ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাম পুলিশের সদস্যরা এবার প্রথম মাঠে নামছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২২ ডিসেম্বর ২০১৮

 গ্রাম পুলিশের সদস্যরা এবার প্রথম মাঠে নামছেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অপেক্ষার প্রহর শেষ হতে চলেছে। জাতীয় নির্বাচনের বাকি আছে আর মাত্র এক সপ্তাহ। এই এক সপ্তাহ প্রার্থীদের জন্য যেমন কমিশনের কাছেও তেমন গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে গণ্য হচ্ছে। এই সপ্তাহেই শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচার। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে নিরাপত্তা চাদরে ঢেকে ফেলা হবে গোটা নির্বাচনী এলাকায়। এবারই প্রথম নির্বাচনী দায়িত্বে মাঠে নামছেন গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। শেষ সপ্তাহেই নির্বাচনী প্রচারে সরগরম হয়ে পড়ছে গোটা নির্বাচনী এলাকা। বাকি সময় যেন দেশে কোথাও কোন সহিংসতা না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে নির্বাচন কমিশন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে যার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ রয়েছে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আর কয়দিন পরই সার্বিক আইনশৃঙ্খলার প্রস্তুতি হিসেবে নির্বাচনী এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হবে। স্ট্রাইকিং এবং মোবাইল ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এর বাইরে থাকবে নির্বাহী এবং বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটরা। ইতোমধ্যে সার্বিক নিরাপত্তা পরিকল্পনা চ‚ড়ান্ত করা হয়েছে। ইসি সূত্রে জানা গেছে এবারই প্রথমবারের মতো মাঠে নামছেন গ্রাম পুলিশের সদস্যরা। জানা গেছে গ্রাম পুলিশের সদস্যরা পুলিশ, বিজিবি ও র‌্যাব সদস্যদের মাঠ পর্যায়ে তথ্য দিয়ে নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করবেন। প্রতি ইউনিয়ন পরিষদে একজন করে দফাদার এবং প্রতি ওয়ার্ডে একজন করে চৌকিদার এবারের নির্বাচনী দায়িত্বে থাকবেন। ইতোমধ্যে নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য কি হারে ভাতা পাবেন সেটাও চ‚ড়ান্ত করেছে কমিশন। তারা জানায়, ৬৪টি জেলায় ৪১ হাজার গ্রাম পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে চার দিন কাজ করবে। এ দায়িত্বে গ্রাম পুলিশের চৌকিদাররা প্রতিদিন ৫শ’ টাকার এবং দফাদাররা ৬শ’ টাকা করে ভাতা পাবেন। দফাদার ও চৌকিদার মিলে সারাদেশে গ্রামপুলিশের সংখ্যা প্রায় ৪৬ হাজার। ইসি সচিব বলেন, নির্বাচনে গ্রামপুলিশের জন্য বাজেট ধরা হয়েছে ৮ কোটি ২১ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। এই বরাদ্দ জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। গ্রাম পুলিশ জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে এই বরাদ্দ বুঝে নেবেন। জানা গেছে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকেও নিরাপত্তা পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্নের জন্য নির্বাচনের সময় মাঠে থাকবে পুলিশের ১ লাখ ৭০ হাজার সদস্য। নির্বাচনে প্রার্থী, ভোটার, প্রিসাইডিং অফিসার, রিটার্নিং অফিসারসহ প্রত্যেককে নিরাপত্তা দিতে ইতোমধ্যে নির্বাচনী ছক তৈরি করেছে পুলিশ। নিñিদ্র নিরাপত্তা দিতে পুলিশ সদস্যরা নিজেদের ও অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে। নির্বাচনে সেনাবাহিনী, বিজিবি, আনসার, র‌্যাব সদস্যরা মাঠে থাকলেও নিরাপত্তার মূল দায়িত্ব থাকবে পুলিশের ওপর। স্ট্রাইকিং ও মোবাইল টিমের পাশাপাশি কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলায় থাকছে আলাদা নিরাপত্তা পরিকল্পনা। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী এবারের নির্বাচনে মেট্রোপলিটন এলাকায় ভোটকেন্দ্রের পাহারায় থাকবেন ১৬ জন সদস্য। এর মধ্যে অস্ত্রসহ পুলিশ সদস্য তিনজন, অঙ্গীভূত আনসার ১২ জন ও একজন গ্রাম পুলিশ। এসব এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে পুলিশের সদস্য সংখ্যা দুইজন বাড়িয়ে ১৮ জন রাখা হবে। অপরদিকে মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে অবস্থিত ভোটকেন্দ্রগুলোতে একজন পুলিশ সদস্যসহ ১৪ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে দুইজন পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন সদস্য মোতায়েন করা হবে। পার্বত্য এলাকা, দুর্গম ও দ্বীপাঞ্চল এলাকার ভোটকেন্দ্রগুলোতে দুইজন অস্ত্রধারী পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে পুলিশ সদস্য একজন বাড়িয়ে ১৬ জন মোতায়েন করা হবে। ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা ভোটগ্রহণের দুদিন আগে, ভোটের দিন ও ভোটের পরের দিন পর্যন্ত মোট চার দিন মাঠে থাকবেন। আর অঙ্গীভূত আনসার সদস্যরা ভোটগ্রহণের তিন দিন আগে মাঠে নেমে থাকবেন পরের দিন পর্যন্ত।
×