মীদের আন্দোলন থামানোর কার্যকর কোন উদ্যোগ নেয়া সম্ভব হয়নি বলে সূত্র জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচী শেষে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ বিএনপি হাইকমান্ডের প্রতি ২ দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে এ সময়ের মধ্যে বয়সসীমা বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনের উদ্যোগ না নিলে আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেয়। এ সময় আন্দোলনকারী অন্য নেতাকর্মীরাও তার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন। আসাদুজ্জামান আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা বিএনপি হাইকমান্ডকে শুক্র ও শনিবার ২ দিনের সময় দিয়েছি। আশা করছি এ সময়ের মধ্যে আমাদের দাবি মানা হবে। তা না হলে রবিবার সকাল থেকে আবারও আমরা আন্দোলনের কঠোর কর্মসূচী শুরু করব। আমাদের যৌক্তিক দাবি মানতেই হবে। তা না হলে যে কোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতির জন্য বিএনপির দালাল সিন্ডিকেট দায়ী থাকবে।
দাবি মানা না হলে কি ধরনের কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে জানতে চাইলে ছাত্রদলের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি এজমল হোসেন পাইলট সাংবাদিকদের বলেন, কর্মসূচীর ব্যাপারে আমরা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। কালো পতাকা প্রদর্শন, গণঅনশনসহ যে কোন ধরনের কঠোর কর্মসূচী দেয়া হবে। কর্মসূচী ঠিক করে সবাইকে জানিয়ে দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১০টা থেকে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। বেলা ১১টার দিকে শতাধিক ছাত্রদল নেতাকর্মী অবস্থান কর্মসূচী শুরু করেন। কিছুক্ষণ পরই প্রবল বৃষ্টিতে কর্মসূচীতে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটে। এ সময় বিক্ষুব্ধ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের নিচতলায় অবস্থান নেন। বৃষ্টি থামলে আবারও তারা কর্মসূচী শুরু করেন।