খালেদা জিয়ার মুক্তি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র ॥ ফখরুল

নিজস্ব সংবাদদাতা, টঙ্গী, ১ জুন ॥ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়া জুলুম-নির্যাতন সহ্য করেই জেলে থেকে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। তার মুক্তি এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র। গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ বিএনপি খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবে। ভয়াবহ স্বৈরাচারী এই সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, বাক স্বাধীনতাকে হরণ করেছে, ব্যাংক লুটপাট করে অর্থনীতিতে ধস নামিয়েছে। বিরোধীদের দমন করতে নেতা কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে তাদের বাড়ি ছাড়া করেছে। এভাবে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারে না। শনিবার সন্ধ্যায় টঙ্গীতে অনুষ্ঠিত মহানগর বিএনপির ইফতার মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, বর্তমানে বিএনপি কোন সঙ্কটে নেই, পুরো দেশ আজ সঙ্কটে। এ সঙ্কট উত্তোরণে যে কোন মূল্যে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়তে হবে। তিনি শনিবার সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর বিএনপির উদ্যোগে টঙ্গীর আহসান উল্লাহ সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রাঙ্গণে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৮তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর মহানগর বিএনপির সভাপতি হাসান উদ্দিন সরকার। বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মোঃ সোহ্রাব উদ্দিন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি এ কে এম ফজলুল হক মিলন, ডাঃ রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, মেয়র মোঃ মজিবুর রহমান, ডাঃ মাজহারুল আলম, আফজাল হোসেন কায়সার, এম আব্দুল্লাহ, শাহ রিয়াজুল হান্নান, আহম্মেদ আলী রুশদী, কাজী মাহবুব উল হক গোলাপ, মাহবুবুল আলম শুক্কুর, রাশেদুল ইসলাম কিরণ, আহম্মেদ বাচ্চু, শওকত হোসেন সরকার, মোঃ রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আব্দুর রহিম খান কালা, জিয়াউল হাসান স্বপন, সরকার জাবেদ আহমেদ সুমন, মোঃ মোখলেছুর রহমান, মোঃ শফিউদ্দিন শফি, মোঃ নাসির উদ্দিন নাসু প্রমুখ। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, যে নেত্রী গণতন্ত্রের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, দেশের মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সারাটি জীবন সংগ্রাম করেছেন তাকে আজ একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় অন্ধকার কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে। খুনের আসামিরাও জামিন পেয়ে যাচ্ছে অথচ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী ও তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে চরম অসুস্থ হয়ে পড়ার পরেও জামিন দেয়া হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, অন্যের সমালোচনা আর বিরোধ করে লক্ষ অর্জন করা সম্ভব নয়। দেশনেত্রীকে কারামুক্ত করতে হলে, দেশকে জালিম সরকারের হাত থেকে রক্ষা করতে হলে প্রয়োজন দেশপ্রেমিক ও জাতীয়তাবাদী শক্তির ইস্পাত কঠিন ঐক্য। তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচনে গিয়ে কোন ভুল করেনি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ের অংশ হিসেবেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে সরকার রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসেছে। এ নির্বাচন আমরা মেনে নেইনি। এতে প্রমাণিত হয়ে গেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। তিনি অনতিবিলম্বে এই নির্বাচন বাতিল করে পুনরায় নির্বাচন দাবি করেন। তিনি বলেন, বিএনপিতে কোন বিরোধ নেই। যারা সংসদে গেছে তারা বিএনপির সিদ্ধান্তেই গেছে। আমি যাইনি তাও বিএনপির সিদ্ধান্তেই। কারণ গণতন্ত্র ও দেশ রক্ষার এ লড়াই আজ কোন সহজ লড়াই নয়। পৃথিবীর পরিবর্তন হয়েছে, রাজনীতির ধরনেও পরিবর্তন এসেছে। তার জন্য অনেক সময় কৌশল পরিবর্তন করতে হয়। সংসদে যারা গেছে তারা সংখ্যায় কম হলেও বেগম জিয়ার মুক্তির পক্ষে, অবৈধ সরকারের ভোট ডাকাতি ও লুটতরাজের বিরুদ্ধে সোচ্ছার থাকলে দেশবাসী তা জানবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্পগুলোর একটাই উদ্দেশ্য তা হলো মেগা লুটপাট। ব্যাংক লুটেপুটে খেয়ে ফেলা হচ্ছে। শেয়ারবাজার ধ্বংস করা হয়েছে। দেশের আইন-আদালত, সংবাদপত্র ও সামাজিক ন্যায়নীতিবোধ সবকিছু আজ ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।