ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপ দল নিয়ে কোহলির ধারণা স্পষ্ট

প্রকাশিত: ১১:৩৪, ১৫ মার্চ ২০১৯

বিশ্বকাপ দল নিয়ে কোহলির ধারণা স্পষ্ট

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুর্দম্য গতিতে হঠাৎ করেই ছন্দপতন, রাশ টেনে দাঁড়াতে হয়েছে বিরাট কোহলিদের। কিছুদিন আগেই অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সফরে প্রতিপক্ষদের হারিয়ে দেশে ফিরেছিল তারা। আর জিততে জিততেই যেন ক্লান্তি ভর করেছিল ভারতীয় ক্রিকেট দলকে। সে জন্য নিজেদের মাঠে এসে শ্রান্ত হয়ে হার দেখেছে তারা। অস্ট্রেলিয়ানরা নানাবিধ সমস্যায় আছে, পাশাপাশি নিজেদের মাঠেও কিছুদিন আগে হেরে গেছে কোহলিদের কাছে। কিন্তু ঠিকই এবার ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছে। ৫ ম্যাচের এ ওয়ানডে সিরিজের মধ্য দিয়ে আগামী মে মাসের শেষদিকে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্বকাপ আসরে দল কেমন হবে সেটাও স্পষ্ট হয়ে গেছে। আর অধিনায়ক কোহলি এমনটাই জানিয়েছেন। ঘরের মাটিতে যে কোন সময়ই সব প্রতিপক্ষের জন্য ভয়ঙ্কর দল ভারত। বিশেষ করে উপমহাদেশের বাইরের দলগুলো কখনই ভারতের মাটিতে সুবিধা করতে পারে না। কিন্তু এবার অস্ট্রেলিয়ার সফরটি যেন অন্যরকমই ছিল। স্টিভেন স্মিথ ও ডেভিড ওয়ার্নারের অনুপস্থিতিতে হারতে হারতে একেবারে কোনঠাসা হয়ে পড়া দলটি স্বাভাবিক নিয়মেই ভারতে এসেও টানা দুই ম্যাচ হারে। কিন্তু এরপর বিস্ময়করভাবে কোহলিদের টানা তিন ম্যাচে পরাস্ত করে ওয়ানডে সিরিজ জিতে নেয় ৩-২ ব্যবধানে। এই সিরিজে স্বাগতিক ভারত আসন্ন বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার কথা মাথায় রেখে সেভাবেই ক্রিকেটারদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলিয়েছে। তবে মূল শক্তির জায়গায় কখনও নড়চড় করেনি তেমন। এরপরও পরাজয়ে কিছুটা শঙ্কার কালো মেঘ কী উঁকি দিয়েছে কোহলিদের নিয়ে? এ বিষয়ে কোহলি কোন অজুহাত না দেখিয়ে বলেন, ‘এই পরাজয়ের পর সাপোর্টি স্টাফরা হতাশ হয়নি এবং ড্রেসিং রুমেও কেউ অস্বস্তিকর এক অবস্থানে পৌঁছেনি। কারণ আমরা জানি আমরা এই তিনটা ম্যাচে আসলে কি করতে চেয়েছি। আর সত্যিকার অর্থে এটাই তো বিশ্বকাপের আগে আমাদের সর্বশেষ ওয়ানডে প্রতিযোগিতা। দল হিসেবে আমরা খুবই সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেই মনে করি নিজেদের। চাপের মুহূর্তে আমাদের চেয়ে এবার অস্ট্রেলিয়া অনেক বেশি স্থিতি দেখিয়েছে।’ কোহলি যেমনটাই বলুন, বিশ্বকাপের আগে শেষ ওয়ানডে সিরিজে ঘরের মাটিতে ভারতের হারটা অনেকে আশঙ্কাজনকভাবেই দেখছেন। দুর্দান্ত একটি দল সারাবিশ্ব জয় করে এসে নিজ দেশে পরাভূত হয়েছে। যেখানে বেশকিছু দুর্বলতা ফুটে উঠেছে। বিশেষ করে মিডলঅর্ডার নিয়ে চিন্তাটা বেশি তৈরি হয়েছে। আর সিরিজ জেতার পথ বের করতে বেশ কয়েকবার একাদশে অদল-বদলও করেছে। তাহলে ভারতের সঠিক একাদশ কোনটি যা বিশ্বকাপে খেলবে সবার আস্থার প্রতীক হয়ে? এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘সমন্বয়ের দিক থেকে দল হিসেবে আমরা আসলে কন্ডিশনকেন্দ্রিক খেলতে নামি। সর্বোচ্চ একটি পরিবর্তন দেখতে পাবেন কন্ডিশনের বিবেচনায়। কিন্তু এছাড়া যে একাদশ নিয়ে আমরা খেলব বা খেলতে চাই সেটা আমাদের কাছে পুরোপুরি স্পষ্ট।’ কিন্তু এই সিরিজে শিখর ধাওয়ান, রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, কেদার যাদব ও বিজয় শঙ্কর পাঁচ ম্যাচেই খেলেছেন। কিন্তু মহেন্দ্র সিং ধোনি শেষ দুই ম্যাচ খেলেননি, ঋষভ পন্থ খেলেছেন। লোকেশ রাহুল এক ম্যাচ ও আম্বাতি রাইডু তিন ম্যাচ খেলেছেন। বোলিংয়েও হয়েছে সফল! এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘শেষ তিন ম্যাচে যারা বেঞ্চে বসে ছিল তাদের সুযোগ দেয়া হয়েছে খেলার। তারা কেমন করে সেটা দেখার জন্য আসলে এই তিনটি ম্যাচের বাইরে আর কোথাও পরীক্ষার সুযোগ ছিল না। আর এটা কোনভাবেই হারের অজুহাত হতে পারে না। কারণ আমরা নিজেদের খেলার ধরন উঁচুতে নিয়ে যেতে চাইছি কিংবা এমনটা আশা করছি। আর সে কারণে এই পরিবর্তনগুলো কখনই হারের অজুহাত হতে পারে না। সে জন্যই আমরা যাদের মনে করেছি যে এই পর্যায়ে খেলার উপযুক্ত তাদেরই এই তিন ম্যাচে সুযোগ দিয়েছি আমরা।’ ভারতীয় ক্রিকেটারদের পরবর্তী মিশন হচ্ছে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (আইপিএল)। ২৩ মার্চ থেকে শুরু হতে যাওয়া এই আসরটি বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটারদের ওপর বাড়তি কাজের চাপ এবং ক্লান্তিতে ফেলবে। দীর্ঘ আইপিএল শেষ করে বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়াটা কোহলিদের জন্য কতখানি সুবিধাজনক হবে সেটাও এখন প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে কোহলি বলেন, ‘আমরা সব ফ্র্যাঞ্চাইজিকে খেলোয়াড়দের খুব ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য বলে দিয়েছি। আর সব ক্রিকেটারকে ফিজিও প্যাট্রিক ফারহার্টের সঙ্গে সার্বিক যোগাযোগ রাখার নির্দেশনা রয়েছে। সবাই নিশ্চয় এ বিষয়ে অনেক তৎপর ও মনোযোগী থাকবে। আমি এটার নিশ্চয়তা দিতে পারি যে বিশ্বকাপ প্রতি চার বছর পর আসে এবং আমরা প্রতি বছরই আইপিএল খেলি। এটা নিয়ে ভাবতে হবে ক্রিকেটারদের। তবে এটা বলব না যে আইপিএলের প্রতি যথেষ্ট নিবেদন থাকবে না আমাদের। কিন্তু এক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা সপ্রতিভ আচরণ দেখাতে হবে। সামঞ্জস্য রেখে আমাদের কাজ করে যেতে হবে এবং বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।’
×