ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

স্বাধীনতা কাপ ফুটবলের দশম আসরের ফাইনালে বুধবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে দু’দল

শিরোপা জিততে মরিয়া শেখ রাসেল ও বসুন্ধরা কিংস

প্রকাশিত: ০৭:০১, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮

শিরোপা জিততে মরিয়া শেখ রাসেল ও বসুন্ধরা কিংস

জাহিদুল আলম জয় ॥ বিজয়ের মাসে চলছে স্বাধীনতা কাপ ফুটবল। এবারের দশম আসরের ফাইনালে আগামীকাল বুধবার মুখোমুখি হচ্ছে শক্তিশালী শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র ও নতুন পরাশক্তি বসুন্ধরা কিংস। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ফাইনাল মহারণ শুরু হবে বিকেল ৪টা ৩০ মিনিটে। একই গ্রুপে (ডি) খেলা দল দুটি সব প্রতিপক্ষকে পেছনে ফেলে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচের টিকেট কেটেছে। গ্রুপ পর্বে রাসেল-বসুন্ধরার ম্যাচটি গোলশূন্য অমীমাংসিত থাকলেও এবার একটি দলকে বিজয়ী ও অপর দলটিকে হারের স্বাদ পেতেই হবে! পাঁচ বছর পর এবার ফাইনালে উঠে আসা শেখ রাসেল শিরোপা ছাড়া কিছুই ভাবছে না। তেমনি প্রথমবার টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েই ফাইনালের টিকেট পাওয়া বসুন্ধরারও অভিন্ন লক্ষ্য। এমন অবস্থায় জমজমাট ও উপভোগ্য লড়াইয়ের অপেক্ষা করছেন ফুটবলপ্রেমীরা। স্বাধীনতা কাপে শেখ রাসেল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে একবারই। সেটা পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালে। সেবার ফাইনালে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবকে ৩-২ গোলে হারিয়েছিল রাসেল। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এবার শুরু থেকে লড়াকু ফুটবল উপহার দিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছে দলটি। মূলত বিদেশী ফুটবলারদের নৈপুণ্যে ভর করেই সাফল্য পাচ্ছে তারা। টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় শিরোপা জিততে মরিয়া হয়ে আছেন রাসেলের ফুটবলাররা। তবে কাজটা যে সহজ হবে না সেটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। কেননা বসুন্ধরা কিংসও একই আশা করছে। গ্রুপ পর্ব থেকে দুর্দান্ত ধারাবাহিকতা দেখিয়ে ফাইনাল মঞ্চে উঠে এসেছেন হেমন্ত, নাসিরউদ্দিন, মাসুক মিয়া জনিরা। মূলত দেশীয় ফুটবলারদের নৈপুণ্যেই সাফল্য পাচ্ছে তারা। রুদ্ধশ্বাস সেমিফাইনালে ফেডারেশন কাপের চ্যাম্পিয়ন ঢাকা আবাহনীকে সাডেন ডেথে হারিয়েছে দলটি। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ১-১ গোলে ড্র ছিল। এরপর ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে আবাহনীকে ৭-৬ গোলে হারায় বসুন্ধরা। এ পর্যন্ত আসতে ভাগ্যেরও বেশ সহায়তা পেয়েছে নতুন শক্তি হয়ে ওঠা দলটি। কেননা সেমির মতো কোয়ার্টার ফাইনালেও টাইব্রেকার ভাগ্যে জয় পেয়েছিল তারা। সেমিতে ওঠার মিশনে রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটির বিপক্ষেও ৩-২ গোলে জয় পায় বসুন্ধরা। নির্ধারত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা ২-২ গোলে ড্র ছিল। অবাক করা বিষয়, শেষ আটের এই ম্যাচে নির্ধারিত সময়েই হারতে বসেছিল বসুন্ধরা। ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে ছিল রহমতগঞ্জ। কিন্তু খেলার অন্তিম মুহূর্তে অর্থাৎ নির্ধারিত সময় শেষে যোগ করা সময়ের শেষ মিনিটে (৯৫ মিনিট) বখতিয়ার দুশোবেখবের গোলে সমতা ফেরায় বসুন্ধরা। এরপর ভাগ্যনির্ধারণী টাইব্রেকারে শেষ হাসি হাসে তারা। টান টানা উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনালেও ভাগ্যদেবী মুখ তুলে তাকায় দলটির দিকে। এবার ফাইনালে কি হয় সেটাই দেখার। তবে বসুন্ধরার ফুটবলাররা ময়দানী লড়াইয়ে ভাল করেই ট্রফির আশা করছেন। এর আগে ‘ডি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে নকআউট রাউন্ডে উঠে আসে বসুন্ধরা। গ্রুপ পর্বে নাসিরউদ্দিন ও বখতিয়ারের গোলে শেখ জামাল ধানম-ি ক্লাবকে ২-০ গোলে হারানোর পর শেখ রাসেলের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করে বসুন্ধরা। অপরাজিত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ আটে উঠে তারা। মজার বিষয়, এই গ্রুপ থেকেই রানার্সআপ হয়ে নকআউটের টিকেট কাটে শেখ রাসেল। বসুন্ধরার মতো তারা জামালের সঙ্গেও গোলশূন্য ড্র করে। ফলে কোন জয় ছাড়াই তারা শেষ আটে উঠে আসে। এটি সম্ভব হয় জামাল বসুন্ধরার কাছে হেরে যাওয়ায়। গ্রুপ পর্বে জয়হীন থাকা রাসেল নকআউট রাউন্ডে দৃষ্টিনন্দন ফুটবলার উপহার দিয়ে ফাইনালে উঠে এসেছে। কোয়ার্টার ফাইনালে শেখ রাসেল ২-০ গোলে হারায় আসরের বর্তমান রানার্সআপ চট্টগ্রাম আবাহনীকে। এরপর ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে সেমিফাইনালে রাসেল একই ব্যবধানে পরাজিত করে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে। এই ম্যাচে দলটির হয়ে জোড়া গোল করেন উজবেকিস্তানের স্ট্রাইকার আলিসার আজিজভ। ছন্দ ফিরে পাওয়া রাসেলের এখন আসরের দ্বিতীয় ট্রফিতে পাখির চোখ।
×