ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদ নির্বাচনের জের ॥ পাথরঘাটায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত ৫

প্রকাশিত: ০৭:২২, ৬ জানুয়ারি ২০১৯

সংসদ নির্বাচনের জের ॥ পাথরঘাটায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত ৫

সংবাদদাতা, পাথরঘাটা, বরগুনা, ৫ জানুয়ারি ॥ পাথরঘাটায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জের ধরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনপরবর্তী গত চারদিনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সন্ত্রাসীদের ৩ দফা হামলায় ৫ জন আহত হয়েছে। শনিবার উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নের তালুকের চরদুয়ানী গ্রামের ৫টি পরিবারের সদস্যরা এমন অভিযোগ করেন। সন্ত্রাসীদের ভয়ে তারা এখন ঘর থেকে বের হতে পারছে না। এ ব্যাপারে পাথরঘাটা থানায় প্রমথ ওঝার ছেলে প্রসেনজিৎ ওঝা বাদী হয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। পাথরঘাটা থানার ওসি মোঃ হানিফ সিকদার অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছেন। প্রসেনজিৎ জানান,পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মোঃ হাবিবুর রহমানের বাড়ির পাশে আমরা কিছু হিন্দু পরিবার বসবাস করি। এ কারণে আমাদের সঙ্গে তার প্রতিবেশী সম্পর্ক। এই সম্পর্কের কারণে তার কথামত গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট না দেয়ার মিথ্যা অভিযোগ এনে নির্বাচনের দিন থেকেই আমাদের শারীরিক নির্যাতন করে ঘর থেকে বের হতে দেয়নি এলাকার কিছু সন্ত্রাসী। বিষয়টি স্থানীয় আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে জানানো হয়েছে। পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় তালুকের চরদুয়ানী বাজার থেকে প্রতিদিনের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে আমরা বাড়িতে ফেরার পথে শ্যামল শঙ্করের স মিলের সামনে কিছু সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে এসে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আমাদের আহত করে। এ সময় আমাদের বাড়ি থেকে বের না হওয়ার জন্য হুমকি দেয়। বাড়ি থেকে বের হলে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে জানান সন্ত্রাসীরা। আমরা এখন নিরাপত্তাহীনতায় আছি। বিষয়টি জানিয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। নির্যাতিত পরিবারগুলো তাদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে। সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িতরা সোহেল খান, আবু সালে, মোঃ রাজু, মোঃ নাহিদ, মোঃ জসিম, গেলাপ, ধ্রুব, প্রান্ত, বাবুল খান, আলামিন। কেশবপুর নিজস্ব সংবাদদাতা কেশবপুর থেকে জানান, কেশবপুরের চাঁদড়া গ্রামে সদ্য সমাপ্ত ভোটকে কেন্দ্র করে বিএনপির সমর্থকরা শুক্রবার এক আওয়ামী লীগ সমর্থক পরিবারের ওপর হামলা করে ঘরবাড়ি ভাংচুর ও মারপিট করেছে। ধানের শীষে জাল ভোট দেয়ার কথা প্রচার হওয়ার পর বিএনপির সমর্থকরা ওই গ্রামের হিরন ও তার স্ত্রী লিপি খাতুনসহ চারজনকে বেধড়ক মারপিট করে আহত করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে আহতদের দুজনকে কেশবপুর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ হামলাকারীদের একজন আলাউদ্দীন মোড়লকে শনিবার গ্রেফতার করেছে। হাসপাতালে আহত লিপি খাতুন (২৭) ও হিরন খান ও পুলিশ জানান, চাঁদড়া গ্রামের আলাউদ্দীন মোড়লের জামাই শার্শা থানার বাগআচড়া গ্রামের নাইম রেজা জ্যোতি সংসদ নির্বাচনের দিন চাঁদড়া প্রাইমারি স্কুলে ধানের শীষে কয়েকটি জাল ভোট দেয়। জাল ভোট দেয়ার কথা এলাকায় প্রচার হয়ে গেলে নাইম রেজা জ্যোতি একলাকার হিরন খান ও তার স্ত্রী লিপি প্রচার করেছে দাবি করে শুক্রবার দুপুরে হিরনের বাড়ি হামলা করে হিরন ও লিপিকে বেধড়ক মারপিট করে। এ সময় তাদের চিৎকারে লিপির পিতা বদর উদ্ধিন মোড়ল (৫০), মা রহিমা বেগম (৪৫) থামাতে আসলে হামলাকারী আলাউদ্দীন মোড়ল, ইউনুচ আলী, আলমগীর হোসেন আলেয়া খাতুন, সোনিয়া আক্তার তাদের উপর হামলা করে মারপিট করে। হামলাকারীরা হিরনের ঘরবাড়িও ভাংচুর করেছে বলে ভালুকঘর ফাঁড়ির আইসি এস আই নাসির উদ্দিন জানান। তিনি আরও জানান, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহত লিপি ও হিরনকে কেশবপুর হাসপাতালে প্রেরণ করি। এ ঘটনায় মামলার প্রধান আসামি আলাউদ্দীন মোড়লকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি লিপি জানান, নাইম রেজা জ্যোতি ও আলাউদ্দিন মোড়ল তার তলপেটে লাথি ও মুখসহ সারা শরীরে কামড়িয়ে কামড়িয়ে ক্ষতবিক্ষত করে নির্যাতন করে। লিপির স্বামী হিরন জানায়, অধিকাংশ আসামিরা সকলেই বিএনপির লোক। তারা বাঁশের লাঠি, লোহার রড, হাতুড়ি, লোহার শাবল দিয়ে সকলকে পিটিয়েছে। আমার স্ত্রীকে মারপিট করে স্ত্রীর পরিহিত শাড়ি কাপড় ধরে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি করে। স্ত্রীর গলায় এক ভরি ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন টান মেরে নিয়ে নেয়। তারা আমার স্ত্রীর সারাশরীর কামড়িয়ে ক্ষত করে এবং আমার ঘরবাড়ি ভাংচুর করে।
×