ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

আইনী প্রক্রিয়ায় শীঘ্রই মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

প্রকাশিত: ১০:২২, ৬ মে ২০১৯

 আইনী প্রক্রিয়ায় শীঘ্রই মুক্তি পাচ্ছেন না খালেদা জিয়া

বিকাশ দত্ত ॥ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া আইনী জটিলতা ও আইনজীবীদের মামলা পরিচালনায় সমন্বয়হীনতার কারণে শীঘ্রই মুক্তি পাচ্ছেন না। পাশাপাশি দলীয় কোন্দলও অন্যতম কারণ। মুক্তি পেতে হলে সব মামলায়ই তাকে জামিন পেতে হবে। তাহলেই তিনি মুক্তি পাবেন। আপাতদৃষ্টিতে সহজে মুক্তি পাওয়ার পথ দেখা যাচ্ছে না। তার বিরুদ্ধে যেসব মামলা হয়েছে তার সবই আইনীভাবে মোকাবেলা করতে হবে। সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদসহ অন্যান্য আইনজীবী এমনই অভিমত প্রদান করেছেন। অন্যদিকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বলেছেন, সরকারের হস্তক্ষেপেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন না। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় হওয়ার পর আরও ৩৬টি মামলা রয়েছে। বিচারিক আদালতে নাইকো, গ্যাটকো ও বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা তিনটির বিচার কাজ চলছে। এ ছাড়া আরও ১১টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। আর হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত রয়েছে ২৩ মামলা। এদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিম্ন আদালত ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের দ-ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া আপীল করেছেন। জামিনে মুক্তি পেতে হলে অবশ্যই এ দুটি মামলায় তাকে জামিন পেতে হবে। যদিও অন্য ৩৫টি মামলায় জামিনে রয়েছেন। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল দুর্নীতি মামলায় আপীল ও হাইকোর্ট থেকে জামিন পেলেই খালেদা জিয়ার মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহম্মেদ বলেন, সব মামলায় খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে। সহজে মুক্তি পাওয়ার পথ দেখছি না। মুক্তি পেতে হলে কয়েকটি আইনী ধাপ পেরুতে হবে। যেসব মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা আছে সেগুলো থেকে জামিনের আবেদন করতে হবে। কারাগার থেকে ওকালতনামা স্বাক্ষরের পর সংশ্লিষ্ট আদালতে জামিনের আবেদন করতে হবে। সেখানে জামিনের আবেদন নামঞ্জুর হলে পুনরায় হাইকোর্টে আসতে হবে। তারপরও আপীল বিভাগ রয়েছে। কাজেই শীঘ্রই তিনি মুক্তি পাচ্ছেন না। সুপ্রীমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মোমতাজ উদ্দিন মেহেদী জনকণ্ঠকে বলেন, খালেদা শীঘ্রই মুক্তি পাবেন বলে মনে হচ্ছে না। মুক্তি পাওয়ার কোন কারণ আছে বলে মনে করি না। তাকে (খালেদা জিয়া) সব মামলায়ই মোকাবেলা করতে হবে। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি, রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ভুয়া জন্মদিনসহ পাহাড়সম মামলা রয়েছে। এগুলোকে আইনীভাবে মোকাবেলা করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা আছে বলে আমি মনে করি। তাছাড়া বিএনপির আন্ত কোন্দলও এর অন্যতম কারণ। এদিকে আইনজীবী বলেছেন, সরকারের হস্তক্ষেপে খালেদা জিয়া মুক্তি পাননি। আইন নিজস্ব গতিতে চলছে না এবং সরকার যদি হস্তক্ষেপ না করে তা হলে এই দুটি মামলায় জামিন হলে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসবেন। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী বলেছেন, খালেদা জিয়ার আইনজীবী বাজে কথা বলেছেন। মামলা দুদকের। এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ করার কিছু নেই। দুই মাসের মধ্যে জিয়া চ্যারিটেবল মামলার নথি নিম্ন আদালত থেকে আসবে। এরপর মেনশন করবে। আমরা প্রস্তুত। জামিনের আইনী মোকাবেলায় প্রস্তুত। গত ১৪ মার্চ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালাস চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল করেছেন খালেদা জিয়া। এ মামলায় হাইকোর্ট তাকে ১০ বছরের কারাদ- দিয়েছে। আপীল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তিনি জানান, আবেদনে খালাসের পাশাপাশি খালেদা জিয়ার জামিনও চাওয়া হয়েছে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে ১০ বছর কারাদন্ড দেন বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ। একইসঙ্গে ৫ বছরের দন্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আপীল খারিজ করে দেয় আদালত। এ ছাড়া ১০ বছরের দন্ড থেকে খালাস চেয়ে মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে কাজী কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদের আপীল খারিজ করে আদালত। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদন্ড দেন রাজধানীর বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী পঞ্চম বিশেষ জজ আদালত। অন্যদিকে ৩০ এপ্রিল জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাত বছরের কারাদন্ড থেকে খালাস চেয়ে খালেদা জিয়ার আপীল শুনানির জন্য গ্রহণ করেছে হাইকোর্ট। একই সঙ্গে নিম্ন আদালতের দেয়া ১০ লাখ টাকা যে অর্থদন্ড দিয়েছিল তা স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি নিম্ন আদালত থেকে এই মামলার নথি তলব করা হয়েছে। বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ২০১৮ সালের ২৬ নবেম্বর নিম্ন আদালতের সাত বছরের সাজার বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপীল আবেদনটি জমা দেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। খালেদা জিয়ার আইনজীবী প্যানেলের অন্যতম সদস্য এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, মুক্তির বিষয়টি সরকারের সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে। আমরা একটায় জামিন নেবো, সরকার এর বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে যাবে, আবার নতুন মামলা দিবে। তাদের কাজই হলো সময়ক্ষেপণ করা। খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জনকণ্ঠকে বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা ছাড়াও আরও ৩৬টি মামলা রয়েছে। সম্প্রতি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। যা জামিন যোগ্য। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া গত বছরের ১২ মার্চ মুক্তি পেতে পারতেন। হাইকোর্ট থেকে জামিন দেয়া হয়েছিল। সরকারের হস্তক্ষেপে মুক্তি পাননি। আইন নিজস্ব গতিতে চললে এবং সরকার যদি কোনরূপ হস্তক্ষেপ না করে তা হলে খালেদা জিয়ার এই দুটি মামলায় (জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা) জামিন হলে জেলখানা থেকে বেরিয়ে আসবেন। দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান জনকণ্ঠকে বলেছেন, এটা বাজে কথা। মামলা দুদকের। সরকারের এখানে করার কিছুই নেই। দুদকের মামলার সঙ্গে সরকারের কোন সম্পর্ক নেই। আইন তার নিজস্ব গতিতেই চলছে। দুদক স্বাধীন ও নিরপেক্ষ। তিনি আরও বলেন জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার কোন তারিখ হয়নি। ২ মাসের মধ্যে নথি নিম্ন আদালত থেকে আসবে। তারপর মেনশন করবে। আমরা মামলা লড়াইয়ে প্রস্তুত। জামিনে আইনী লড়াইয়ে প্রস্তুত। সে যেই হোক না কেন। আইনী মোকাবেলায় বিন্দুমাত্র ছাড় দেয়া হবে না। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কারাবন্দী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ৩৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে এক-এগারোর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে চারটি এবং আওয়ামী লীগ সরকারের গত দশ বছরে দায়ের হয় ৩৪টি মামলা। তবে কয়েকটি ছাড়া সব মামলাতেই জামিনে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন। এখন মুক্তির জন্য জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় জামিন নিতে হবে খালেদা জিয়াকে। অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত খালেদা জিয়াকে ৫ বছর সাজা দিয়েছিলেন। তবে হাইকোর্টে খালাস চেয়ে আবেদন করলে তার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করা হয়। এরপর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে আবেদন করা হয়, সেইসঙ্গে জামিনও চাওয়া হয় এ মামলায়। আর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালত ৭ বছরের সাজা দিয়েছেন খালেদা জিয়াকে। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধেু এ মামলায়। এর বাইরে সম্প্রতি কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন হয়েছে খালেদা জিয়ার। যদিও এর বিরুদ্ধে আপীল বিভাগে গিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ। আর দুটি মামলায় সম্প্রতি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন বিচারিক আদালত। নাইকো দুর্নীতি মামলা ॥ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য ৬ মে দিন ধার্য করেছে আদালত। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত সাবেক কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ শেখ হাফিজুর রহমান এই দিন ধার্য করেন। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে তিনি বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন থাকায় এদিন আদালতে উপস্থিত করা হয়নি। এ জন্য বিচারক শুনানি মুলতবি রেখে ৬ মে নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতি মামলা ॥ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় চার্জ শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ১৬ মে ধার্য করেছে আদালত। এ মামলায় চার্জ শুনানির দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। এজন্য তার পক্ষে আইনজীবীরা শুনানি পেছানোর আবেদন করেন। শুনানিতে তারা বলেন, কোন আসামির অনুপস্থিতিতে চার্জ শুনানি আইনসম্মত হয় না। মামলার আসামি খালেদা জিয়ার অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা চার্জ শুনানি পেছানোর আবেদন করছি। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে পুরান ঢাকার বকশীবাজারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক এ এইচ এম রুহুল ইমরান সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে চার্জ শুনানির নতুন তারিখ ১৬ মে ধার্য করে। গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা ॥ গ্যাটকো দুর্নীতি মামলায় বেগম জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য আগামী ১৪ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত। ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার তিন নম্বর বিশেষ জজ সৈয়দ দিলজার হোসেন এ দিন ধার্য করেন। গত ২০০৭ সালের ২ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক মোঃ গোলাম শাহরিয়ার ১৩ জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ২০০৮ সালের ১৩ মে মামলাটি তদন্ত করে জোট সরকারের প্রভাবশালী ৯ জন সাবেক মন্ত্রী ও উপমন্ত্রীসহ মোট ২৪ জনের বিরুদ্ধে দুদকের উপপরিচালক মোঃ জহিরুল হুদা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৪ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী এম সাইফুর রহমান, আব্দুল মান্নান ভুঁইয়া, সাবেক মন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রাহমান কোকো, এমকে আনোয়ার, সাবেক মন্ত্রী এম শামছুল ইসলাম, বন্দরের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষক কর্মকর্তা আহমেদ আবুল কাশেমের মৃত্যুর পর এ মামলায় বর্তমান আসামির সংখ্যা ১৭ জন। এদিকে ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা আরও ১৪টি মামলার কার্যক্রম এখন থেকে বকশীবাজারের সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা ও সাবেক ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সংলগ্ন মাঠে নির্মিত অস্থায়ী আদালতে স্থানাস্তর করা হয়েছে। এখন থেকে এ মামলাগুলো সেখানেই চলবে। মামলাগুলো হলো দারুস সালামের নাশকতার আট মামলা, গ্যাটকো দুর্নীতি মামলা, নাইকো দুর্নীতি মামলা, বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা, যাত্রাবাড়ী থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা ও মানহানির দুই মামলা । এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন মন্ত্রণালয়। ১৪টি মামলার মধ্যে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ৯টি, বিশেষ জজ আদালতের তিনটি ও ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের দুইটি মামলার বিচারকাজ বকশীবাজারের অস্থায়ী আদালতে চলবে। অন্য মামলাগুলোর মধ্যে মূলত রাষ্ট্রদ্রোহ, হত্যা, ইতিহাস বিকৃতি, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কটূক্তি, ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে এসব মামলা হয়। ২৫টি মামলা হয়েছে ঢাকায়। কুমিল্লায় তিনটি এবং পঞ্চগড় ও নড়াইলে একটি করে মামলা হয়েছে। নাশকতা ও বাসে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যার অভিযোগে কুমিল্লার আদালতে থাকা দুটি মামলার। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মানহানির অভিযোগে করা একটি মামলা বর্তমানে স্থগিত। নড়াইলে মানহানির অভিযোগে করা মামলা রয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মানচিত্র ও জাতীয় পতাকাকে অবমাননার অভিযোগে ঢাকার আদালতে ২০১৬ সালের ৩ নবেম্বর মানহানির মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনের অভিযোগে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট সাংবাদিক গাজী জহিরুল ইসলাম মামলা করেন। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপিসহ ২০ দলের ডাকা হরতাল-অবরোধের সময় বাসে আগুন, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, মানুষ হত্যাসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনায় ঢাকায় করা ১০টি মামলায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
×