ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

প্ররোচনার অভিযোগে ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥ স্ত্রী গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৯:৫৪, ২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

 প্ররোচনার অভিযোগে  ৬ জনের বিরুদ্ধে  মামলা ॥ স্ত্রী গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম অফিস ॥ চট্টগ্রামে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে চিকিৎসকের আত্মহত্যার চাঞ্চল্যকর ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। আত্মহননকারী চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের মা জোবাইদা বাদী হয়ে ৬ জনকে আসামি করে চান্দগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এ বিষয়ে ডাক্তার আকাশের স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতু, তার মা, বাবা, বোন ও দুই বয়ফ্রেন্ডের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। এদিকে, বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ নগরীর নন্দনকাননের এক আত্মীয়ের বাসা থেকে তানজিলা মিতুকে গ্রেফতার করে। ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করা অভিযোগের বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। শুক্রবার সকালে দামপাড়া পুলিশ লাইনে এক সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসক আকাশের আত্মহত্যা এবং এ ঘটনায় স্ত্রী মিতুকে গ্রেফতারসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরেন সিএমপির অতিরিক্ত উপকমিশনার (উত্তর) মিজানুর রহমান। তিনি জানান, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিট মিতুকে গ্রেফতার করেছে নন্দনকাননে তার এক খালাত ভাইয়ের বাসা থেকে। শাহ আমানত মাজার এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন সেটটি। ডাক্তার আকাশের ব্যবহৃত সেটটিও জব্দ করা হয়েছে। তদন্তের অংশ হিসেবে মোবাইল ফোনগুলো যাচাই করা হচ্ছে। তিনি জানান, আত্মহননকারী চিকিৎসক তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে যে অভিযোগ এনেছেন এবং যাদের অভিযুক্ত করেছেন তার সবই খতিয়ে দেখা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) মির্জা সায়েম মাহমুদ, সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পাঁচলাইশ) দেবদূত মজুমদার, চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল বাশার ও পরিদর্শক জোবাইর সৈয়দ। মামলা তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আত্মহত্যার নেপথ্যে কারও ইন্ধন রয়েছে কিনা বা স্ত্রী তানজিলা মিতুর বিরুদ্ধে তুলে ধরা অভিযোগের সত্যতা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই মিতু বেশকিছু অভিযোগের কথা স্বীকার করেছে। তবে কিছু বিষয় এড়িয়ে যাচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদে এটা পরিষ্কার যে, আত্মহত্যার পূর্বে ওই রাতেই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। রাত ৪টার দিকে মিতুর বাবা এসে তাকে নিয়ে যান। এর পর ফেসবুকে দুটি স্ট্যাটাস ও কিছু ছবি আপলোড করে আত্মহত্যা করেন ডাক্তার মোস্তফা মোরশেদ আকাশ। চান্দগাঁও থানার ওসি আবুল বাশার জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ডাঃ আকাশের মা জোবাইদা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে আসামি করা হয় আকাশের স্ত্রী তানজিলা মিতু, তার বাবা-মা, বোন ও দুই বয়ফ্রেন্ডকে। এ ছয় আসামির বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগ আনা হয়। আত্মহননকারী ডাক্তার আকাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে কর্মরত ছিলেন। ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে শরীরে বিষ প্রয়োগে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ জানায়, এ পর্যন্ত পাওয়া তথ্যনুযায়ী এই দম্পতির মধ্যে বেশ কলহ ছিল। বিশেষ করে তানজিলা মিতুর বিবাহবহির্ভূত অনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে আকাশের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়াঝাটি হতো। গত ১৩ জানুয়ারি তানজিলা দেশে ফেরার পর তিক্ততা আরও বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য, স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে নিজের ফেসবুক ওয়ালে স্ট্যাটাস দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে আত্মহত্যা করেন তরুণ এই চিকিৎসক।
×