ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অদ্ভুত সব গাড়ি

প্রকাশিত: ০৭:৩৭, ২১ ডিসেম্বর ২০১৮

অদ্ভুত সব গাড়ি

কোনিগসেগ অ্যাগেরা আরএস সুইডেনের তৈরি অসাধারণ সুন্দর এই গাড়িটি বিশ্বের সর্বাপেক্ষা দ্রæতগামী গাড়ি, যার মূল্য ২.১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গাড়িটি ঘণ্টায় ২৮৪ মাইল বেগে ছুটতে পারে, যা আপনাকে হতবাক করে দেয়ার জন্য যথেষ্ট। সামর্থ্য থাকলে গাড়িটি আপনি কিনতেই পারেন কিন্তু গাড়িটির গতির ব্যাপারেও সচেতন থাকুন। এক্টো-১ ‘ঘোস্টবাস্টার্স’ নামক জনপ্রিয় সিনেমায় প্রেতাত্মা অনুসন্ধানের কাজে ব্যবহৃত একটি গাড়ি দেখানো হয়। বাস্তবের এক্টো-১ নামক গাড়িটি বলা যায় সেটিরই একটি প্রতিরূপ। ১৯৫৯ সালে তৈরি ‘ক্যাডিল্যাক মিলার মেটেওর’ নামক এ্যাম্বুলেন্সের সংস্করণের মাধ্যমে এক্টো-১ গাড়িগুলো তৈরি করা হয়েছিল। অদ্ভুত ধরনের প্রযুক্তিসংবলিত এক্টো-১ হুবহু ঘোস্টবাস্টার্স চলচ্চিত্রের গাড়িটির মতোই দেখতে এবং সে সময় মাত্র ৪০০টি এক্টো-১ তৈরি করা হয়েছিল। পিল পি৫০ তিন চাকাবিশিষ্ট ‘পিল পি৫০’ বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম গাড়ি, যা ১৯৬০ সালের দিকে বেশ জনপ্রিয় ছিল। সামনে থেকে পেছনে মাত্র ৫৪ ইঞ্চি লম্বা গাড়িটি খুবই অল্প জায়গার মধ্যে আপনি পার্ক করে ফেলতে পারবেন। হাস্যকর হলেও সত্য যে, পার্ক করার পর গাড়িটি খুঁজে পেতে আপনাকে যথেষ্ট বেগ পেতে হবে। ম্যাকলারেন ৬৫০এস স্পাইডার বিশ্বের নজরকাড়া কনভার্টেবল গাড়িগুলোর প্রথম কাতারে রয়েছে ‘ম্যাকলারেন ৬৫০এস স্পাইডার’ গাড়িটি। চলন্ত অবস্থায় মাত্র ১৭ সেকেন্ডে গাড়িটির ছাদ ওঠানো এবং নামানো যায়। কিন্তু সেক্ষেত্রে একটু নিয়মনীতি আপনাকে মেনে চলতে হবে। গাড়ির গতি ঘণ্টায় ১৯ মাইলের মধ্যে থাকলে চলন্ত অবস্থায় ছাদ ওঠা-নামা করানো সম্ভব। একবার ছাদ ওঠানো বা নামানো হয়ে গেলে মাত্র ৩ সেকেন্ডে গাড়িটির গতি ঘণ্টায় ০-১০০ মাইল পর্যন্ত ওঠানো যায়। অসাধারণ সুন্দর এই গাড়িটি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২০৪ মাইল বেগে ছুটতে পারে। ব্যাটমোবাইল আপনি জেনে অবাক হবেন যে ‘দ্য ডার্ক নাইট’ সিনেমায় প্রদর্শিত ব্যাটম্যানের গাড়িটি পৃথিবীতে সত্যিই রয়েছে। ভয়ানক দেখতে ‘ব্যাটমোবাইল’ নামক গাড়িটির মূল্য ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা বিলাসী মানুষজনের অন্যতম চাহিদার বস্তু। ৪৪ ইঞ্চি চাকাবিশিষ্ট ব্যাট মোবাইলে রয়েছে দানবীয় এক ইঞ্জিন, যা বিশ্বের অন্যান্য যে কোন গাড়ির তুলনায় ব্যাপক শক্তিশালী। তাছাড়া গাড়িটিতে লাগানো হয়েছে ৫টি ক্যামেরা এবং পরিবর্তনযোগ্য জানালা। প্রযুক্তির এক অসাধারণ মেলবন্ধনে তৈরি গাড়িটি মানুষকে ভয় পাইয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। থ্রাস্ট এসএসসি বিমানে ব্যবহৃত টারবাইন প্রযুক্তিতে তৈরি জেটইঞ্জিন চালিত অদ্ভুত এক গাড়ি হচ্ছে ‘থ্রাস্ট এসএসসি’। ১৯৯৭ সালে পরীক্ষামূলকভাবে চালানোর সময় গাড়িটির গতি ছিল ঘণ্টায় ৭৬৩.০৩৫ মাইল, যা শব্দের গতির চেয়েও বেশি। ‘থ্রাস্ট এসএসসি’ বিশ্বের প্রথম গাড়ি, যা শব্দের গতির চেয়েও দ্রæত ছুটতে পারে। ফলে এটি কোনভাবেই রাস্তায় চালানোর উপযোগী গাড়ি নয়। সুপার ফেরারি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর এবং বিলাসী গাড়িগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘ম্যানসরি স্ট্যালন’ নামক ফেরারি মডেলের গাড়িটি। অসাধারণ সৌন্দর্য এবং ভয়ানক গতিবিশিষ্ট গাড়িটি উন্মোচন করা হয় জেনেভা মোটর প্রদর্শনীর ৮৮তম বর্ষপূর্তিতে। প্রদর্শনীটিতে সবার নজর ছিল তখন ম্যানসরি স্ট্যালনের দিকে। ফেরারি মডেলের গাড়িগুলোর মধ্যে ‘ম্যানসরি স্ট্যালন’ হচ্ছে সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন এবং বিলাসী এক গাড়ি। ম্যাককুইন ‘কারস থ্রি’ সিনেমার প্রচারের জন্য পিক্সার স্টুডিও থেকে আলোকসজ্জায় সজ্জিত ম্যাককুইন নামক একটি গাড়ি বিশ্বব্যাপী ভ্রমণের জন্য পাঠানো হয়। প্রদর্শনীর জন্য আমেরিকার ডেট্রয়েট থেকে মালেশিয়া পর্যন্ত গাড়িটি যাত্রা করে। চলচ্চিত্র নির্মাতারা বলেন, বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশের সংমিশ্রণে তৈরি ‘ম্যাককুইন’ অসাধারণ শক্তিশালী এক গাড়ি। ড্র্যাগস্টার মিলার রেস কার কোম্পানির নির্মাণকৃত এই ড্রাগস্টার রেসিং গাড়িটি খুবই দ্রæত গতিসম্পন্ন। আপনি জেনে অবাক হবেন যে, প্রচন্ড ক্ষিপ্রগতির এই গাড়ি থামাতে হলে যে প্যারাস্যুট প্রয়োজন তার মূল্য ৪২০ মার্কিন ডলার। ভক্সওয়াগেন বিটল বাবলটপ ১৯৬০ সালে নির্মিত অদ্ভুত ধরনের গাড়ি দভক্সওয়াগেন বিটল বাবলটপ। গাড়িটির জানালা দরজা বলতে রয়েছে গোল গম্বুজ আকৃতির কাচের ঢাকনা যা খুলে আপনাকে ভিতরে প্রবেশ করতে হবে। আমেরিকার ডেট্রয়েটের এক গাড়ি প্রদর্শনীতে গাড়িটি সর্বপ্রথম জনসমক্ষে আনা হয় এবং গাড়িতে ব্যবহৃত অসাধারণ সব প্রযুক্তি দেখে সবাই রীতিমতো হতবাক হয়ে যান। তবে চমৎকার এই গাড়িটি বৃষ্টির মধ্যে চালানো বেশ কষ্টকর। ডেলোরিয়ান ডিএমসি-১২ বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে টাইম মেশিন হিসেবে প্রদর্শিত হওয়া অনন্য সাধারণ এক গাড়ি ‘ডেলোরিয়ান ডিএমসি-১২’। কিন্তু উৎপাদন শুরু করার কিছুদিনের মধ্যেই গাড়ি নির্মাতা কোম্পানিটি দেউলিয়া হয়ে যায়। বর্তমানে বিশ্বে মাত্র ৬,৫০০টি আসল ‘ডেলোরিয়ান ডিএমসি-১২’ রয়েছে। ক্যাট’স মিয়াও ভাবতে অবাক লাগলেও আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরের রাস্তায় বিড়ালসদৃশ একটি গাড়ি প্রায়ই দেখা যায়। ‘মিয়াও মিক্স’ নামক বিড়ালের খাবার উৎপাদনকারী একটি কোম্পানি তাদের ব্যবসায়িক প্রচারণা চালানোর কাজে গাড়িটি ব্যবহার করে থাকে। স্লিংসট গ্র্যান্ড ট্যুরিং এলই মোবাইল এবং গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পোলারিসের ‘স্লিংসট গ্র্যান্ড ট্যুরিং এলই’ হচ্ছে, বিশ্বের অন্যতম উন্নত প্রযুক্তির গাড়ি। এটি অনেকটা ব্যাট মোবাইলের মতো ভয়ানক দেখতে এবং গাড়িটিতে দারুণ সব প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়েছে, যা আপনাকে মুহূর্তের মধ্যে হতবাক করে দিতে পারে। প্রকৃতপক্ষে একটু ভিন্নমাত্রার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার জন্য এই গাড়িটির কোন বিকল্প নেই। বাক্স গাড়ি রেড বুল কোম্পানি প্রতিবছর একপ্রকার গাড়ির প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যেখানে গাড়িগুলো বিভিন্নরকম বাক্স দিয়ে তৈরি করা হয়। গাড়িগুলোতে কোনরকম ইঞ্জিন থাকে না এবং মাধ্যাকর্ষণ বলের প্রভাবে গাড়িগুলো আপনাআপনিই চলে। সুইজারল্যান্ডের লাউসেনের পাহাড়ি ঢালে প্রতিবছর এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন প্রকার বাক্স দিয়ে গাড়ি বানিয়ে তাতে চাকা লাগিয়ে অনেকেই এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। ফোর্ড এফ-৩৫০ সুপার ডিউটি এক্সএল ফোর্ড কোম্পানির নির্মাণকৃত দানবীয় এই গাড়িটি তৈরি করা হয়েছে অনেকটা পুলিশের গাড়ির ধাঁচে। আমেরিকার লাস ভেগাসের এক প্রদর্শনীতে গাড়িটি উন্মোচন করা হয়। ‘ফোর্ড এফ-৩৫০ সুপার ডিউটি এক্সএল’ শুধু একটি গাড়ি নয়, বরং সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদানকারী অসাধারণ এক যন্ত্রদানব। তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট
×