ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ড. কামালকে অভিভাবক মেনে আপাতত টিকে থাকতে চায় বিএনপি

প্রকাশিত: ০৫:০৩, ১১ জানুয়ারি ২০১৯

 ড. কামালকে অভিভাবক মেনে আপাতত টিকে থাকতে চায় বিএনপি

শরীফুল ইসলাম ॥ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর চরম বেকায়দায় বিএনপি। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া দুর্নীতির মামলায় সাজা নিয়ে কারাবন্দী থাকায় এক সময়ের ক্ষমতাধর এ দলটি এখন অভিভাবকহীন। তবে আপাতত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল হোসেনকে অভিভাবক মেনে দেশের রাজনীতিতে টিকে থাকতে চায়। ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত বিএনপির সিনিয়র নেতারা হাকডাক দিয়ে আসছিলেন এ নির্বাচনে দলটির নাকি বিপুল বিজয় হবে। আর নির্বাচনের পরপরই নাকি কারাবন্দী বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া মুক্ত হয়ে নেতাকর্মীদের সামনে চলে আসবেন। কিন্তু নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়। নির্বাচনে পরাজয়ের পর পুনর্নির্বাচনের দাবি করে এ দাবি আদায় না হলে কঠোর আন্দোলনের কথা বলতে থাকেন বিএনপি মহাসচিবসহ দলের সিনিয়র নেতারা। লন্ডন থেকে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও আন্দোলনের পক্ষে সায় দেন। কিন্তু কারাবন্দী খালেদা জিয়ার নির্দেশে এখন দলটির নেতাকর্মীরা যাকে অভিভাবক মানেন সেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আহ্বায়ক ড. কামাল কামাল হোসেন আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেন। এর ফলে জোট ও দল কোন অবস্থান থেকেই আন্দোলনে যেতে পারছে না বিএনপি। সম্প্রতি মহাসচিবসহ দলের ক’জন নেতা ড. কামালের সঙ্গে আলাপকালে আন্দোলনের বিষয়ে তার পরামর্শ চাইলে তিনি তাতে সায় দেননি বলে জানা যায়। এদিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভরাডুবির পর বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরাও আন্দোলনের পক্ষে সায় দিচ্ছে না। তাই দেশের রাজনীতিতে দলটির অবস্থান কিভাবে ধরে রাখবেন এ নিয়ে মহাচিন্তিত বিএনপির সিনিয়র নেতারা। বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরাও এখন আর আগের মতো সহযোগিতা দিতে চাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে চারদিকে অন্ধকার দেখছে বিএনপি। তবে আপাতত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে তিনটি কর্মসূচী নিয়ে সরব থাকতে চায় বিএনপি। এগুলো হচ্ছে নির্বাচনের অনিয়ম নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সংলাপ, প্রতিটি সংসদীয় আসনের দলীয় প্রার্থীদের দিয়ে ভোটের অনিয়ম নিয়ে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলা করা ও যেসব এলাকায় নির্বাচনকালে বিএনপি নেতাকর্মীরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেসব এলাকায় সফর করা। সূত্র মতে, বিএনপিকে ক্ষমতায় এনে দেবেন এমন স্বপ্ন দেখিয়ে ছিলেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব, এলডিপি সভাপতি কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ আরও ক’জন নেতা। তাদের সঙ্গে গোপনে তাল মিলিয়ে ছিলেন কিছু বিদেশী কূটনীতিকও। তবে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগও এ বিষয়ে সতর্ক ছিল। তাই বিএনপিকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে যাবতীয় কৌশল গ্রহণ করে এগিয়ে যায় আওয়ামী লীগ। আর আওয়ামী লীগের বাস্তবসম্মত নির্বাচনী কৌশলের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজিত হয় বিএনপি।
×