ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবি ছাত্রী অপহরণ চেষ্টা মামলার আসামি খাদ্য কর্মকর্তা

প্রকাশিত: ০৫:১৬, ৮ জানুয়ারি ২০১৯

ঢাবি ছাত্রী অপহরণ চেষ্টা মামলার আসামি খাদ্য কর্মকর্তা

স্টাফ রিপোর্টার, নীলফামারী ॥ ডিমলা উপজেলার সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) তফিউজ্জামান জুয়েলের বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ওই ঘটনার মামলায় উক্ত কর্মকর্তা লাপাত্তা হয়েছেন। এ নিয়ে ডিমলা এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। উক্ত কর্মকর্তা ২ জানুয়ারি (বুধবার) সকালে অফিসে হাজিরা দিয়ে চলে যাওয়ার পর রবিবার পর্যন্ত অফিসে আর আসেনি। ফলে ডিমলার সরকারী খাদ্যগুদামের কাজকর্ম স্থবির হয়ে পড়েছে। জুয়েলের মোবাইল বন্ধ থাকায় উর্ধতন কর্মকর্তারাও তার কোন হদিস পাচ্ছে না। জানা যায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বুধবার বিকেলে তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠে। লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা থানায় তাকে (জুয়েল) প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন ওই শিক্ষার্থীর মা মাসুদা আখতার। এছাড়া ওই মামলায় জুয়েলের সহযোগী ওমর ফারুক মানিক, মোঃ রানা, মোঃ ফেরদৌস এবং মাইক্রোবাস চালক মোঃ জহুরুলকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে মাইক্রোবাস চালক জহুরুলকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে হাতিবান্ধা থানার ওসি ওমর ফারুক জানিয়েছে। তিনি আরও জানান প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক মাইক্রোবাস চালক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। একাধিক সূত্র জানায়, তফিউজ্জামান জুয়েল লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ গুড্ডিমারী মহল্লার উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হকের ছেলে। ছাত্র জীবনে জুয়েল হাতিবান্ধা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিল। সরকারী চাকরি পেয়ে নিজ বাড়ি হতে মাত্র ১৫ কিলোমিটার অদূরে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় পোস্টিং নেয়। সেই থেকে ডিমলায় কর্মরত রয়েছে জুয়েল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায় হাতিবান্ধা উপজেলার সাংবাদিক আলী আকতার গোলাম কিবরিয়ার মেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউটের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। ‘আমরাই পারি’ নামে একটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাজের অংশ হিসেবে দুটি মাইক্রোবাসে করে তারা ১৭ জন বন্ধু বান্ধবী মিলে হাতিবান্ধা হতে ১০ কিলোমিটার দূরে দোয়ানী তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় শীতবস্ত্র বিতরণে যায়। বিকেলে ফেরার পথে তফিউজ্জামান জুয়েলসহ সাত-আটজন মাইক্রোবাসে এসে পথরোধ করে অস্ত্র বের করে অন্যদের নামিয়ে দিয়ে মাফলার দিয়ে ওই শিক্ষার্থীর মুখ বেঁধে ফেলে। এ সময় বন্ধু ও বান্ধবীরা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তাদেরও ছুরিকাঘাত করার চেষ্টা করে জুয়েল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে লাথি, কিল-ঘুষি মারা হয়। চেঁচামেচির ফলে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে জুয়েলসহ তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী জানায়, একই এলাকায় বাড়ি হওয়ায় অনেক দিন আগে থেকেই জুয়েল ওই শিক্ষার্থীকে বিরক্ত করত। এমনকি বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হবার পর মেয়েটিকে অপহরণের চেষ্টার ঘটনা ঘটাল। এ ব্যাপারে রবিবার নীলফামারী জেলা খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা (ডিসিফুড) সাইফুদ্দিন অভির সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি জানান, ডিমলা উপজেলার সরকারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসিএলএসডি) তফিউজ্জামান জুয়েল কোন ছুটি ছাড়া তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছে বেশ কিছুদিন ধরে। এরমধ্যে তার বিরুদ্ধে এক শিক্ষার্থীকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগের কথা জানতে পেরেছি। বিষয়টি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। জুয়েলের মোবাইল বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।
×