ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মশালায় তথ্যমন্ত্রী

বিএনপির জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

প্রকাশিত: ১০:৫৫, ৭ মার্চ ২০১৯

বিএনপির জন্য জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ বিএনপির কারণে জামায়াতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, বিএনপির মতো একটি বড় রাজনৈতিক দল যখন জামায়াতের আশ্রয়-প্রশ্রয় দাতা হয়, জোটে যখন জামায়াত থাকে তখন তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে গিয়ে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয় এবং প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। আশা করি, ইউএস কংগ্রেসের এই প্রস্তাবের পর বিএনপি জামাতকে ছেড়ে দেবে এবং এতদিন জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক রাখার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাইবে। বুধবার অনুন্ধানী সাংবাদিকতায় তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এসব কথা বলেন। গণমাধ্যমে জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক, প্রধান প্রতিবেদকদের জন্য রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তথ্য কমিশন এ কর্মশালার আয়োজন করে। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ইউএস কংগ্রেস বিএনপিকে আহ্বান জানিয়েছে যাতে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। আর সরকারকে ব্যবস্থা নিতে বলেছে। আমরা এতদিন ধরে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপিকে এটিই বলে আসছি। সেটিই বলছে ইউএস কংগ্রেস। তিনি বলেন, জামায়াতের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতা হচ্ছে বিএনপি। জামায়াতের সঙ্গে জোট করে বিএনপি নির্বাচন করেছে, সরকার গঠন করেছে, এখনও ২২ দলীয় জোটের মধ্যে আছে। সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই যুদ্ধাপরাধীদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কোন কোন রায় কার্যকর হয়েছে। জামায়াত বাতিল করার বিষয়টি আদালতে রয়েছে। কিন্ত বিএনপির কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য সচিব আবদুল মালেক, তথ্য কমিশনার সুরাইয়া বেগম, জিটিভি ও সারাবাংলা ডট নেটের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইসতিয়াক রেজা, ইটিভির প্রধান সম্পাদক ও সিইও মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, নেপাল চন্দ্র সরকার, সাবেক প্রধান তথ্য কমিশনার গোলাম রহমান। পরবর্তীতে আলোচনায় অংশ নেন দৈনিক সমকালের সহযোগী সম্পাদক অজয় দাশ গুপ্ত, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোঃ সাইফুল আলম চৌধুরী। খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, উনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং একটি বড় রাজনৈতিক দলের চেয়ারপার্সন। তাকে পাকভারত উপমহাদেশের সমস্ত রীতি ভেঙ্গে আদালতে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তার পছন্দমতো গৃহপরিচারিকা দেয়া হয়েছে। এটা তো ব্রিটিশ আমল, পাকিস্তান কিংবা স্বাধীন বাংলাদেশে কখনও হয়নি। এমনকি রাজবন্দীদের ক্ষেত্রেও কখনও হয়নি। খালেদা জিয়া তো রাজবন্দী নন। তারপরও তার সর্বক্ষণিক চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তার এবং একজন নার্স রয়েছে। এই অসুখ তার নতুন নয়, এই অসুখ নিয়েই তিনি প্রধানমন্ত্রিত্ব করেছেন, বিরোধীদলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং বিএনপির চেয়ারপার্সনের দায়িত্ব পালন করেছেন। তারপরও একজন ফিজিওথেরাপিস্টও দেয়া হয়েছে। আমাদের সাধারণ সম্পাদক অসুস্থ হওয়ায় তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিক্যালে নেয়া হয়েছিল। সেখানকার চিকিৎসা বিশ্বমানের। সেখানেই খালেদার চিকিৎসা হচ্ছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, গণমাধ্যমের বিশেষ করে টিভি সাংবাদিকদের সুরক্ষা দিতে আমি প্রথম দিন থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের দেশে টিভিগুলোর আয়-ব্যয়ের মধ্যে ফারাক আছে। তাদের আয় বাড়ানো হবে। বিদেশে যাতে বিজ্ঞাপন যেতে না পারে সেজন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, হুট করে কাউকে কিছু না বলে কোন কিছু বন্ধ করে দেয়া সমীচীন নয়। কেননা, সেখানে যারা কাজ করে তাদের পরিবার আছে, রুটি-রুজির বিষয় আছে। এজন্য বন্ধ করার আগে সময় দেয়া উচিত। কর্মশালায় মন্ত্রী বলেন, জনগণের ক্ষমতায়নে ২০০৯ সালে সরকার প্রথম অধিবেশনে তথ্য কমিশন গঠন করতে তথ্য অধিকার আইন পাস করে। এরই ধারাবাহিকতায় তথ্য কমিশন অনেক শক্তিশালী হয়েছে। তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশের যে স্বপ্ন সর্বক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন করতে অনলাইন ট্র্যাকিং সিস্টেম একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এজন্য তিনি তথ্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানান। প্রধান তথ্য কমিশনার মরতুজা আহমদ বলেন, কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা প্রতিষ্ঠায়, ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে, প্রতিটি জনগণের অর্থের সদ্ব্যবহার নিশ্চিতকরণে, অসৎ ও গোপন তৎপরতা ফাঁস করে সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকগণ তথ্য অধিকার আইনের ব্যবহার করতে পারেন। বিশুদ্ধ তথ্য সংবলিত গভীরতর অনুসন্ধানী প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য অধিকার আইন অত্যন্ত কার্যকর।
×