ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পেলের দেশে কোপা আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই ১৪ জুন থেকে ৭ জুলাই

নেইমারের দিকে তাকিয়ে ব্রাজিল

প্রকাশিত: ১০:২০, ১২ মে ২০১৯

 নেইমারের দিকে তাকিয়ে ব্রাজিল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ বিশ্বকাপ ফুটবলের পর জনপ্রিয়তার বিচারে কোপা আমেরিকা কাপকেই এগিয়ে রাখেন ফুটবল বোদ্ধারা। ফুটবলের সবচেয়ে প্রাচীন এ আসরকে ঘিরে উন্মাদনার মাত্রাটা বিশ্বকাপ ফুটবলের চেয়ে কোন অংশে কম থাকে না। কেননা এখানে অংশগ্রহণ করে বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সফল ও জনপ্রিয় দু’টি দল ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা। এ দু’টি দলের অংশগ্রহণ যে টুর্নামেন্টে আছে সেই টুর্নামেন্টের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের চেষ্টা করাটা বাতুলতার পর্যায়েই পড়ে। চার বছর পর আরও একবার দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরু হওয়ার অপেক্ষা। আগামী ১৪ জুন থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত হবে এবারের আসর। ১৯১৬ সালে যাত্রা শুরুর পর এটি কোপা কাপের ৪৬তম আসর। এবারের আসরের আয়োজক বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে সফল দেশ ব্রাজিল। ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা ছাড়াও এবারের আসরে তিন গ্রুপে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে বলিভিয়া, ভেনিজুয়েলা, পেরু, কলম্বিয়া, প্যারাগুয়ে, কাতার, উরুগুয়ে, ইকুয়েডর, জাপান ও সর্বশেষ দুই আসরের চ্যাম্পিয়ন চিলি। এবার অতিথি দল হিসেবে খেলবে ২০২২ বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতার ও এশিয়ার পরাশক্তি জাপান। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাফল্য না পাওয়া ব্রাজিল এবার ঘরের মাঠে টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে চায়। এক্ষেত্রে সেলেসাওদের প্রধান ভরসার নাম নিঃসন্দেহে নেইমার। চোট কাটিয়ে মাঠে ফেরা পিএসজি তারকা টুর্নামেন্টে স্বমহিমায় উজ্জ্বল থাকবেন বলে আশা করছেন ব্রাজিল কোচ টিটে। গত রবিবার ফরাসী লীগ ওয়ানের ম্যাচে মোনাকোর বিপক্ষে ৪৫ মিনিট খেলেন নেইমার। কিলিয়ান এমবাপের হ্যাটট্রিকে ম্যাচটিতে ৩-১ গোলে জয় পেয়ে আসরের ট্রফি নিশ্চিত করে ফরাসী পরাশক্তিরা। জানুয়ারিতে পায়ের চোটে মাঠের বাইরে ছিটকে যাওয়ার পর এটাই ছিল নেইমারের প্রথম ম্যাচ। নেইমারের ফেরা প্রসঙ্গে ব্রাজিল কোচ বলেন, নেইমার মাঠে ফিরেছে এবং আমরা দ্রুতই তার ছন্দে ফেরার আশা করব। স্বাভাবিক অগ্রগতির একটি প্রক্রিয়া এটা। গত বছর রাশিয়া বিশ্বকাপের দুই সপ্তাহ আগে ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে একই ধরনের পায়ের চোট কাটিয়ে মাঠে ফিরেছিলেন নেইমার। তবে সেই পরিস্থিতির সঙ্গে এবারের অবস্থাকে এক করে দেখতে রাজি নন টিটে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখন বড় একটা পার্থক্য আছে। কোপা আমেরিকা শুরু হওয়ার আগে আরও সময় আছে। সুতরাং কৌশলগত দিক থেকে আরও উন্নত অবস্থায় পৌঁছানোর পাশাপাশি আরও ভালভাবে ফিরে আসার সুযোগ আছে। বিশ্বকাপে সে যে অবস্থায় ছিল কোপা আমেরিকায় তারচেয়ে ভাল অবস্থায় থাকতে পারে। আশাকরি আমরা সেরা সাফল্যই পাব। বিশ্বকাপ ফুটবলে যেমন কে বাজিমাত করবে এটা নিয়ে চারিদিকে রব ওঠে। অন্য ফুটবল টুর্নামেন্ট নিয়ে সাধারণত এমন্িট লক্ষ্য করা যায় না। তবে এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা কোপা আমেরিকা কাপ। মাত্র ১০ দেশের মহাদেশীয় এই আসর এখন বিশ্বকাপের মতোই উজ্জ্বল। এখানে আমন্ত্রিত হয়ে খেলে থাকে বাইরের মহাদেশের দু’টি দেশ। লাল-সবুজের এই দেশ যে বছর ইতিহাসে নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখেছিল তার আগের ৪টি বিশ্বকাপের তিনটিরই চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিল। যে কারণে ১৯৭০-৮০ দশকে বাংলাদেশের ক্লাস ফাইভের বইতে পেলেসহ ব্রাজিলের সাফল্যের স্তুতিগাঁথা নিয়ে একটি গল্প ছিল। রূপকথার মতো সাফল্যের বর্ণনা শুনে তখন থেকেই এদেশের মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেয় পেলে, ভাভা, গ্যারিঞ্চাদের ব্রাজিল। সেই ধারাটা এখনও বিদ্যমান। কেননা ফুটবল সাফল্যে তখনকার চেয়ে এখন আরও দুরন্ত, দুর্বার ব্রাজিল। যার প্রমাণ তারা রেখেছে ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা তিনটি বিশ্বকাপের প্রতিটিতেই ফাইনাল খেলে এবং দু’টিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে। শুধু এই সাফল্যই নয়, মর্যাদার দিক দিয়ে বিশ্বকাপের পরে স্থান পাওয়া কোপা আমেরিকা কাপ ও কনফেডারেশন্স কাপেও অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে ফুটবলের দেশ ব্রাজিল। গত কয়েক বছর সাফল্যহীন থাকা ব্রাজিলের এবার ঘরের মাঠে নিজেদের মেলে ধরার চ্যালেঞ্জ।
×