ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইশতেহারে ৩২ দফা

প্রকাশিত: ০৬:৩২, ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮

 বাম গণতান্ত্রিক জোটের ইশতেহারে ৩২ দফা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকা সরকার ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার ওপর নির্ভর করছে বলে জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা। বুধবার রাজধানীর পুরানা পল্টনে মুক্তিভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচনী ইশতেহার উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ কথা বলেন। বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম। জোটের ৩২ দফা ইশতেহারে বলা হয়েছে, বামপন্থীরা জয়ী হলে রুটিন কাজের জন্য নির্বাচনকালীন সরকারের বিধান সংবিধানে যুক্ত করা হবে। এছাড়া নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও কার্যকর সংস্থা হিসেবে গড়ে তুলতে সংবিধানের ১১৮(১) ধারা মোতাবেক প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়নসহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তারা। ইশতেহার ঘোষণা করে জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়, দেশের শ্রমজীবী মানুষের উপার্জিত সম্পদ এক ভাগ লুটেরা ভোগ করছে। জোট-মহাজোটের প্রতিনিধিরা ওই একভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। এর বিপরীতে বাম জোট নিরানব্বই ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করেন। এ নিরানব্বই ভাগের প্রতিনিধিরা কাস্তে, মই ও কোদাল মার্কায় নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এ জন্য নেতৃবৃন্দ বাম জোটের প্রার্থীদের ভোট দেয়ার আহ্বান জানান। ইশতেহারে যা আছে ॥ ইশতেহারে আরও বলা হয়Ñ বাম জোটের প্রার্থীরা জয়ী হলে সংসদের ভেতরে বাইরে তারা এ (ইশতেহারের বর্ণিত) বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে। সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুসহ জোটের ৫৪ দফা সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচনী ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা হবে। না ভোটের বিধানও চালু হবে। ভোটদানে বাধা দিলে শাস্তির বিধান করা হবে বলেও ইশতেহারে রয়েছে। মেহনতি ও দরিদ্র প্রার্থীদের নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে আর্থিক বাধাগুলো দূর করা হবে। পর্যায়ক্রমে সব প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার কাজে সরকারী অর্থে ও ব্যবস্থাপনায় পরিচালনা করবে। এ ছাড়া বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল সুন্দরবনসহ অন্যান্য বনাঞ্চল সংরক্ষণে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। রামপাল তাপবিদ্যুত কেন্দ্রসহ সুন্দরবন এলাকায় শিল্প-কারখানা নির্মাণ বন্ধ, সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করা হবে। এ দিকে লিখিত বক্তব্যে মোঃ শাহ আলম নির্বাচনী আচরণবিধির বেপরোয়া লঙ্ঘনের বিষয়ে এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোন ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশ ও জনপ্রশাসনের ওপর নির্বাচন কমিশনের কর্তৃত্ব ও নিয়ন্ত্রণ দেখা যাচ্ছে না। দৃশ্যত তারা এখনও সরকারের নির্দেশনার বাইরে যেতে পারছে না। এটা অনুমান করা মোটেও কঠিন নয় যে, সরকার তার সাজানো ছকেই ৩০ ডিসেম্বর নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করতে চায়। এ কারণে মানুষের মধ্যে এখনও গভীর উদ্বেগ রয়েছে যে তারা নিরাপদে ও বিনা বাধায় ভোট কেন্দ্রে যেতে পারবে কিনা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ প্রমুখ।
×