ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বান্দরবানে শিমের বাম্পার ফলন

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে কৃষকের আনন্দে ভাট

প্রকাশিত: ১১:৩৫, ২৯ জানুয়ারি ২০১৯

মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে কৃষকের আনন্দে ভাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান, ২৮ জানুয়ারি ॥ চলতি মৌসুমে বান্দরবানে শীতকালীন সবজি শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। প্রতিদিন পাইকারি ব্যবসায়ীরা বান্দরবানের সবজিভা-ার হিসেবে সুপরিচিত সুয়ালক, মাঝের পাড়া, গোয়ালিখোলা, কদুখোলা, রেইছা, বালাঘাটাসহ বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাক পিকআপ বোঝাই করে শিম দেশের নানাপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। শিমের এমন বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক। কিন্তু মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে আশানুরূপ লাভ থেকে বঞ্চিত হওয়ার শঙ্কায় আছে তারা। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, বান্দবানের মাটি ও আবহাওয়া শিম চাষের জন্য বিশেষ উপযোগী। জমিতে শুধু সাধারণ জৈব সার ব্যবহার করেই শিমের ভালো ফলন পাওয়া যায়। অধিদফতর থেকেও কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের সহায়তা করা হয়। প্রতিবছর কৃষকরা শিম চাষের জন্য ভাদ্র মাস থেকেই জমি তৈরি শুরু করে। আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যেই শিম তোলা শুরু হয়। এ অঞ্চলে ‘সীতাকু-’ ও ‘ইপসা’ জাতের শিমের ফলন বেশি হয়ে থাকে। অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, চলতি মৌসুমে বান্দরবানের সাত জেলায় প্রায় ৬১৫ হেক্টর জমিতে শিম চাষ হয়। গত বছর ৫৫৫ হেক্টর জমিতে শিমের আবাদ থেকে মোট উৎপাদন হয়েছিল ৭ হাজার ৯৫৪ মেট্রিকটন। এ বছর আরও ৬০ হেক্টর বেশিজমিতে শিমের আবাদ করা হয়। শিমের বাম্পার ফলন দেখে কৃষি অধিদফতর ধারণা করছে এবারের উৎপাদন ৯ হাজার মেট্রিক টন ছাড়িয়ে যাবে। রেইচা ও গোয়ালিখোলার একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, স্থানীয় বাজারগুলোতে শিমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রতি কেজি শিম বিক্রি হচ্ছে ৩০-৩৫ টাকা দরে। তবে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার শঙ্কার কথা জানিয়েছেন অনেক কৃষক। তাদের মতে, সহজশর্তে ব্যাংক ঋণ পেলে, কৃষিপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখলে ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য না থাকলে কৃষকরা শিম চাষে আরও বেশি লাভবান হবে। কৃষি অধিদফতর থেকে জানা যায়, বান্দরবানের ৯৫ ভাগ জমিই পাহাড়ী। এই অঞ্চলে সদর, লামা, রুমা ও আলিকদম উপজেলায় প্রধানত শিমের চাষ হয়। পাহাড়ী জমিতে শিম চাষে কোন প্রতিবন্ধকতা নেই। জমির আইলেও শিম চাষ করা হয়। তাছাড়া শিম চাষে খরচ খুবই কম। তাই কৃষকরা শীতকালীন সবজি হিসেবে শিম চাষে ঝুঁকছেন। আগামীতে এই অঞ্চলে শিমের চাষ দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করছে কৃষি অধিদফতর।
×