ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেরেনাকে হারালেন ফেদেরার

প্রকাশিত: ০৬:৩৯, ৩ জানুয়ারি ২০১৯

সেরেনাকে হারালেন ফেদেরার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নতুন মৌসুমের শুরুতেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে রইলো টেনিস দুনিয়া। প্রথমবারের মতো সেরেনা উইলিয়ামসের বিপক্ষে কোর্টে নামলেন রজার ফেদেরার। ঐতিহাসিক ম্যাচে হেরে গেলেন সেরেনা উইলিয়ামস। আমেরিকান টেনিসের জীবন্ত কিংবদন্তিকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছেন সুইস তারকা ফেদেরার। দু’জনে মিলে ৪৩টি গ্র্যান্ডস্লাম জিতেছেন। টেনিস সার্কিটের এই দুই মহারথীর লড়াই ঘিরে তাই আলোড়ন পড়ে যায় টেনিস দুনিয়ায়। ম্যাচ শেষ হতে এই দু’জনের সঙ্গে সেলফি তুলতেই ভিড় লেগে গিয়েছিল ফটোগ্রাফ শিকারিদের মাঝে। অবশ্য শুধু ভক্তদের সঙ্গে নয় নিজেরাও ম্যাচ শেষে সেলফি নিয়েছিলেন ফেদেরার-সেরেনা। ঐতিহাসিক ম্যাচ বলে কথা। মিশ্র দ্বৈতের লড়াইয়ে সেরেনার সঙ্গী ছিলেন ফ্রান্সিস টিয়াফোই। আর ফেদেরারের সঙ্গী ছিলেন বেলিন্ডা বেনচিচ। শেষ পর্যন্ত সেরেনা-টিয়াফোইকে ৪-২ এবং ৪-৩ (৫-৩) সেটে পরাজিত করেন ফেদেরার-বেনচিচ। জয়-পরাজয় ছাপিয়ে ম্যাচ শেষে সকলকেই দেখা গেল রোমাঞ্চের জোয়ারে ভেসে যেতে। ২০টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী রজার ফেদেরার নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, ‘দারুণ মজা হলো। এ রকম একটা ম্যাচ খেলতে পেরে সত্যি গর্ব বোধ করছি। এটা আয়োজন করার জন্য ধন্যবাদ। আসলে অনেকদিন পর কোর্টে ফিরে নার্ভাসই লাগছিল। তাছাড়া অনেকেই বলছিল সেরেনার সার্ভিস দারুণ শক্তিশালী। আসলেই তাই।’ সেরেনাকে যখন ফেদেরার প্রশংসায় ভাসান তখন ফেদেরারকে প্রশংসা করতে বাকি থাকবেন কেন সেরেনা? ম্যাচ শেষে তাই ফেদেরারকে প্রশংসার সুযোগটা হাতছাড়া করেননি মার্কিন তারকাও। এ প্রসঙ্গে কৃঞ্চকলির ভাষ্য, ‘সত্যিই দারুণ মজা হলো। আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা ম্যাচ ছিল এটা। মহৎ খেলোয়াড়ের বিপক্ষে খেলতে পারাটা এমনিতেই অনেক আনন্দের আর সে যদি আপনাকে এভাবে প্রশংসায় ভাষায় তাহলে তো কথাই নেই। সত্যিই।’ এই ম্যাচকে ১৯৭৩ সালের ‘ব্যাটল অব সেক্সেস’র পর পুরুষ ও নারী টেনিস খেলোয়াড়ের মধ্যকার সবচেয়ে প্রত্যাশিত লড়াই হিসেবে দেখা হচ্ছে। সেবার পুরুষ টেনিসের সাবেক বিশ্বসেরা ববি রিগসকে সরাসরি সেটে হারিয়ে দিয়েছিলেন ৩৯ বারের গ্র্যান্ডস্লাম জয়ী আমেরিকান নারী টেনিস কিংবদন্তি বিলি জিন কিং। ফেদেরার-উইলিয়ামস দু’জনেরই বয়স সমান ৩৭। কিন্তু তারপরও নিজেকে বয়সের ফ্রেমে বেঁধে রাখতে রাজি নন তারা। এই বয়সেই যে টেনিস কোর্টে দাপটের সঙ্গে লড়াই করছেন দুই তারকাই। সুইস তারকা রজার ফেদেরার গত মৌসুমের শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের চ্যাম্পিয়ন হন। যা তার ক্যারিয়ারের ২০তম গ্র্যান্ডস্লাম। এই মুহূর্তে র‌্যাঙ্কিংয়ের তিন নম্বরে অবস্থান করছেন তিনি। বয়সের ভারে অনেক খেলোয়াড়কেই দেখা যায় নুইয়ে যেতে। কিন্তু এখানে ব্যতিক্রম ফেড এক্সপ্রেস। এখনও লড়াকু মানসিকতা ফেড এক্সপ্রেসের। নতুন মৌসুমেও নতুন চ্যালেঞ্জ নিতে বদ্ধপরিকর বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের সাবেক নাম্বার ওয়ান এই তারকা। তবে চ্যালেঞ্জটা শুরু হবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেন দিয়েই। মেলবোর্নে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি। তার সামনে এখন রেকর্ড সপ্তম শিরোপা জয়ের হাতছানি। তবে ফেদেরার কী পারবেন অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের সপ্তম ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে? নতুন মৌসুমের শুরুতেই ক্যারিয়ারের গ্র্যান্ডস্লাম সংখ্যাটাকে একুশে নিয়ে যেতে? টেনিসপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার। এদিকে সেরেনা উইলিয়ামসের সামনেও কঠিন চ্যালেঞ্জ। কেননা ২০১৭ সালে এই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের শিরোপা উঁচিয়ে ধরার পর গত বছর আর মেলবোর্নে খেলতে পারেননি। সন্তান জন্মের কারণে মৌসুমের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্টে অংশ নিতে পারেননি তিনি। যে কারণে মেলবোর্নে ফেরাটা তারজন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং। যদিওবা ইতোমধ্যেই কোর্টে নিজেকে প্রমাণ করেছেন সেরেনা। গত মৌসুমে উইম্বলডন এবং ইউএস ওপেনে দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন তিনি। শিরোপা জিততে না পারলেও সন্তান জন্মের পর টানা দুই মেজর টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন ২৩ গ্র্যান্ডস্লামের মালিক।
×