ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

পুজারার অপরাজিত শতকে বড় সংগ্রহের পথে ভারত

প্রকাশিত: ০৭:২৪, ৪ জানুয়ারি ২০১৯

 পুজারার অপরাজিত শতকে বড় সংগ্রহের পথে ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সিডনিতেই শেষ। জয় কিংবা ড্র- ফলাফল যেমনই হোক ভারতীয় ক্রিকেট দল নতুন ইতিহাস গড়বে এখানে। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এর আগে কখনই টেস্ট সিরিজ জিতে ফিরতে পারেনি ভারতীয়রা। কিন্তু বিরাট কোহলির নেতৃত্বে এবার দারুণ অবস্থানে থাকা ভারতের জন্য সেই অবিস্মরণীয় ঘটনার জন্ম দেয়ার মোক্ষম সুযোগ। ৪ টেস্টের বোর্ডার-গাভাস্কার টেস্ট সিরিজে ইতোমধ্যেই ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে সফরকারীরা। বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া সিরিজের চতুর্থ ও শেষ টেস্টে ড্র কিংবা জয় প্রয়োজন। সেই পথে প্রথমদিনটা দারুণ কাটিয়েছে আত্মবিশ্বাসী ও তুঙ্গে থাকা ভারত। অস্ট্রেলিয়ান পেস আক্রমণকে নিষ্ক্রিয় করে ৪ উইকেটে ৩০৩ রান তুলে বিশাল সংগ্রহের পথে তারা। নতুন ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়ালের দারুণ অর্ধশতকের পর চেতেশ্বর পুজারা হাঁকিয়েছেন আবার সেঞ্চুরি। সিরিজে তৃতীয় এবং ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে এখনও ১৩০ রানে অপরাজিত তিনি। হনুমা বিহারি ৩৯ রানে সঙ্গ দিচ্ছেন তাকে। ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরে প্রথম ভারত-অস্ট্রেলিয়া রণ হয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। ১৯৯৬-৯৭ সালে এ লড়াইটিকে বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফি নাম দেয়া হয়। সিরিজের নাম যেটাই ঘটুক ফলাফলে কোন প্রভাব পড়েনি। ২০১৪-১৫ সালে সর্বশেষবারও যখন অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এসেছিল ভারতীয় দল, সেবারও ২-০ ব্যবধানে সিরিজ হেরে দেশে ফিরেছিল। সবমিলিয়ে ১১ সিরিজ খেলেছে তারা অস্ট্রেলিয়া সফরে। এর মধ্যে সাফল্য বলতে ৩ টেস্টের সিরিজে ১৯৮০-৮১ সালে ১-১, ১৯৮৫-৮৬ সালে ০-০ এবং ৪ টেস্টের সিরিজে ২০০৩-০৪ মৌসুমে ১-১ ড্র নিয়ে শেষ করা। বাকি ৮ সিরিজেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হার দেখেছে সফরকারী ভারত। এবার হয়তো ইতিহাস পাল্টেই যাবে। এবারে আগের ৩ টেস্টেই হয়েছে ফলাফল যার মধ্যে দুটিই নিজেদের পক্ষে নিয়েছেন কোহলিরা। সেদিক থেকে এবারই প্রথম ঘরের মাঠে সিরিজ হারের শঙ্কা নিয়ে শেষ ম্যাচে সিডনিতে মুখোমুখি হয়েছে অসিরা। যদিও অধিনায়ক টিম পেইন যেভাবেই হোক এ ম্যাচে জিতে অযাচিত ঘটনার সাক্ষী না হওয়ার প্রত্যয় জানিয়েছেন। কিন্তু ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা এখন অনেক আত্মবিশ্বাসী এবং বেশিই আত্মপ্রত্যয়ী। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামার পর সেটিই দেখিয়েছে ভারত। অবশ্য মাত্র ১০ রানের মধ্যেই ওপেনার লোকেশ রাহুলকে (৯) সাজঘরে ফিরিয়ে স্বাগতিকদের দারুণ শুরু এনে দিয়েছিলেন জশ হ্যাজলউড। কিন্তু সেটা আর ধরে রাখতে পারেননি তিনি কিংবা অস্ট্রেলিয়ার আর কোন বোলার। দ্বিতীয় উইকেটে ১১৬ রানের দারুণ জুটি গড়ে ভারতকে শুরুর বিপদ থেকে বাঁচিয়েছেন আগারওয়াল ও পুজারা। মেলবোর্নে আগের টেস্টে অভিষেক হয়েছিল আগারওয়ালের। এ ডানহাতি এবার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি পেয়েছেন দারুণ স্বাচ্ছন্দ্য ব্যাটিংয়ে। মধ্যাহ্ন ভোজনের বিরতি পর্যন্ত খুব সতর্ক ব্যাটিং করেছেন দু’জনই। কিন্তু লাঞ্চের পর দ্রুতবেগে ব্যাট চালিয়েছেন তারা। তবে এবারও আগারওয়ালকে হতাশ হতে হয়েছে কাক্সিক্ষত সেঞ্চুরির দেখা না পাওয়ার কারণে। ১১২ বলে ৭ চার, ২ ছক্কায় ৭৭ রান করার পর অফস্পিনার নাথান লেয়ন তাকে শিকার করেন। আগারওয়াল বিদায় নেয়ার পর অধিনায়ক কোহলির সঙ্গে জুটিটা বেশ ভালই জমে উঠেছিল পুজারার। কিন্তু ৫৪ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি তারা। কোহলি মাত্র ২৩ রান করেই হ্যাজলউডের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। কিন্তু পুজারা ঠিকই ক্রিজ আঁকড়ে থাকেন। চতুর্থ উইকেটেও আজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে ৪৮ রানের জুটি গড়েন। আর পৌঁছে যান ক্যারিয়ারের ১৮তম শতকে। ২০১৪ সালে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়া সফরে এসে পুজারা মাত্র একটি অর্ধশতক পেয়েছিলেন। এবার তৃতীয় সেঞ্চুরি হাঁকালেন। দিনের শেষভাগ পর্যন্ত তাকে সঙ্গ দিয়ে ৩৯ রানে অপরাজিত থাকেন বিহারি। পুজারা ২৫০ বলে ১৬ চারে ১৩০ রান করে অপরাজিত। ৪ উইকেটে ৩০৩ রান তুলে প্রথমদিন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে তুলতেই মাঠ ছেড়েছে ভারতীয় দল। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে হ্যাজলউড ২টি, লেয়ন ১টি ও মিচেল স্টার্ক ১টি উইকেট নিয়েছেন। দিনটা যে তাদের প্রত্যাশা অনুসারে যায়নি সেটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায়। বিশাল সংগ্রহের পথেই আছে ভারত। স্কোর ॥ ভারত প্রথম ইনিংস- ৩০৩/৪; ৯০ ওভার (পুজারা ১৩০*, আগারওয়াল ৭৭, বিহারি ৩৯*, কোহলি ২৩; হ্যাজলউড ২/৫১, স্টার্ক ১/৭৫, লেয়ন ১/৮৮)। * প্রথম দিন শেষে।
×