ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতিটি ম্যাচকে শেষ সুযোগ মনে করেন সাব্বির

প্রকাশিত: ১০:০০, ২৮ মে ২০১৯

 প্রতিটি ম্যাচকে শেষ সুযোগ মনে করেন সাব্বির

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এবার বিশ্বকাপ দলে সাব্বির রহমানের জায়গা পাওয়া নিয়ে ছিল কিছুটা অস্বস্তি। মারকুটে এ ব্যাটসম্যান কতটা উপযুক্ত এই মুহূর্তে জাতীয় দলের জন্য? প্রশ্নটা সেখানেই নিবদ্ধ ছিল, কারণ শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য নিষিদ্ধ ছিলেন এবং তেমন ফর্মেও ছিলেন না ঘরোয়া আসরে। তবে কোচ এবং অধিনায়ক একটা কথাই বলেছিলেন ইংল্যান্ডের মতো পরিবেশে সাত নম্বর পজিশনের জন্য সাব্বিরকে তাদের অবশ্যই প্রয়োজন। সেদিক থেকে সাব্বিরের বিশ্বকাপ ম্যাচে ৭ নম্বর পজিশন অনেকটাই নিশ্চিত ছিল। কিন্তু সাব্বির ত্রিদেশীয় সিরিজে দুই ম্যাচে ব্যাট হাতে নামার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি, একটিতে শূন্য রানে ফিরে গেছেন। ফাইনালে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২৪ বলে ৫২ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলায় এখন একাদশে সাব্বিরের বিকল্প হিসেবে তাকেও চিন্তা করতে হচ্ছে। ৩/৪টি ছাড়া বাকি সব পজিশনেই এই পরিস্থিতি বর্তমান। তাই সাব্বির যখনই সুযোগ পান সেটিকে শেষ ম্যাচ মনে করেন। এমনটাই জানিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী এ তরুণ। বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচগুলো খুব জরুরী সাব্বিরের জন্য। কারণ একাদশে সুযোগ করে নিতে হলে এখানেই পরীক্ষা দিয়ে নজর কাড়তে হবে। যদিও আগে কোচ-অধিনায়ক তার হার্ডহিটিংয়ের সামর্থ্য বিবেচনা করে ৭ নম্বর পজিশনের জন্য ভেবে রেখেছিলেন, কিন্তু এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। মোসাদ্দেকও নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করেছেন। যদিও এ তরুণ কিছুটা ওপরের দিকেই ব্যাটিং করেন। কিন্তু বর্তমান দলে পজিশন অনুসারে মোসাদ্দেকের সুযোগ নেই। একমাত্র সাব্বিরের পজিশনেই তার সুযোগ রয়েছে। আর সাব্বিরও ফর্মে ধারাবাহিকতার সমস্যায় ভুগছেন। কিছুদিন আগে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন সাব্বির নিউজিল্যান্ডে। সেটিই তাকে এগিয়ে রেখেছিল অন্যদের কাছ থেকে। কারণ কোচ ও অধিনায়কের আস্থার জবাব দিয়েছিলেন ওই শতক হাঁকিয়ে। আগে তিনে ব্যাটিং করলেও সাব্বির বতর্মানে ৭ নম্বরে স্থির হয়েছেন শুধু শেষদিকে স্লগ ওভারে দ্রুত রান তোলার জন্য। তবে মোসাদ্দেক দেখিয়েছিলেন তিনিও এতে খুব পারদর্শী। বিশেষ করে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে দেশের পক্ষে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়ে দেখিয়েছেন নিজের সামর্থ্য। আর অতীতে তার পেসভীতি কিংবা দুর্বলতা রয়েছে সেই অপবাদ থাকলেও এ ম্যাচে মোসাদ্দেক সেটিও ঘুচিয়েছেন। আর স্পিন বোলিংয়েও সাব্বিরের লেগস্পিনের চেয়ে মোসাদ্দেকের অফস্পিন অনেক বেশি কার্যকর হিসেবে অনেকবার প্রমাণিত হয়েছে। সে জন্যই এখন সাব্বিরের সঙ্গে মোসাদ্দেকের একাদশে জায়গা পাওয়া নিয়ে লড়াই। আসন্ন বিশ্বকাপে শেষের দিকের ফিনিশার হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছিল সাব্বিরকে। মূল একাদশে জায়গাটাও ছিল মোটামুটি নিশ্চিত। সেই প্রেক্ষাপট পাল্টে দিয়েছেন বিকল্প হিসেবে স্কোয়াডে আসা মোসাদ্দেক। তাই এখন প্রতিটি সুযোগকে শেষ ম্যাচ বলে মনে করছেন সাব্বির। তিনি বলেন, আমি সবসময় মনে করি এটাই আমার শেষ ম্যাচ। এখানে ভাল করে দ্বিতীয় ম্যাচে সুযোগ পেতে হবে এবং আত্মবিশ্বাস নিয়ে ভাল করতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচে ভাল করে পরের ম্যাচ চেষ্টা করতে হবে। শেষ ম্যাচ ধরে নিয়েই সবটা দেয়ার চেষ্টা করি। তবে সেটা প্রমাণ করতে পারেননি ত্রিদেশীয় সিরিজে। পাকিস্তানের বিপক্ষে রবিবার প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে পারেননি সাব্বির। সেখানে নিজেকে প্রমাণের সুযোগ ছিল। এবার আজ ভারতের বিপক্ষে আরেকটি পরীক্ষার সুযোগ। তিনি বলেন, ত্রিদেশীয় সিরিজে আমাকে সে রকম ব্যাটিং করতে হয়নি। টপঅর্ডার ভাল করায় সুযোগ আসেনি। একটি সুযোগ পেয়েছিলাম কিন্তু কাজে লাগাতে পারিনি। প্র্যাকটিস ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ আমার জন্য। পাকিস্তানের সঙ্গে খেলা না হওয়াটা হতাশার। তবে যে ধরনের উইকেটে খেলা হবে সে ধরনের উইকেটেই অনুশীলন করছি। দেখা যাক সামনে কি হয়। আগের বিশ্বকাপে খেলেছিলেন, তাই এবার তেমন উন্মাদনা নেই। তবে বিশ্বকাপ বলেই হয়তো রোমাঞ্চকর অনুভূতি রয়েছে সাব্বিরের, বিশ্বকাপ নিয়ে আমি সবসময়ের মতোই রোমাঞ্চিত। প্রথম বিশ্বকাপে আবেগটাই বেশি ছিল। এখন পরিপক্বতার ব্যাপার আছে। চার-সাড়ে চার বছর খেলেছি। যা কিছু অর্জন করেছি এই ক’দিনে, ম্যাচিউরিটি দিয়ে হোক, নিজের শক্তির জায়গা দিয়ে হোক, সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব। দল ভাল অবস্থায় আছে, আমিও ভাল আছি। অনুশীলন করছি। যে উইকেটে খেলা হবে সে রকম উইকেটেই অনুশীলন করছি। খেলা না হলেও আমার কাছে অনুশীলন অনেক গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। অনুশীলন ভাল করলে ম্যাচে ভালকিছু করার আত্মবিশ্বাস পাওয়া যায়।
×