ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

৪৮ বছর পর ফ্রেঞ্চ কাপের চ্যাম্পিয়ন রেনেস, বড় শাস্তি হতে পারে নেইমার-এমবাপের!

রাজত্ব হারাল পিএসজি

প্রকাশিত: ০৯:২৯, ২৯ এপ্রিল ২০১৯

 রাজত্ব হারাল পিএসজি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইতিহাস গড়ল রেনেস। ৪৮ বছর পর ফ্রেঞ্চ কাপের প্রথম শিরোপা জয়ের স্বাদ পেল তারা। শনিবার প্যারিস সেইন্ট জার্মেইকে (পিএসজি) টাইব্রেকারে পরাজিত করে অবিস্মরণীয় এই কীর্তি গড়ল রেনেস। অন্যদিকে দীর্ঘদিন পর ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার নেইমারের ফেরাটাকে স্মরণীয় করে রাখতে পারলো না প্যারিস জায়ান্টরা। ফ্রেঞ্চ কাপের ফাইনালে রেনেসের কাছে পেনাল্টিতে ৬-৫ গোলে হেরে টুর্নামেন্টের রাজত্ব হারায় থমাস টাচেলের দল। অতিরিক্ত সময়ে ম্যাচটি ২-২ গোলে অমীমাংসিত ছিল। কিন্তু ১১৮ মিনিটে কিলিয়ান এমবাপের লালকার্ডই যেন দুঃস্বপ্ন হয়ে আসে পিএসজির। অথচ কি দুর্দান্তই না শুরু করেছিল প্যারিস জায়ান্টরা। টানা চতুর্থ শিরোপা জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নামা পিএসজি যে ম্যাচের ২১ মিনিটেই ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। দানি আলভেজ ও নেইমারের গোলে শুরুতেই দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার কারণে টানা পঞ্চম শিরোপা জেতাটাকে কেবল সময়ের ব্যাপার বলেই মনে করছিলেন অনেকে। কিন্তু পিছিয়ে পড়েও দমে যায়নি রেনেস। দুর্দান্তভাবে ফিরে এসে পিএসজিকে শিরোপা বঞ্চিত করে রেনেস। প্রথমার্ধের শেষের দিকে প্রিসনেল কিমপেমবের আত্মঘাতী গোলে ম্যাচে ফেরার অনুপ্রেরণা পায় রেনেস। দ্বিতীয়ার্ধের ৬৬ মিনিটে এডসন মেক্সার গোলে সমতায় ফিরে রেনে। এরপরের সময়টাতে আর কোন গোলের দেখা পায়নি কেউ। ফলে ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও ভাগ্য বদল হয়নি কোন দলের। যে কারণে ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। পেনাল্টি ভাগ্যেই ৬-৫ ব্যবধানে হেরে ফ্রেঞ্চ কাপের রাজত্ব হারায় পিএসজি। রেনেসের বিপক্ষে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি কিলিয়ান এমবাপে। তার ওপর অতিরিক্ত সময়ে ডামিয়েন ডা সিলভাকে বাজেভাবে ট্যাকেলের অপরাধে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন তিনি। যে কারণে মাঠের বাইরে চলে যান পিএসজির এই তরুণ স্ট্রাইকার। রেনে ডিফেন্ডারকে হাঁটু দিয়ে আঘাত করার কারণে এমবাপেকে হয়তো কঠিন শাস্তির মুখেও পড়তে হতে পারে। স্টাডে ডি ফ্রান্সে শ্যূটআউটে পিএসজির বদলি খেলোয়াড় ক্রিস্টোফার এনকুনকু সাডেন ডেথে নিজের স্পট কিকটি বারের ওপর দিয়ে বাইরে পাঠিয়ে দিলে রেনের শিরোপা নিশ্চিত হয়। প্রায় অর্ধশতক বছর পর রেনেসের জন্য এই শিরোপা জয়ের উৎসবটি ছিল সত্যিকার অর্থেই বিশেষ কিছু। ম্যাচ শেষে তাই দারুণ খুশি তারা। ১৯৭১ সালের ফ্রেঞ্চ কাপের পর এই প্রথম শিরোপা জেতার কৃতিত্ব দেখালো রেনেস। সেই সঙ্গে আগামী মৌসুমে আবারও ইউরোপা লীগে ফিরে এলো দলটি। রেনেসের কোচ জুলিয়েন স্টিফেন বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ যাবতই আমাদের মধ্যে একটি বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে, ক্লাবের জন্য ঐতিহাসিক কিছু অর্জন করতেই হবে।’ ফ্রেঞ্চ কাপের ফাইনাল ম্যাচটা নেইমারের জন্য ছিল আলাদা গুরুত্বপূর্ণ। কেননা এই ম্যাচের মাধ্যমে তিনমাস পর পায়ের ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেন তিনি। প্রথমার্ধের ২১ মিনিটে এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়ার সহায়তায় নেইমারের গোলেই ব্যবধান দ্বিগুণ করেছিল পিএসজি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়েই মাঠ ছাড়তে হলো তাকে। শুধু তাই নয়, ম্যাচের শেষে তো বেসামাল হয়ে পড়েন নেইমার। ম্যাচ শেষে রানার্সআপ মেডেল নেয়ার জন্য গ্যালারির দর্শকদের মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলেন পিএসজির খেলোয়াড়রা। আশপাশের দর্শকরা প্রিয় খেলোয়াড়দের ছবি তুলছেন, ভিডিও করছেন। নেইমারের বিষয়টা পছন্দ হয়নি। এক ভক্তের হাত থেকে ফোন কেড়ে নিতে চাইলেন তিনি। শুধু তাই নয়, ফোন না নিতে পেরে তার দিকে ঘুষি মারতে যান নেইমার। পরে পিএসজির অন্য খেলোয়াড়রা তাকে ধরাধরি করে ওপরে নিয়ে যান। নেইমারের এই লজ্জাজনক মুহূর্ত মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় ধারণ করেন বেশ কয়েকজন দর্শক। তারপর যথারীতি সেই ভিডিও সোশ্যাল সাইটে ভাইরাল হয়ে যায়। এখনও জানা যায়নি সেই ভক্ত নেইমারকে উস্কানিমূলক কিছু বলেছিলেন কি না। দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়েছিল, তা ঠিকই বোঝা যাচ্ছে। এখন দর্শকের দিকে তেড়ে যাওয়ার জন্য নেইমারের কি শাস্তি হবে তা সময়ই বলে দেবে। ম্যাচ শেষে নেইমার বলেন, ‘আমি খুবই হতাশ। আমরা মোটেই প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। কিন্তু সে জন্য এখন কান্নার কোন কারণ নেই, এখন আর কিছুই করার নেই।’ হারের পর ক্লাবটির কোচ থমাস টাচেল বলেন, ‘এমবাপে তার পেশিতে হাল্কা ইনজুরি পেয়েছিল। যে কারণে পুরো অনুশীলনে যোগ দেননি।
×