ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ফারুকী ও লোদী ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত

প্রকাশিত: ০৪:৫৯, ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

 ফারুকী ও লোদী ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কারে ভূষিত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব ফজলুল হক। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হয় দেশের প্রথম চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা ‘সিনেমা’। শুধু তাই নয়, এই গুণী মানুষটিই নির্মাণ করেছিলেন দেশের প্রথম শিশুতোষ চলচ্চিত্র ‘প্রেসিডেন্ট’। ১৯৯০ সালের ২৬ অক্টোবর তিনি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। ২০০৪ সাল থেকে তার মৃত্যুদিনে স্ত্রী কথাসাহিত্যিক রাবেয়া খাতুনের উদ্যোগে শুরু হয় ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার। প্রতিবছর চলচ্চিত্র পরিচালনা ও চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দুজনকে প্রদান করা হয় এ পুরস্কার। গত বছর ২৬ অক্টোবর অনিবার্য কারণে দেয়া হয়নি এ পুরস্কার। স্থগিত থাকা পুরস্কারটি প্রদান করা হলো শনিবার। চলচ্চিত্র পরিচালনায় মোস্তফা সরয়ার ফারুকী এবং চলচ্চিত্র সাংবাদিকতায় এ পুরস্কার পেয়েছেন শফিউজ্জামান খান লোদী। শনিবার দুপুরে রাজধানীর হোটেল ওয়েস্টিনে ফজলুল হক স্মৃতি কমিটির তত্ত্বাবধানে এ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম। পুরস্কারপ্রাপ্তদের উত্তরীয় পরিয়ে দেয়ার পাশাপাশি তাদের হাতে স্মারক ও পুরস্কারের অর্থমূল্য তুলে দেন কথাসাহিত্যিক আনোয়ারা সৈয়দ হক, সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক ও অভিনেত্রী সুজাতা। পুরস্কার প্রদানের আগে প্রদর্শিত হয় শহীদুল আলম সাচ্চুর পরিচালনায় ফজলুল হকের জীবনীনির্ভর প্রামাণ্যচিত্র ‘দ্য ফ্রন্টিয়ার্সম্যান’। পুরস্কারপ্রাপ্তির অনুভূতি ব্যক্ত করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, ফজলুল হক যখন চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বপ্ন দেখেছিলেন তখন চলচ্চিত্র নির্মাণও ছিল স্বপ্নের মতো। তাদের সময়ে যারা চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন তারা একেকটি ব্লক তৈরি করে গেছেন। তাদের সেই ব্লক ধরে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের রেখে যাওয়া ব্লক ধরে পরবর্তী প্রজন্ম এগিয়ে যাবে। সবার হাত ধরে আমাদের গল্প। মানুষের গল্পগুলো সেলুলয়েডের পর্দায় উঠে আসবে। অনুভূতি প্রকাশে শফিউজ্জামান খান লোদী বলেন, এ প্রাপ্তি চলচ্চিত্র সাংবাদিকতার ক্যারিয়ারে অন্যতম। আমি খুব গর্ববোধ করছি এই পুরস্কার পেয়ে। তিনি বলেন, চ্যানেল আইতে চলচ্চিত্র বিষয়ক ‘আমার ছবি’ নামের একটি অনুষ্ঠান ২০০৪ থেকে ২০১৮ সালের ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত আমি করেছি, যা চলচ্চিত্রের আর্কাইভখ্যাত ছিল। এমন একটি অনুষ্ঠান করা সম্ভব হয়েছে স্বপ্নদ্রষ্টা ফজলুল হকের সুযোগ্যপুত্র ফরিদুর রেজা সাগরের জন্য, যা আমাকে আজকের অবস্থানে এনে দাঁড় করিয়েছে। পুরস্কার প্রদানের পর অতিথিরা ফজলুল হকের জীবন ও কর্ম নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। স্মৃতিচারণায় অংশ নেন কথাশিল্পী ইমদাদুল হক মিলন, নাট্যজন মামুনুর রশীদ, চিত্রনায়ক রিয়াজ, ওমর সানী, ফজলুল হক পরিবারের সদস্য কনা রেজা, ফরহাদুর রেজা প্রবাল ও কেকা ফেরদৌসী। অনুষ্ঠানের বিশেষ মুহূর্তে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা গেয়ে শোনান ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্য সুন্দর’। ২০০৪ থেকে প্রবর্তিত ফজলুল হক স্মৃতি পুরস্কার ইতোমধ্যে পেয়েছেন- ফজল শাহাবুদ্দীন ও আহমদ জামান চৌধুরী (২০০৪), চাষী নজরুল ইসলাম ও হুমায়ূন আহমেদ (২০০৫), সাইদুল আনাম টুটুল ও রফিকুজ্জামান (২০০৬), সুভাষ দত্ত ও হীরেন দে (২০০৭), আবদুর রহমান ও গোলাম রাব্বানী বিপ্লব (২০০৮), সৈয়দ শামসুল হক ও আমজাদ হোসেন (২০০৯), চিন্ময় মুৎসুদ্দী ও মোরশেদুল ইসলাম (২০১০), ই আর খান ও অনুপম হায়াৎ (২০১১), নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ও প্রয়াত সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার (২০১২), নায়করাজ রাজ্জাক ও রেজানুর রহমান (২০১৩), সৈয়দ সালাহউদ্দীন জাকী ও আরেফিন বাদল (২০১৪), মাসুদ পারভেজ ও শহীদুল হক খান (২০১৫), আজিজুর রহমান ও মোস্তফা জব্বার (২০১৬), আবদুল লতিফ বাচ্চু ও নরেশ ভূঁইয়া (২০১৭)।
×