ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

টেলিটক নেটওয়ার্ক প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৯:৪২, ১৮ মে ২০১৯

  টেলিটক নেটওয়ার্ক প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ

ফিরোজ মান্না ॥ দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে সরকার তথ্যপ্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে গ্রাম পর্যন্ত নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যে যুগান্তকারী বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতির ফলে বাংলাদেশের এমন কোন গ্রাম নেই, যেখানে ডাটার (ইন্টারনেটের) চাহিদা নেই। দেশের সব শ্রেণী-পেশার মানুষের কল্যাণের বিষয়টি মাথায় রেখে দুর্গম এলাকাসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছেও টেলিটক নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিতে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার গুলশানে টেলিটকের প্রধান কার্যালয় পরিদর্শন করতে গিয়ে এ কথা বলেন। মোস্তাফা জব্বার টেলিটকের বিদ্যমান ২ দশমিক ৫ জি সার্ভিসকে আরও উন্নত করার নির্দেশ দেন। ডাটার সঙ্গে না থাকলে টিকে থাকা যাবে না। আগামী দিনে ভয়েস কলও ডাটার মাধ্যমেই হবে। তিনি টেলিটক কর্মকর্তাদের বৈঠকে টেলিটকের বিস্তারিত তথ্য বিশেষ করে চলমান বিভিন্ন কর্মসূচী ও ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পনা এবং বিভিন্ন সেবা সম্পর্কে মন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে মন্ত্রীকে জানানো হয়, টেলিটক সাড়ে চার হাজার বিটিএসর মাধ্যমে দেশের শতকরা প্রায় ৪৩ ভাগ এলাকায় মোবাইল সেবা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সাশ্রয়ী মূল্যে ডাটা প্যাক, বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যালে ভর্তি, চাকরির আবেদন গ্রহণসহ টেলিটকের বিদ্যমান বিভিন্ন সার্ভিস ও কর্মসূচী বৈঠকে তুলে ধরা হয়। সূত্র জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকাধীন মোবাইল অপারেটর টেলিটককে অন্য অপারেটরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম করে তোলাই বিভিন্ন প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। নেটওয়ার্ক দুর্বল বলে শহর থেকে শুরু করে গ্রামেগঞ্জের গ্রাহকরা অন্য অপারেটরে চলে যাওয়া রোধ হবে। দেশের প্রত্যন্ত গ্রামগঞ্জে সরকারী মোবাইল অপারেটর টেলিটকের নেটওয়ার্ক পৌঁছে দিতে কাজ শুরু করা হয়েছে। অন্য অপারেটররা প্রতিনিয়ত তাদের নেটওয়ার্ক উন্নয়নে বিনিয়োগ করছে। কিন্তু টেলিটকের কোন বিনিয়োগ নেই। ফলে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। দেশের অনেক জায়গায় টেলিটকের নেটওয়ার্ক নেই। টেলিটকের থ্রিজি নেটওয়ার্কেরও একই অবস্থা। রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজে আমরা টেলিটক ব্যবহার করছি। পরীক্ষার রেজাল্ট দেয়া, বিদ্যুত, টেলিফোন বিল, ওয়াসার বিলসহ নানা রকম সেবার কাজে টেলিটক ব্যবহার হলেও টেলিটকের উন্নয়ন তেমন একটা হয়নি। টেলিটককে অন্য অপারেটরদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নিতে হলে এখানে বিনিয়োগ করতেই হবে। টেলিটকের এমডি সাহাবউদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে টেলিটকের এক কর্মকর্তা জানান, টেলিটক হচ্ছে দেশের কোম্পানি। এই কোম্পানির ফোন অনেকেই ব্যবহার করতে চান। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে নেটওয়ার্কের। সারাদেশে নতুন করে এক হাজার বিটিএস (বেইজ স্টেশন) স্থাপনের কাজ শুরু হয়েছে। আগের বেইজ স্টেশনগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো হচ্ছে। এখন থেকে অন্য যে কোন অপারেটরের মতো টেলিটকের নেটওয়ার্ক দেশের সব জায়গায় পাওয়া যাবে। নেটওয়ার্ক না পেলে মানুষ তো বিমুখ হবেই। বর্তমানে টেলিটকের প্রতি গ্রাহক তাই হচ্ছে। দেশের মানুষ টেলিটকের যতই ভাল চাক না কেন। আসল কথা সেবা। সেবা না পেলে মানুষ তো অন্যদিকে যাবেই। তবে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে টেলিটক দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে যায়। মানুষ শুরুতে টেলিটকের প্রতি যে গভীর ভালবাসা নিয়ে এগিয়ে এসেছিল তা ফিরিয়ে আনতে। হাতে নেয়া প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। সূত্র জানিয়েছে, দেশের মানুষ টেলিটক ব্যবহার করতে আগ্রহী। কিন্তু সেবার মান ও নেটওয়ার্ক দুর্বলের কারণে মানুষ অন্য অপারেটর বেছে নিচ্ছে।
×