ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

জিততে সাকিবের সঙ্গী দরকার!

প্রকাশিত: ০৯:৩০, ৮ জুন ২০১৯

 জিততে সাকিবের সঙ্গী দরকার!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপে এবার বাংলাদেশের অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান একচেটিয়া খেলছেন। দুটি ম্যাচ খেলেছেন। দুটি ম্যাচেই নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন। ব্যাট-বল হাতে অসাধারণ খেলছেন। ব্যাট হাতে দুই ম্যাচেই হাফ সেঞ্চুরি করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৭৫ রানের ইনিংস খেলেছেন। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে করেছেন ৬৪ রান। বল হাতে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ১ উইকেট নিয়েছেন। ম্যাচসেরা হয়েছেন। কিউইদের বিপক্ষে নিয়েছেন ২ উইকেট। প্রথম ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। কারণ সাকিবের সঙ্গী ছিল। মুশফিকুর রহীমকে নিয়ে ১৪২ রানের রেকর্ড জুটি গড়েছেন। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে বড় কোন জুটির দেখা মিলেনি। সাকিবের সঙ্গী হয়ে কেউ হাল ধরতে পারেননি। তাতে বাংলাদেশও হেরেছে। আর তাই জিততে যে সাকিবের সঙ্গী দরকার, সাকিবকে ভাল সঙ্গ দেয়া দরকার; তা বোঝাই যাচ্ছে। বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাও তাই বলার চেষ্টা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে সাকিব এক্সট্রা অর্ডিনারি পারফর্ম করছে দলের জন্য। ওর একটু সহায়তা দরকার ছিল (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে), যেটা আমরা কেউ করতে পারিনি। এ রকম সহায়তা বাড়লে ভাল হয়।’ সাকিব উইকেটে আসার আগে তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার ব্যাটিং করেন। তামিম ও সৌম্য মিলে শুরুটা দারুণ করছেন। কিন্তু বেশিদূর এগিয়ে যেতে পারছেন না। তামিম অথবা সৌম্য আউট হলে সাকিব ব্যাট হাতে নামেন। কিন্তু দুই ওপেনারের একজনও তখন বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেন না। আউট হয়ে যান। মুশফিক এরপর ব্যাট হাতে নেমে সাকিবকে ভালই সঙ্গ দেন। প্রথম ম্যাচে বড় জুটি গড়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে ৫০ রানের জুটি অহেতুক রানআউট হয়ে যান। এরপর যারা ব্যাট হাতে নামেন তাদের মধ্যে সাকিবকে পেতে পারেন মোহাম্মদ মিঠুন, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তারা না পেলেও সাকিব যা করে যান তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করা তাদের কাজ। কিন্তু সেটিও মিলছে না। আর এমনটি চলতে থাকলে জেতা কঠিন হয়ে পড়বে। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভুল করা মানেই হার। ব্যর্থ হওয়া মানেই হার। ঠিক যেমনটি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হয়েছে। মুশফিক ভুল করে রান আউট হতেই ক্ষতি হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত সব ওলট পালট হয়ে যায়। রান ২৪৪ এর বেশি করা যায়নি। বোলাররা এরপরও নিউজিল্যান্ডকে চাপে ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু জেতা সম্ভব হয়নি। কারণ স্কোরবোর্ডে যে রান কম ছিল। তাই জিততে হলে সাকিব যেহেতু ভাল খেলছেন, তার ফর্ম তুঙ্গে, তাই ভাল খেলার সম্ভাবনাই বেশি। তখন সাকিবের সঙ্গে অন্যদেরও হাল ধরতে হবে। অবশ্য টুর্নামেন্ট কেবল শুরু। মাত্র ২ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। আজ তৃতীয় ম্যাচ খেলবে। আরও ৬টি ম্যাচ খেলতে হবে। ব্যাটসম্যান কিংবা বোলাররা এখনও নিজেদের মেলে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। তাই স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন মাশরাফি ‘টুর্নামেন্টের কেবলই শুরু। এখনই নির্দিষ্ট ক্রিকেটারকে চাপ দেয়া উচিত হবে না। সবাই সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করছে। কখনও হয়, কখনও হয় না। মানসিকভাবে সবাই সবসময় এক জায়গায় থাকে না। একটি দুটি ম্যাচে প্রত্যাশিত পারফর্মেন্স হলে হয়তো আত্মবিশ্বাস বাড়বে।’ সেই আত্মবিশ্বাস বাড়বে ভাল একটা ইনিংস খেললে। কিংবা ভাল বোলিং করলে। সেটিই এখন প্রয়োজন সবচেয়ে বেশি। সেই প্রয়োজন এখন মেটানো গেলেই হলো। সাকিব মেটাচ্ছেন। বাকিরা এখন পারলেই হলো। আজ ইংল্যান্ডের বিপক্ষে কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন্সে ম্যাচ আছে বাংলাদেশের। এই ম্যাচটিতে জিততে হলে ব্যাটসম্যানদেরই হাল ধরতে হবে। ইংল্যান্ড ব্যাটিংয়ে যে কতটা শক্তিশালী তাতো বোঝাই যাচ্ছে। দুই ম্যাচেই ৩০০ রানের বেশি স্কোরবোর্ডে জমা করেছে। তার মানে বোলিং দিয়ে চেষ্টা করলে যে হবে না, এমনটি নয়। কিন্তু ইংলিশ ব্যাটসম্যানদের কাবু করা কঠিনই বোঝা যাচ্ছে। তাতে করে এখন ইংলিশদের আবারও বিশ্বকাপে হারাতে হলে যা করার যে ব্যাটিংয়েই করতে হবে, তা এখন অনুমান করা সহজ হয়ে গেছে। ব্যাটসম্যানদেরই বড় ইনিংস খেলতে হবে এবং বড় জুটি গড়তে হবে। আর এখানেই সাকিবের সঙ্গী সবচেয়ে বেশি জরুরী। সাকিব যেভাবে খেলছেন। সেই খেলা যদি আজও বজায় থাকে তাহলে ইংল্যান্ডকে হারাতে হলে সাকিবের সঙ্গে বড় জুটি গড়ার মতো ব্যাটসম্যান লাগবে। এখন কে হবেন সেই ব্যাটসম্যান? তা আজই বোঝা যাবে।
×