ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

পুলিশের তাণ্ডবের প্রতিবাদে থানায় বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ৫ মে ২০১৯

পুলিশের তাণ্ডবের প্রতিবাদে থানায় বিক্ষোভ

সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ৪ মে ॥ উপজেলায় পুলিশের বিরুদ্ধে একটি গ্রামে প্রবেশ করে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ তোলে এলাকাবাসী। শুক্রবার গভীর রাতে গাংগাইল ইউনিয়নের পংকরহাটি গ্রামে এই ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ওই গ্রামের ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ শনিবার বৃষ্টিতে ভিজে নান্দাইল থানায় এসে বিক্ষোভ মিছিল করে। এ সময় ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখা হয়। পংকরহাটি গ্রামের ২০-২৫ বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে পংকরহাটি গ্রামে প্রবেশ করে নান্দাইল থানা পুলিশ। এ সময় গ্রামের প্রায় ৪০টি বাড়িতে প্রবেশ করে ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করে মোবাইল ও নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এতে বাধা দিতে গেলে পুলিশ নারী-পুরুষ ও শিশুদের মারধর করে। এ সময় ওই গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন (১৫) ও নয়ন মিয়া (১৬) নামে দুই জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এই ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত পংকরহাটি গ্রামের প্রায় ৫ শতাধিক নারী-পুরুষ নান্দাইল থানার সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় বিভোকারীদের মধ্যে ৫ জন অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাদের নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারা ঘণ্টব্যাপী ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। পংকরহাটি গ্রামের গৃহবধূ হারেছা বেগম (৪৫) বলেন, শুক্রবার রাতে হঠাৎ তার ঘরের দরজায় পুলিশ লাথি দিয়ে খুলে ফেলে। এ সময় ঘরে ঢুকেই আসবাবপত্র তছনছ করে। এক পর্যায়ে তাকে মারধর করে এবং মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নেয়। বৃদ্ধা হালেমা বেগম (৭০) বলেন, পুলিশ তার ঘরে ঢুকে তাকে লাথি মারে। তখন তিনি মাটিতে পড়ে যান। ইউসুফ মিয়া (৪৩) বলেন, পুলিশ তাদের গ্রামে ঢুকে মারধর করে তার মোবাইল ফোন ও টাকা পয়সা নিয়ে যায়। এ কথা বলতে গিয়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তখন সেখানে উপস্থিত অন্যরা তাকে অটোবাইকে করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। গাংগাইল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আশরাফুজ্জামান খোকন বলেন, পুলিশের একটি দল রাতে আসামি ধরার জন্য গ্রামের নিরিহ মানুষের উপর যে তা-ব চালিয়েছে সেটি খুবই ন্যাক্কারজনক। গ্রামবাসীর উপর পুলিশ এভাবে তা-ব চালাতে এর আগে দেখিনি। নান্দাইল উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান হাসান মাহমুদ জুয়েল বলেন, মহাসড়ক অবরোধ করে গ্রামের লোকজন বিক্ষোভ করছে শুনে থানায় ছুটে আসি। এ সময় ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি সিটি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আগামী ৬ এপ্রিল বিষয়টি নিয়ে নান্দাইল থানায় বসার আশ্বাস দেন। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ অস্বীকার করে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিয়া বলেন, পংকরহাটি গ্রামে আসামি ধরার জন্য থানা থেকে পুলিশ গিয়েছিল। তখন গ্রামের লোকজন আসামি ছিনিয়ে নেয়ার জন্য পুলিশকে বাধা দেয়। তিনি দাবি করেন পুলিশ কোন মোবাইল বা অর্থ ছিনিয়ে আনেনি।
×