ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঞ্চিত এলাকা মন্ত্রিপরিষদে অগ্রাধিকার পেয়েছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

বঞ্চিত এলাকা মন্ত্রিপরিষদে অগ্রাধিকার পেয়েছে ॥ কাদের

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যেসব এলাকায় দীর্ঘদিন মন্ত্রী ছিল না মন্ত্রিসভা গঠনে সে সব এলাকার প্রতিনিধিদের অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যেসব এলাকায় মন্ত্রী ছিল না বা বঞ্চিত ছিল সে সব এলাকার প্রতিনিধিদের এবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অগ্রাধিকার দিয়েছেন। সোমবার সচিবালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার পরিচালনার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৪৭ সদস্যের যে নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করছেন, চারপাশে তার প্রশংসা শুনতে পাচ্ছেন উল্লেখ করে কাদের বলেন, দলের প্রয়োজনেই মন্ত্রিসভা থেকে পুরনো অনেক বড় নেতাকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। নতুনরা কতদিন থাকতে পারবেন, তা নির্ভর করবে তাদের কর্মদক্ষতার ওপর। তাছাড়া নতুন মন্ত্রীরা স্থানীয় তা মনে করার কোন কারণ নেই। এসময় তিনি জোটের শরিক দল থেকেও মন্ত্রী করার ইঙ্গিত দেন। এবারের প্রথমপর্বে শপথ নেয়া মন্ত্রিপরিষদে ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে কোন সদস্য রাখা হয়নি। দশম সংসদে ১৪ দলের অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুকে মন্ত্রী করা হয়েছিল। জাতীয় পার্টি থেকে চারজন মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছিল। জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে দেয়া হয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব। এবারের নির্বাচনের পর জাতীয় পার্টি থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয় তারা শুধু বিরোধী দলেই থাকতে চায়। মন্ত্রিপরিষদে জাপার না থাকার কথা আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়ে জানান এরশাদ। এই সমীকরণে এরশাদ হবেন বিরোধী দলের নেতা। তবে ১৪ দলের শরিকদের পক্ষ থেকে মন্ত্রিপরিষদে না থাকার বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। সেতুমন্ত্রী বলেন, ইশতেহার বাস্তবায়নের উপযোগী করেই নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে লক্ষ্য বাস্তবায়ন সহজ হবে। তবে মন্ত্রিসভা কিছুটা সম্প্রসারণ হতেই পারে। নতুন যারা দায়িত্ব পেয়েছেন তারা ভাল পারফর্মেন্স না করতে পারলে দায়িত্বে পরিবর্তন আসতেই পারে। পারফর্মেন্সের ওপর নির্ভর করবে তারা কতদিন দায়িত্বে থাকবেন। তিনি বলেন, ‘মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসায় অনেকেই ইতোমধ্যে প্রশংসা শুরু করেছেন। এখন জনগণ কীভাবে নতুন মন্ত্রিসভাকে গ্রহণ করে তাই দেখার বিষয়। প্রত্যাশার সঙ্গে বাস্তবতার মিল রেখে তারা কাজ করতে পারবেন বলে আশা রাখি। তারা ভাল করবেন।’ মন্ত্রিসভা থেকে সিনিয়র মন্ত্রীদের বাদ পড়ার বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, তারা বাদ পড়েননি। আমরা ‘বাদ পড়া’ শব্দটি বলতে চাই না। শুধু দায়িত্বে পরিবর্তন আনা হয়েছে। যারা বাদ পড়েছেন কাউকে ব্যর্থ বলা চলে না। তারা অনেকেই সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন তারা দলে মনোনিবেশ করবেন। কারণ অনেক সময় সরকারের মধ্যে দল হারিয়ে যায়। তখন দলের অস্তিত্ব থাকে না। দলকে শক্তিশালী করা দরকার। আধুনিক ও স্মার্ট দল থাকলে কাজ করতে সুবিধা। সিনিয়ররা এখন দলকে আরও শক্তিশালী করতে কাজ করবেন। জাতীয় পার্টি বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিরোধী দল বিরোধী ভূমিকা পালন করলেই ভাল। এতে গণতন্ত্রের বিকাশ হয়। শরিক দলগুলো থেকে মন্ত্রী নেই কেন এতে জোটের রাজনীতিতে কোন প্রভাব পড়বে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শরিক দলগুলো আমাদের সঙ্গেই আছে, ভবিষ্যতেও থাকবে। মন্ত্রী না হলেই যে কেউ থাকবে না এমন নয়। পাঁচ বছর অনেক সময়। কখন কে আসবে, কে যাবে তা বলা যায় না। দায়িত্বে পরিবর্তন আসতেই পারে। ‘অভিজ্ঞ মন্ত্রীদের অনেককেই বাদ দেয়া হয়েছে এতে সমস্যা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এবারের মন্ত্রিসভাতেও অভিজ্ঞ ব্যক্তি রয়েছেন। একেবারে নেই বা তাতে সমস্যা হবে এমন ধারণা ঠিক না। আগে দায়িত্ব পালন করা অনেকেই মন্ত্রিসভায় আছেন। কাজেই মন্ত্রিসভায় অভিজ্ঞ লোক আছে। তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলবে ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সরকার কঠোর অবস্থানে থাকবে। নতুনদের বেশি প্রাধান্য দেয়ায় দলে কোন অসন্তোষ থাকছে কিনা জানতে চাইলে কাদের বলেন, আমাদের দলে এখন যে কোন সময়ের চেয়ে ঐক্য অনেক বেশি দৃঢ় ও শক্তিশালী। এটি নিয়ে আমাদের দলে কোন অসন্তোষ বা ফাটল ধরার কারণ নেই। আমাদের সময়ে সময়ে সম্মেলন হয়, দলের মধ্যে দায়িত্বের পরিবর্তন আসে।
×