ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেলিব্রেটিদের আইডি হ্যাক করে টাকা আদায় তার পেশা

প্রকাশিত: ০৯:৪৬, ৩১ মে ২০১৯

 সেলিব্রেটিদের আইডি হ্যাক করে টাকা আদায় তার পেশা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অভিনেত্রী পূজা চেরী, মডেল মারিয়া নূরসহ অন্তত ৩০ জন মডেল-অভিনেত্রীর ফেসবুক আইডি হ্যাক করে চাঁদা দাবি করায় সামির আল মাসুদ (২৫) নামে এক হ্যাকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে খিলক্ষেত থেকে আলোচিত এই হ্যাকারকে গ্রেফতার করে ডিএমপি’র সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড ক্রাইম ইউনিট। সাইবার ইউনিটের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) নাজমুল ইসলাম জানান, ওই যুবক অভিনেত্রী নাওয়ার, পূজা চেরী, টিভি অভিনেত্রী শারলিনা হোসেন, শাহতাজ মুনিরা হাশেম, উপস্থাপিকা ও মডেল মারিয়া নূর এবং এক সময়ের জনপ্রিয় অভিনেত্রী তমালিকা কর্মকারের আইডি নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের কাছ থেকে টাকা দাবি করতো। তিনি জানান, সর্বশেষ মিস ওয়ার্ল্ড ২০১৮’র প্রথম রানার্সআপ নিশাত নাওয়ার সালওয়ার ফেসবুক আইডি হ্যাক করে। দশ হাজার টাকা নিয়েও আইডি ফেরত না দিয়ে শুরু করে টালবাহানা। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড ক্রাইম ডিভিশনের দ্বারস্থ হন নিশাত। তার অভিযোগের পর বুধবার রাতে খিলক্ষেত থেকে আলোচিত এই হ্যাকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি এ্যান্ড ক্রাইম ইউনিট বিভাগ জানায়, সামির আল মাসুদ উচ্চ মাধ্যমিকের গ-ি পেরোতে পারেনি। কিন্তু প্রযুক্তিবিষয়ক জ্ঞানার্জন করেছে নিজে নিজেই। সেই জ্ঞান ভাল কাজে না লাগিয়ে শুরু করে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। তিনটি হ্যাকার গ্রুপের হয়ে কাজ করতো সে। তার টার্গেট ছিল মডেল আর উঠতি বয়সী অভিনেত্রীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিজেকে পরিচয় দেন একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে। এই মিথ্যে পরিচয় দিয়ে তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও মাঝে মধ্যেই চ্যাট করত। পরে কৌশলে তাদের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিত নিজের দখলে। অর্থ না দিলে অশ্লীল ছবি বা লেখা পোস্ট করার ভয় দেখাতো। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, সেলিব্রিটিদের আইডি হ্যাক করাই তার পেশা। চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি তাকে দিনাজপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। তবে আদালত থেকে জামিন নিয়ে সে একই কাজে জড়িয়ে পড়ে। বুধবার সাইবার ইউনিটের ডিজিটাল ফরেনসিক টিমের ইশতিয়াক আহমেদ এক অভিযানে তাকে গ্রেফতার করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত সামির পুলিশকে জানায়, সে বর্তমান সময়ের জনপ্রিয় ২০ জনেরও বেশি অভিনেত্রী ও মডেলের ফেসবুক আইডি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, ইন্টারনেট ঘেঁটে নানারকম টিউটোরিয়ালের ভিডিও দেখে দেখে সে হ্যাকিং শেখে। প্রথমে সে বেছে বেছে তরুণ নারী মডেল অভিনেত্রীদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠান। বন্ধুত্বের আবেদনে সাড়া দেয়ার পর টু ফ্যাক্টর অথরিটি ও ট্রাস্টেড কন্ট্রাক্টরের মাধ্যমে মডেল-অভিনেত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিতেন সামির আল মাসুদ। এরপর বিভিন্ন কৌশলে টার্গেট করা মডেল-অভিনেত্রীদের ব্যক্তিগত তথ্য জেনে নিত এবং সফটওয়্যার ব্যবহার করে টার্গেটকৃত ফেসবুক আইডির নামে নকল একটি জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি করা হতো।
×