ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বৃষ্টি হলেই ডিম ছাড়বে মা মাছ

হালদা তীরে রেণু সংগ্রহকারীদের ভিড়

প্রকাশিত: ০৯:৪৫, ৬ এপ্রিল ২০১৯

 হালদা তীরে রেণু সংগ্রহকারীদের ভিড়

চট্টগ্রাম অফিস/হাটহাজারী সংবাদদাতা ॥ কার্প জাতীয় মাছের প্রাকৃতিক প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে ডিম আহরণের প্রস্তুতি চলছে। প্রতি বছরের মতো এবারও আগাম রেণু ফোটানোর জন্য মাটির কোয়া, নৌকা সংস্কার, নেটজাল তৈরিসহ সকল সরঞ্জাম তৈরির কাজের মহাব্যস্ততা। সত্তারঘাট থেকে মদুনাঘাট পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন স্থানে মা-মাছ ধরা ও ইঞ্জিলচালিত নৌকা চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সর্বক্ষণিক মনিটরিং করছে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নেতৃত্বে একটি টিম। এবার মা-মাছ আনাগোনা বেশি বলে জানান নদীপাড়ের অধিবাসীরা। বৃষ্টি হলেই মা-মাছ ডিম ছাড়বে, সে আশায় সময় কাটছে আহরণকারীদের। প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসের দিকে হালদার সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যান্য নদী থেকে বড় বড় রুই জাতীয় মাছগুলো এ নদীতে আসে ডিম ছাড়ার জন্য। এপ্রিল থেকে জুন মাসের মধ্যে অমাবস্যা বা পূর্ণিমার সময় অনুকূল পরিবেশে হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। আবহাওয়া ভাল থাকলে যে কোন মুহূর্তে মা-মাছ ডিম ছাড়বে বলে স্থানীয় রেণু আহরণকারীরা জানিয়েছেন। উনবিংশ শতকের গোড়ার দিকে প্রায় ১০০ বছরে হালদা নদীর এগারটি বাঁক পর্যায়ক্রমে কেটে দেয়া হয়েছে। হালদার ভাটি এলাকায় আটটি, উজান এলাকায় তিনটি বাঁক কেটে দেয়া হয়েছে। এই বাঁকগুলো কেটে দেয়ায় প্রায় ১২৩ কিলোমিটার নদীর দৈর্ঘ্য ৯৮ কিলোমিটারে নেমে এসেছে। হাটহাজারী ও রাউজানের অংশে অক্সবো বাঁকগুলো রুই জাতীয় মাছের প্রজনন ক্ষেত্র। গত কয়েক দিন থেকে হালদা পাড়ে নৌকা সংস্কারের কাজ চলছে। স্থানীয় আহরণকারীরা জানান, এই মৌসুমে প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজারের অধিক ডিম আহরণকারী নৌকা সংস্কারের কাজে এখন ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। রাউজান ও হাটহাজারী মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টি হলে মা-মাছ ডিম ছাড়বে। মৎস্য বিভাগ নদীতে ইঞ্জিনচালিত বোর্ড চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করেছে। গড়দুয়ারা ইউনিয়নের ঘাটকুল এলাকার শাহ আলম ও কামাল উদ্দিনসহ অনেকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানায়, গত কয়েক মাস থেকে জাল, ড্রেজার, বালু উত্তোলন কমিয়ে দেয়ায় এখন নদীতে যথেষ্ট মা-মাছ এসেছে। হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন বলেন, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত হালদায় অভিযান চালিয়ে জাল ও ড্রেজার আটক করেছে। হাটহাজারী উপজেলা মৎস্য অফিসার এ প্রতিবেদককে জানান, অভিযানের পরও থেমে নেই নদীতে নেটজাল বসানো। স্থানীয় ডিম আহরণকারীরা অভিযোগ করে বলেন, এত অভিযানের পরও রাতের আধারে মদুনাঘাট ও হালদার বিভিন্ন এলাকায় কিছু অসাধু মাছ ব্যবসায়ী জাল ফেলে মা-মাছ ধরছে। প্রতি বছরের মতো এ বছর পাঁচ সহস্রাধিক নৌকা ও প্রায় ৭ হাজারের অধিক রেণু আহরণকারী প্রস্তুত রয়েছে।
×