ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিববিহীন আরেকটি ফাইনাল

প্রকাশিত: ১১:৪০, ১৮ মে ২০১৯

  সাকিববিহীন আরেকটি ফাইনাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আরেকটি ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। আরেকটি ফাইনালে নেই বাংলাদেশ অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শুক্রবার ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও খেলতে পারেননি সাকিব। এবার পিঠের ব্যথায় খেলতে পারেননি তিনি। এর আগে গত বছর সেপ্টেম্বরে দুবাইয়ে হওয়া এশিয়া কাপের ফাইনালেও খেলেননি। আঙ্গুলে চোটের কারণে খেলতে পারেননি। গত বছর শ্রীলঙ্কায় হওয়া নিদাহাস ট্রফির ফাইনালেও খেলা অনিশ্চিতই ছিল। শুরু থেকে যে ইনজুরির জন্য খেলেননি। শেষ পর্যন্ত খেলেন সাকিব। গত বছর জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে হওয়া ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালেও খেলে বাংলাদেশ। সেই ম্যাচটিতেও সাকিব পুরো খেলতে পারেননি। শুরুতে ৫ ওভার বোলিং করে ফিল্ডিং করার সময় যে আঙ্গুলে চোট পান, আর ফাইনাল খেলায় ফিরতে পারেননি। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত সাতটি ফাইনাল খেলে। সাকিব দুটি ফাইনাল খেলতে পারেননি। একটি ফাইনালের শুরুতেই ইনজুরিতে পড়ে খেলেননি। তার মানে তিনটি ফাইনালই খেলতে পারেননি তিনি। ফাইনাল এলেই যেন সাকিবের কি হয়ে যায়। ইনজুরি যেন তাকে চুম্বকের মতো আকর্ষণ করতে থাকে। ইনজুরিতে পড়ে যান। খেলাও হয় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সাকিবের থাকাটা খুবই দরকার ছিল। পুরো সিরিজজুড়ে যে দুর্দান্ত খেলেছেন সাকিব। ফাইনালের আগে বাংলাদেশ চার ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে। একটি ম্যাচ বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে। দুটি ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সাকিব। বল হাতেও অসাধারণ বোলিং করেছেন। সাকিব দলে থাকা মানে একাদশে একজন বাড়তি বোলার অথবা ব্যাটসম্যান নামানো যায়। সাকিব যে একের ভেতরে দুই, অলরাউন্ডার। তার ওপর দলের ভরসাও থাকে অনেক। কিন্তু এবারও সাকিব ইনজুরির জন্য শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে খেলতে পারেননি। সাকিবকে ছাড়াই তাই শিরোপার লড়াইয়ে নামতে হয়েছে বাংলাদেশকে। টস তখনও হয়নি। বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা গা গরম করছেন। অনুশীলনে ব্যস্ত। আরেকদিকে সাকিবকে দেখা গেছে একপাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। তখনই বোঝা গেছে সাকিব ফাইনালে খেলছেন না। অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো টসের সময়। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা জানালেন, দলের সেরা ক্রিকেটারকে ছাড়াই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ফাইনালে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে টানা দুটি শিরোপা লড়াইয়ে এই অলরাউন্ডারকে পেল না বাংলাদেশ। গত সেপ্টেম্বরে দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে আঙ্গুলের চোটের কারণে সাকিবকে পায়নি বাংলাদেশ। এবার তিনি নেই পিঠের অস্বস্তিতে। সিরিজে লীগপর্বের শেষ ম্যাচে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সময় পিঠের বাঁ পাশের পেশির চোটে ফিফটির পর মাঠ ছাড়েন সাকিব। পরে ব্যথা কমলেও অস্বস্তি থেকেই গেছে। ফাইনালে খেলা না খেলার সিদ্ধান্ত পুরোপুরি তার ওপরই ছেড়ে দিয়েছিল টিম ম্যানেজমেন্ট। ফাইনালে সাকিবের জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা ছিল দলের। পিঠের অবস্থা পরখ করার জন্য ফিজিও-ট্রেনারের সঙ্গে সকালে আগেভাগেই মাঠে চলে এসেছিলেন সাকিব। কিন্তু সন্তুষ্ট হতে পারেননি নিজের অবস্থায়। দলের সেরা ক্রিকেটারকে ছাড়া মাঠে নামার জন্য অবশ্য মানসিকভাবে তৈরি ছিল দল। ম্যাচের আগেরদিন অধিনায়ক মাশরাফি বলেছিলেন, ‘সাকিবের থাকা না থাকাই ম্যাচের ডিসাইডিং ফ্যাক্টর, অধিনায়ক হিসেবে সেটা আমি মনে করি না। সাকিব কত গুরুত্বপূর্ণ বা কত বড় ক্রিকেটার, সেটা আমার মুখ থেকে শুনতে হবে না। সাকিব বাংলাদেশের জন্য কি করে বা কত বড় ক্রিকেটার, সবাই জানে। সাকিব যদি না খেলতে পারে, ওকে মিস করা আমাদের জন্য ভাল খবর অবশ্যই নয়।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘তবে পাশাপাশি এটাও বলব, সাকিবকে ছাড়াও এই ম্যাচ জয়ের সামর্থ্য আমাদের আছে। এ জন্যই সেরা ১৫ জনকে আনা হয়। আমি অধিনায়ক হিসেবে বলব, সাকিব না খেললে, ওর জায়গায় যে খেলবে, সেও পেশাদার ও তারও সামর্থ্য আছে ভাল করার।’ সাকিবকে নিয়ে আরও বলতে গিয়ে মাশরাফি জানান, ‘সাকিবকে নিয়ে পরিস্থিতি একটু ক্রিটিক্যাল। এখনই বলা যাচ্ছে না। ওর ওপরই নির্ভর করছে। এটা আসলে পৃথিবীর কোন ডাক্তার-ফিজিও’র পক্ষে সম্ভব নয় যে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কোন ব্যথা নামিয়ে ফেলবে। ওই ক্রিকেটার কেমন অনুভব করছে সেটির ওপরই নির্ভর করছে। সাকিব আসলে খেলার দিন সকালে মাঠে যাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নেবে যে পারবে কি পারবে না।’ সাকিব পারেননি। তাই আরেকটি ফাইনালে খেলাও হয়নি।
×