নতুন বছরে শুভসূচনা ম্যানইউর

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন বছর ২০১৯ সালের শুরুটাও দুর্দান্ত হয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের। তারকা কোচ জোশে মরিনহোকে বরখাস্ত করার পর ভারপ্রাপ্ত কোচ ওলে গানার সোলসজায়েরের অধীনে এ নিয়ে টানা চার ম্যাচ জিতেছে রেড ডেভিলসরা। বুধবার রাতে নতুন বছরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক নিউক্যাসল ইউনাইটেডকে ২-০ গোলে হারিয়েছে অতিথি ম্যানইউ। নিউক্যাসলের মাঠ সেন্ট জেমস পার্কে বিজয়ী দলের হয়ে দ্বিতীয়ার্ধে গোল দু’টি করেন রোমেলু লুকাকু ও মার্কোস রাশফোর্ড। ম্যানইউ জিতলেও হতাশা সঙ্গী করে বছর বরণ করতে হয়েছে সাবেক চ্যাম্পিয়ন চেলসিকে। নিজেদের মাঠ লন্ডনের স্ট্যামফোর্ডব্রিজে সাউদাম্পটনের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে ব্লুজরা। বর্তমানে ২১ ম্যাচে ১১ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে আছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। বৃহস্পতিবার রাতের ম্যাচের আগে ২০ খেলায় ৫৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছে লিভারপুল। টটেনহ্যাম হটস্পার ২১ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে। তৃতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির পয়েন্ট ২০ ম্যাচে ৪৭। ৪৪ পয়েন্ট নিয়ে চারে অবস্থান চেলসির। নতুন কোচ দায়িত্ব নেয়ার পর থেকেই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠা ম্যানইউ যেন নিজেদের নতুনভাবে ফিরে পেয়েছে। অন্তর্র্বর্তীকালীন কোচ গানারের অধীনে প্রথম তিন ম্যাচে ১২ গোল করা দলটি দাপুটে যাত্রা ধরে রেখেছে। বদলি হিসেবে লুকাকু মাঠে নামার মাত্র ৩৮ সেকেন্ডের মধ্যে ম্যানইউকে এগিয়ে নেন। অর্থাৎ ৬৪ মিনিটে গোল করেন বেলজিয়ামের এই তারকা। রাশফোর্ডের ফ্রিকিকে বিচলিত নিউক্যাসল গোলরক্ষক মার্টিন ডুব্রাভকাকে পরাস্ত করেন তিনি। ৮০ মিনিটে এ্যালেক্সিস সানচেজের সহায়তায় রাশফোর্ড নিজে ম্যানইউর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। পুরো ম্যাচে অতিথিরা বেশ কয়েকটি সুযোগ সৃষ্টি করলেও নিউক্যাসলের শক্ত রক্ষণভাগের বিপরীতে সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি। যে কারণে কোচ গানার বদলি বেঞ্চ থেকে মাঠে নামান লুকাকু ও সানচেজকে। এরপরই ম্যানইউর চেহারা পাল্টে যায়। প্রিমিয়ার লীগে এবারের মৌসুমে মাত্র তিন ম্যাচে কোন গোল হজম করেনি দলটি। এর মধ্যে এই ম্যাচটিও আছে। ১৯৪৬ সালে ম্যাট বাসবির পর ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ইতিহাসে প্রথম কোচ হিসেবে গানার নিজের মেয়াদে প্রথম চারটি লীগ ম্যাচেই জয় তুলে নিয়েছেন। ম্যাচ শেষে তৃপ্তি ম্যানইউ কোচ ওলে গানার বলেন, অবশেষে আমরা কোন গোল হজম না করে ম্যাচ শেষ করেছি। ছেলেরা দারুণ পেশাদারিত্ব দেখিয়েছে। নিজেদের মান অনুযায়ী খেলতে না পারলেও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতেই ছিল। পুরো ম্যাচে চাপ ধরে রেখে গোলের দিকে এগিয়ে গিয়েছি। সুপারসাবদের সহায়তায় গোলও এসেছে। যখন কেউ দেখবে রোমেলু লুকাকুর মতো বিশালদেহী কোন একজন এগিয়ে আসছে তবে সেই গোলরক্ষকের ভিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে প্রথমার্ধে আমরা ম্যাচের আবহের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারিনি। আরেক ম্যাচে ঘরের মাঠে আধিপত্য ধরে রাখলেও স্ট্রাইকারদের ব্যর্থতায় জয় পায়নি চেলসি। স্ট্যামফোর্ডব্রিজে এ নিয়ে লীগের গত তিন ম্যাচে গোল করতে ব্যর্থ হলো ব্লুজরা। আর এতেই জানুয়ারি ট্রান্সফার উইন্ডোতে চেলসির একজন শীর্ষ সারির স্ট্রাইকারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে। ক্রিস্টাল প্যালেসের বিপক্ষে গোড়ালির ইনজুরিতে আক্রান্ত হয়ে অলিভার জিরুড সাইডলাইনে চলে গেছেন। তার স্থানে কোচ মাউরিসিও সারি অফফর্মে থাকা আলভারো মোরাতাকে ডাকতে বাধ্য হন। কিন্তু আরও একবার সাবেক এই রিয়াল মাদ্রিদ তারকার মধ্যে পূর্ণ আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা গেছে। শুধু মোরাতা নন, কেউই নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি। যে কারণে ব্লুজ শিবিরে এখন নতুন স্ট্রাইকার আসছে এটা অনেকটা নিশ্চিত। বুধবার চেলসির পক্ষ থেকে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের মার্কিন উইঙ্গার ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের দলভুক্তির ঘোষণা দেয়া হয়েছে। জানা গেছে ৫৮ মিলিয়ন পাউন্ডের বিনিময়ে পুলিসিচকে দলে ভিড়িয়েছে চেলসি। যদিও ২০১৯/২০ মৌসুম শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত ধারে তিনি ডর্টমুন্ডেই খেলবেন। জিততে না পারায় হতাশ চেলসি কোচ সারি ম্যাচ শেষে বলেন, যদি প্রথম গোল করতে পারো তবে পুরো বিষয়টা সহজ হয়ে যায়। আমাদের এই সমস্যাটা অন্তত ২০ মিটার থেকে সমাধান করতে হবে। গত কয়েকটা ম্যাচে আমরা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রাখলেও গোল পেতে ব্যর্থ হয়েছি।