ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তুরাগে শুধুই উচ্ছেদ, দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই

প্রকাশিত: ১০:৫২, ১৩ এপ্রিল ২০১৯

  তুরাগে শুধুই উচ্ছেদ, দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেই

হাসান ইমাম সাগর ॥ তুরাগ নদে শুধুই উচ্ছেদ। দখলদারদের বিরুদ্ধে নেই কোন দৃশ্যমান শাস্তিযোগ্য ব্যবস্থা। শাস্তির আওতায়ও আনা হচ্ছে না কাউকে। চিহ্নিত হচ্ছে না ভূমিদস্যুরা। নেয়া হয় না স্থায়ী কোন সমাধান। এতে দখলবাজদের চক্র আড়ালেই থেকে যাচ্ছে। দখলের পর দখল হয় পড়ে থাকা সরকারী খালি জায়গা। চলমান অভিযানে এমন দুই একটা প্রকল্প, স্থাপনা ভেঙ্গে দিলে কিছু আসে যায় না ওই চক্রের। লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াফত করলেও কোন মাথা ব্যথা নেই। ফের দখল করতে সর্বদা সচেষ্ট থাকে চক্রটি। বিধায় উচ্ছেদের পর ফের দখল হওয়ার সুযোগ বা সম্ভাবনা দুটোই থেকে যায় এবং এতে ভূমিদস্যু বা দখলবাজদের মনে এতটুকু ভিতির সঞ্চার হয় না বলে মনে করছেন বিভিন্ন মহল। বর্তমান মিরপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় চলছে বিআইডব্লিটিএর উচ্ছেদ অভিযান। এই এলাকায় অবৈধ স্থপনার সংখ্যা কম। সামান্য কিছু বাড়ি ঘর, দোকানপাট থাকলেও অধিকাংশ জায়গা বেদখল করেছে বিভিন্ন কোম্পানি, গ্রুপ বা প্রতিষ্ঠান। অবৈধ বালুর গদিও আছে অসংখ্য। এসব বালুর গদি নিলামে বিক্রি করে অপসারণ করছে বিআইডব্লিউটিএ। কিন্তু ফের বেদখল হবে না এমন সংশয় প্রকাশ করেছে স্থানীয় সাধারণ জনগণ। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে বিআইডব্লিটিএর উচ্ছেদ অভিযান পরিদর্শনকালে আশপাশের জনগণ এবং স্থানীয় জনগণের সঙ্গে কথা বলে এ সব বিষয় উঠে আসে। সরেজমিনে দেখা যায়, সুন্দরবন অটোমেটিকস ব্রিক্স লিমিটেডের দুই তলা একটি ভবন ভাঙ্গা হচ্ছে। দুইটি এক্সাভেটর ভবনটি ভাঙ্গছে। পাশেই স্থানীয় কিছু লোকজন শোরগোল করছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিআইডব্লিটিএর নির্দেশে শাহবুদ্দিন নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে অবৈধভাবে ভরাট করা জমির মালিক হিসেবে ধরা হয়েছে। কিছু সময় পর তাকে ছেড়েও দেয়া হয়। এভাবে অনেককেই ছেড়ে দিয়েছে বিআইডব্লিটিএ। তারই পাশে সাক্ষাতকার দিচ্ছে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তা আরিফ উদ্দীন। এ সময় তিনি বলেন, এই ভবনটি অত্যন্ত মজবুত করে করা হয়েছে। আমরা গতবছর একবার ভেঙ্গে দিয়েছি। এটা আবার নদীর মধ্যে সরে এসেছে। এটা ভাঙতে আমাদের দুইটি এক্সাভেটর বিকল হয়ে যায়। মেরামত শেষে পুনরায় কাজ শুরু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবারের অভিযানে মোট ১৯ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় সাড়ে তিন একর জমি। এছাড়া ৪ বালুর গদি নিলামে তোলা হয়। বিক্রি হয় ৪ লাখ দুই হাজার টাকা। এদিকে সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের একটি প্রকল্পের কিছু জায়গা নদীর সমীনায় পড়েছে। উচ্ছেদ অভিযানে এটি ছেড়ে দেয়া হয়। জানতে চাইলে বিআইডব্লিটিএর যুগ্ম পরিচালক কেএম আরিফ উদ্দীন দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদফতর থেকে একটি নির্দেশনা এসেছে। সেখানে উল্লেখ আছে, সরকারী কাজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকায় ওই স্থাপনাটি কিছু দিনের জন্য উচ্ছেদ থেকে বিরত রাখা হচ্ছে। তবে কাজ শেষ হলে উচ্ছেদ করে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দেয়া হবে।
×