ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শাহাব উদ্দিন মাহমুদ

বঙ্গবন্ধুর গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ॥ ১৯ মে ১৯৭১

প্রকাশিত: ০৮:৪৫, ১৯ মে ২০১৯

 বঙ্গবন্ধুর গ্রামের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ॥ ১৯ মে ১৯৭১

১৯৭১ সালের ১৯ মে দিনটি ছিল বুধবার। স্বাধীনতার জন্য মরণপণ সংগ্রাম চলছে। বাংলার বীর সৈনিক, ইস্ট বেঙ্গল রাইফেলস, ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস, পুলিশ বাহিনী, এদেশের ছাত্র, কৃষক হানাদার পশ্চিমা বাহিনীর আক্রমণ সাফল্যের সঙ্গে প্রতিহত করে চলেছে এবং বাংলার বীর সৈনিকদের আক্রমণে দিশেহারা পশ্চিমা বাহিনী পিছু হটছে। মর্টার, কামান ও ট্যাঙ্কের সাহায্যে বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গণহত্যা করে চলেছে। পশ্চিমা হানাদার বাহিনী আন্তর্জাতিক নিয়ম-কানুন উপেক্ষা করে হাসপাতালে পর্যন্ত বোমাবর্ষণ করেছে। বাংলার সাত কোটি মুক্তিপাগল মানুষের ওপর পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর আক্রমণ মুক্তিসেনারা যথাসাধ্য প্রতিরোধ করছে। এই দিন নওগাঁয় ধামুহরহাট থানায় অবস্থানরত পাকবাহিনীর ওপর মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে আক্রমণ চালায়। এই অভিযানে একজন অফিসারসহ কয়েকেজন পাক সৈন্য নিহত হয়। অপরদিকে একজন মুক্তিযাদ্ধা শহীদ ও দু’জন আহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা গোপালগঞ্জ শহরে অভিযান চালায়। তেলিয়াপাড়া চা বাগান এলাকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে সিলেটগামী পাকবাহিনীর দু’কোম্পানি সৈন্যকে এ্যামবুশ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের এই অভিযানে এক কোম্পানি পাকসেনা নিহত হয় ও তিনটি সামরিক যান ধ্বংস হয় এবং মুক্তিযোদ্ধারা একটি গাড়ি ও প্রচুর গোলাবারুদসহ অস্ত্রশস্ত্র লাভ করে। এই দিন বঙ্গবন্ধুর ধানম-ির ৩২ নং বাড়ি থেকে শেখ জামাল পালিয়ে গেলে তাকে খোঁজ করতে হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুর গ্রামের বাড়িতে চলে আসে । এ সময় তারা বঙ্গবন্ধুর বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়। হানাদার বাহিনী নির্মমভাবে এই গ্রামের শেখ মিন্টু, কাজী তোরাব আলী, শেখ আরশাদ আলী, মোঃ লিয়াকত ওরফে লিকু, ধলা মিয়া, কবিরাজ ও সরদারকে গুলি করে হত্যা করে। শেখ বাড়ির শেখ বোরহান উদ্দিনকে পাক বাহিনী ধরে ফেলে। তার ফুফু পাক বাহিনীর কমান্ডারকে কাজের ছেলে বলে ছাড়িয়ে নেয়। পাক বাহিনী শেখ আকরাম হোসেন, কাজী সাহাউল আলম ও শেখ ইমাম হোসেনকে ধাওয়া করে। শেখ আকরাম দৌড়ে পালিয়ে যান। কাজী আলম ও শেখ ইমাম কাজী নওশের আলী সাহেবের গোলা ঘরে লুকিয়ে থেকে প্রাণ বাঁচান। এ পরিস্থিতে বঙ্গবন্ধুর মা ও বাবাকে মৌলভী আব্দুল বারী বিশ্বাসের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঐ বাড়ি নিরাপদ না হওয়ায় কিছুদিন পর পাশেই ঝিলু বিশ্বাসের বাড়িতে আশ্রয় নেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ যখন তুঙ্গে হেমায়েত বাহিনীর দুই সদস্য আলম ও ফারুখ তাদের কে শিবচর ইলিয়াাস চৌধুরীর বাড়িতে রেখে আসে। মুজিবনগরে বটগাছ ও খামারবাড়ি এলাকায় যুব ক্যাম্প স্থাপন করা হয়। এ ক্যাম্পে যোদ্ধাদের গেরিলা ট্রেনিং দেয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ক্যাম্পের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা হচ্ছেন: সোলায়মান হক, জোয়ার্দার সেলুন, আবুল বাশার, সিদ্দিক জামাল নান্টু, ওলিউল্লাহ সিদ্দিক, বুধো, মন্টু ও হাসান। পাক বর্বররা সিলেটের গালিমপুরে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ চালায়। হানাদারদের এই নৃশংস হত্যাযজ্ঞে ৩১ জন নিরীহ গ্রামবাসী নিহত হয়। নওগাঁর ধামইরহাট থানায় পৃথক পৃথক দু’টি অপারেশন চালিয়ে মুক্তিবাহিনী ১জন পাক অফিসারসহ তাদের বেশ কয়েক জন সহযোগীকে হত্যা করে। এ অভিযানে একজন মুক্তিযোদ্ধা নিহত এবং দু’জন আহত হন। এ অভিযানে মুক্তিযোদ্ধারা ১টি জিপসহ প্রচুর সামরিক সরঞ্জাম হস্তগত করেন। জাতিসংঘের মহাসচিব উ থান্ট নিউইয়র্কে বলেন, পূর্ব পাকিস্তান থেকে দলে দলে শরণার্থী ভারতে উপস্থিত হওয়ায় জাতিসংঘ বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন। এখনও বিপুল সংখ্যক শরণার্থী ভারতে আসছেন। এদের মধ্যে বহু শিশু ও মহিলা রয়েছেন। তাঁদের দুঃখ-দুর্দশার অন্ত নেই। পূর্ব পাকিস্তান থেকে যে অসংখ্য লোক ভারতে চলে আসছেন, তাদের আশু সাহায্যের যে খুবই প্রয়োজন, তাতে কোন সন্দেহ নেই। আমি একান্তভাবে আশা করি, এসব হতভাগ্য লোককে যথাশীঘ্র স্বেচ্ছায় ফিরিয়ে নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এটা সুস্পষ্ট যে, যতদিন না তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, ততদিন আপদকালীন ভিত্তিতে ব্যাপক বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজন হবে। এ জন্য ভারত জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার কাছে যথাশীঘ্রই সম্ভব শরণার্থীদের জন্য সাহায্য পাঠানোর আবেদন জানিয়েছেন। আমি জাতিসংঘের সব সংস্থার পক্ষ হতে বিভিন্ন সরকার, আন্তঃসরকারী ও বেসরকারী সংস্থা এবং ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠাগুলোর কাছে আবেদন জানাচ্ছি, তারা যেন বর্তমান মর্মান্তিক পরিস্থিতিতে মানবকল্যাণ কাজে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসেন। প্রাদেশিক জামায়াতে ইসলামীর মহাসচিব আবদুল খালেক ও শ্রম সচিব মোহাম্মদ শফিউল্লাহ এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, পাকস্তানবিরোধী দুষ্কৃতকারী ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ত্রাসের রাজত্ব শেষ হয়েছে। পাকিস্তানের বীর সেনাবাহিনী সময় মতো ব্যবস্থা নেওয়ায় সহজেই পরিস্থিতি আয়ত্তে এসেছে। সেনাবাহিনী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সম্পূর্ণ নিশ্চিহ্ন করতে বদ্ধপরিকর। আমরা তাদের উৎখাত করতে সেনাবাহিনীকে সাহায্য করার জন্য পূর্ব পাকিস্তানের মুসলমানদের এগিয়ে আসার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। ঢাকায় সামরিক শাসন কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেন, রংপুর জেলার তিনজন জাতীয় পরিষদ সদস্য নূরুল হক, আজিজুর রহমান ও ডা. আবু সোলায়মান আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কছেদের কথা ঘোষণা করেছেন। শান্তি ও কল্যাণ পরিষদ নেতা মৌলভী ফরিদ আহমেদ করাচিতে এক সংবাদ সম্মেলনে বেআইনী ঘোষিত আওয়ামী লীগের সদস্যদের প্রকাশ্য বিচার দাবি করেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সহযোগীরা যা করছে তা দেশদ্রোহিতার নামান্তর। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সহায়তা করার জন্য ইন্দিরা গান্ধীর সমালোচনা করেন। এই দিন লন্ডনের দ্য টাইমস পত্রিকায় ‘রোড টু ডেথ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, গত দু’সপ্তাহ ধরে হাজারো আতঙ্কগ্রস্ত দুস্থ বাঙালী ভারত পালিয়ে যাবার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তারা অকৃতকার্য হয়েছেন এবং পথে অনেকে ক্লান্তি-ক্ষুধা-জরায় মৃত্যুবরণ করেছেন। শরণার্থীরা প্রতিবেদককে জানিয়েছেন যে, ৭৫ মাইলের ভয়ানক পথ পাড়ি দিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ভারত বর্ডার পার হয়ে ছোট্ট ত্রিপুরা রাজ্যে আসা অনেকেই একই পরিণতি মেনে নেবে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। প্রায় ৫ লাখ মুসলিম এবং হিন্দু শরণার্থী ইতোমধ্যে ত্রিপুরা রাজ্যে প্রবেশ করেছে এবং তাদের মধ্যে অধিকাংশই সাব্রুম পাড়ি দিয়ে এসেছে, যেখানে ভারত ও পাকিস্তানের বর্ডারের সীমানির্দেশ করেছে ফেনী নদী। অবসাদগ্রস্ত, নিশ্চল শরণার্থীরা এখান থেকে প্রায় ৬০ মাইল দক্ষিণে অবস্থিত চট্টগ্রাম থেকে তাদের বাড়ি ঘর রেখে কি মর্মান্তিকভাবে এখানে এসেছেন, তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন। ...পাকিস্তানী সেনারা বিনা কারণে ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের গুলি করেছে। আগরতলা থেকে আসবার পথটিও জনাকীর্ণ শরণার্থী শিবিরগুলোর মতোই দুঃখ দুর্দশাগ্রস্ত। সামান্য কিছু খাবার আর মাথা গোঁজার ঠাঁইয়ের আশায় শূন্য চাহনি আর চরম হতাশাগ্রস্ত মুখের জরাগ্রস্ত এই বাঙালীরা উত্তরের দিকে যাত্রা করছিল। এ জনপ্রবাহ যেন কখনওই থামবার নয়। স্কুল আর সরকারী অফিসগুলোকে ডর্মিটরিতে রূপান্তরিত করা হলেও সীমিত জায়গার কারণে অধিকাংশেরই জায়গা হলো খোলা আকাশের নিচে। অনেক নারী ও শিশু জরাজীর্ণ ঘাসের কুটির তৈরি করল। পয়ঃনিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা ছিল না। ছিল প্রচন্ড গরম। সঙ্গে দুর্গন্ধ ছিল অসহনীয়। যেখানে সেখানে বদ্ধ পানি দেখা যাচ্ছিল এবং মহামারীর প্রাদুর্ভাব ছিল শুধু সময়ের ব্যাপার। জয়বাংলার, ১ম বর্ষ, ২য় সংখ্যায় ‘এক সপ্তাহের লড়াইয়ে আরও সহস্রাধিক শত্রু সৈন্য নিহত’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা সিলেট-কুমিল্লা, চট্টগ্রাম- নোয়াখালী, ময়মনসিংহ-টাঙ্গাইল, দক্ষিণ-পশ্চিম এবং উত্তরবঙ্গ সেক্টরের বিভিন্ন রণাঙ্গানে দিনের পর দিন পাক-ফৌজের ওপর গেরিলা কৌশলে চোরাগোপ্তা কখনও ঝটিকা বা অতর্কিত হামলা অব্যাহতভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। ...এতে গত এক সপ্তাহে সারাদেশে অন্তত আরও এক হাজার পাকসৈন্য নিহত হয়েছে। একই দিন জয়বাংলার সম্পাদকীয়তে বলা হয়, রাওয়ালপিন্ডি, ইসলামাবাদ পশ্চিম পাকিস্তানের বিভিন্ন সংবাদপত্রে এই মর্মে এক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান গণপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে ইচ্ছুক। তবে দু’টি মাত্র শর্তে। তা হলো সামরিক সরকারের হাত থেকে ক্ষমতা নেয়ার আগে সংশ্লিষ্ট সকলকে তারই দেয়া একটি অন্তর্বর্তীকালীন শাসনতন্ত্র মেনে নিতে হবে। তারপর জাতীয় পরিষদ যে শাসনতন্ত্র রচনা করবে তাও হুবহু অন্তর্বর্তীকালীন শাসনতন্ত্রের অনুরূপ হতে হবে। পশ্চিম পাকিস্তানীরা ইয়াহিয়া বা অন্য কারও দেয়া শাসনতন্ত্র গ্রহণ করবে কি করবে না, তা তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তারা যদি রোজ কেয়ামত পর্যন্ত সামরিক আইনে শাসিত হতে চায় তাহলেও আমাদের বলার কিছু নেই। কেননা, ওটা তাদের ঘরোয়া ব্যাপার। তারা একটা আলাদা রাষ্ট্র। আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিতে চাই যে, ইয়াহিয়া খানের ক্ষমতা হস্তান্তর বা পাকিস্তানের শসনতন্ত্র রচনার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের কোন সম্পর্ক নেই। লাখো শহীদের লাশের তলায় লাখো মায়ের তপ্ত অশ্রুর অতল তলে কবর হয়ে গেছে পাকিস্তানের। মরণপণ সংগ্রামে-হয় স্বাধীন জাতি হিসেবে বাঁচব না হয় মরব। বাঙালী আজ জেগেছে। শেখ মুজিবের মন্ত্রে দীক্ষিত হয়েছে। পশ্চিমা বর্বর সৈন্যদের ঝরানো রক্তের প্রতি ফোঁটায় জন্ম নিয়েছে হাজার হাজার মুজিব। প্রয়োজনবোধে তারাই দেবে জাতিকে নেতৃত্ব। একজন বাঙালী তরুণ বেঁচে থাকা পর্যন্ত ও সে অস্ত্র চালিয়ে যাবে বিদেশী হানাদারদের বিরুদ্ধে। কেননা, বাঙালী আজ বেঁচে মরতে চায় না, সে মরে বাঁচতে চায়। এই দিন পি টি আই এর বরাতে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘মুক্তিফৌজের অতর্কিত আক্রমণে পাকসেনারা নাজেহাল’ শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গতকাল কুমিল্লা জেলায় মুক্তিফৌজের কমা-ো আক্রমণে আড়াই শতাধিক পাকিস্তানী সৈন্য নিহত হয়েছে। গত রবিবার সকালে মুক্তিফৌজের কমা-োরা রাজশাহীতে পাক-বাহিনীকে আক্রমণ করলে প্রায় ৫০জন পাকসৈন্য নিহত হয় বলে সীমান্তের ওপার থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে। শিবগঞ্জ থানা এলাকায় সোনামসজিদে পাক-বাহিনীর ওপর গেরিলারা আক্রমণ করলে ৫ জন পাকসৈন্য নিহত হয় এবং আরও ৫ জন আহত হয়। পাক-বাহিনীর সঙ্গে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামীর ১১ জন সদস্য চাঁপাইনবাবগঞ্জের মনাকশায় মুক্তিফৌজের হাতে প্রাণ হারায়। দৈনিক স্টেটসম্যান পত্রিকায় ‘ভারত যে কোন পরিণামের জন্য প্রস্তুত’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়, প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী, আজ পাকিস্তানকে সতর্ক করেন যে ভারত তার ওপর হুমকির বিষয়ে অনড়। ‘যদি আমাদের ওপর কোন বিশেষ চাপ দেয়া হয়, তাহলে আমরা প্রয়োজনে যুদ্ধ করার জন্য প্রস্তুত’- প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ‘পূর্ববাংলায় সবকিছু স্বাভাবিক আছে’- পাকিস্তানের এই দাবিকে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যদি এটা সত্যি হয় তবে অতি সত্বর পাকিস্তানের উচিত শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়া। ভারতীয় সীমান্তে উদ্বাস্তুরা ভারতের জন্য একটি বড় সমস্যা তৈরি করেছে। এটি গুরুতরভাবে দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবন প্রভাবিত করবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বিশ্বের গণতন্ত্র কামী জাতির কাছে পাকিস্তানকে পূর্ববাংলায় তার সামরিক নৃশংসতা থামাতে বলতে অনুরোধ করেন। তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বুঝাতে চেষ্টা করেন যে পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ সমস্যা ধীরে ধীরে ভারতের জন্য একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠছে। তবে তিনি বলেছেন, ‘শরণার্থীদের বোঝা আমাদের ওপর অনেক বড় চাপ ফেলছে, কিন্তু কিভাবে আমরা অসহায় শরণার্থীদের উপেক্ষা করতে পারি? পাকিস্তান ভারতের জন্য একটি কঠিন পরিস্থিতি তৈরি করেছে। কোন দেশই এই রকম আচরণ করার অধিকার রাখে না। যদি অতি সত্বর এই পরিস্থিতির উন্নতি না হয় তাহলে ভারত সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। লেখক : শিক্ষাবিদ ও গবেষক [email protected]
×