ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে জিরো টলারেন্স

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৮ মে ২০১৯

  সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে জিরো টলারেন্স

শংকর কুমার দে ॥ ঈদকে সামনে রেখে রমজান মাসে সড়কে ও মহাসড়কে চাঁদাবাজি বন্ধে জিরো টলারেন্স নীতি দেখানোর জন্য নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর। ঈদকে সামনে রেখে চাঁদাবাজি বন্ধে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে সিসিটিভি স্থাপন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট পুলিশকে। ট্রাক, পিকআপ এবং পণ্যবাহী ট্রাকে যাত্রী পরিবহন রোধ এবং সুনির্দিষ্ট তথ্য ব্যতীত মহাসড়কে যানবাহন থামানো যাবে না বলে নির্দেশ দিয়েছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী। ঈদ সামনে রেখে রমজান মাসে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি মনিটরিং করছে পুলিশ সদর দফতর। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে এ খবর জানা গেছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, ঈদ শান্তিপূর্ণভাবে উদ্যাপন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে রবিবার আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে পুলিশ সদর দফতরে। পুলিশের আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিতেই অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারা। সারাদেশের রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যেকটি ইউনিটকে শান্তিপূর্ণভাবে ঈদ উদ্যাপন নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয় সভায়। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বা পুলিশের কেউ যদি রাস্তায় চাঁদাবাজি করে এবং তা প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ জন্য রমজান উপলক্ষে রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর নির্দেশ দিয়ে মনিটরিং করবে পুলিশ সদর দফতর। পণ্যমূল্য বৃদ্ধি বন্ধ করতে রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে রমজানের শুরুতেই এই ধরনের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এবারের রমজান মাসে রাস্তায় রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হুঁশিয়ারির পর পণ্যমূল্য বিশেষ করে কাঁচাবাজারের শাক, সবজি জাতীয় পণ্যের বাজার স্থিতিশীল আছে, বা মূল্য বৃদ্ধি হতে পারেনি এবং সড়কে ও মহাসড়কে কোন ধরনের চাঁদাবাজির অভিযোগ আসেনি বলে পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছরই রমজান শুরু হলে ব্যবসায়ী ও পণ্য পরিবহনের সঙ্গে জড়িত মালিক-শ্রমিকদের অভিযোগ থাকে রাস্তায় চাঁদাবাজির। তাই ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে এ চাঁদার টাকা উঠিয়ে নেয়, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ঘাড়ে গিয়ে চাপে। কিন্তু এবার সেই ধরনের অভিযোগ এখনও পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ সদর দফতরের দাবি। রমজানে মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে সরকার। রাস্তায় ট্রাকে চাঁদাবজির কারণেও পণ্যের মূল্য বেড়ে যায়। তাই রাস্তায় যে কোন ধরনের চাঁদাবাজি যাতে না হয় প্রয়োজনে সরকার মনিটরিং করছে। পুলিশের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতি বছরই রমজান মাস আসলে পুলিশের বিরুদ্ধে বড় অভিযোগ রাস্তায় পণ্যবাহী ট্রাকে চাঁদাবাজি হচ্ছে, আর এ জন্য পুলিশকে দায়ী করা হয়। এ জন্য এবার রমজানের শুরুতেই এটা বন্ধ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। প্রতিটি পয়েন্টে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হবে। চাঁদাবাজির জন্য মানুষদের বেশি টাকা দিয়ে পণ্য ক্রয় করতে হবে এটা মেনে নেয়া যায় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। চাঁদাবাজি ঠেকাতে থানা, পুলিশ, এসপি লেভেল ছাড়াও প্রয়োজনে কল সেন্টার করে দেয়া হবে। যাতে যে কেউ চাঁদাবাজির বিষয়ে জানাতে পারে। আর সেভাবে ব্যবস্থা নেয়া যায়। ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা বলেছেন, পণ্য পরিবহনে পুলিশের বেপরোয়া চাঁদাবাজি আগের মতোই রয়েছে। এর ওপর ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের চাঁদা মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বাড়িয়ে এ চাঁদার টাকা উঠিয়ে নিচ্ছে। যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার ঘাড়ে গিয়ে চাপছে। কিন্তু প্রকাশ্যে তা অভিযোগও করা যাচ্ছে না। অভিযোগ করলে আরও বিপদ। তাই চাঁদাবাজির হিস্যাটা মিটানো হচ্ছে গোপনে। তবে রাজধানীর পাইকারি কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীদের জিজ্ঞেস করলেই তারা অভিযোগ করেন, রংপুর বা বগুড়ায় যে সবজির দাম ১০ টাকা কেজি, তা ঢাকায় এসে দাম বেড়ে হয়ে যায় ৪০ টাকা কেজি।
×