ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বললেন ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা

সিরিজ জেতাই আমাদের লক্ষ্য

প্রকাশিত: ০৭:১২, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

সিরিজ জেতাই আমাদের লক্ষ্য

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ বছর ঘরের মাঠে শেষ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু হবে। টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। এবার ওয়ানডে সিরিজেও কী একই ফল মিলবে? বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা বলেছেন, ‘আমাদের জিততে হবে।’ শনিবার সিরিজপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে মাশরাফি সিরিজ নিয়ে আরও অনেক বিষয় খোলাসা করেছেন। তার সারসংক্ষেপ এখানে তুলে ধরা হলো। * বছরটা ভাল গেছে... মাশরাফি বিন মর্তুজা ॥ এই বছরে আমাদের পারসেন্টেজ অনেক ভাল, স্রেফ দুইটা ফাইনাল (তিনজাতি সিরিজ ও নিদাহাস ট্রফি) বাদ দিলে। অভিয়েসলি এখানে একটা ফাইনাল জিততে পারলে ভাল হতো, স্পেশালি এশিয়া কাপ ফাইনাল। এছাড়া আমার কাছে মনে হয় এই বছর রেটিং খুব ভাল আছে। আর অবশ্যই ভালভাবে শেষ করতে পারলে খুব ভাল হবে। বিশেষ করে সামনের বছর শুরু থেকে অনেক চ্যালেঞ্জ আছে। শেষটা ভাল করলে এই বছরটা খুব ভাল যাবে। * ধবল ধোলাই সম্ভব? মাশরাফি ॥ এখনও ওয়ানডে একটাও শুরু হয়নি, হোয়াইটওয়াশ তো মাথায় আসার সুযোগ নাই। তবে প্রথম ম্যাচটা ইমপর্টেন্ট। দেখা যাক কাল (আজ) কেমন হয়। আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ আসলে, মাসল পাওয়ার তাদের অনেক বেশি। এই ধরনের ফরমেটে একজন দুইজন কিন্তু গেইম চেইঞ্জ করে। এই জায়গাটায় ওদের কয়েকজন আছে এমন, ডিস্ট্রয় করতে পারে। আমাদের ওদের বিপক্ষে এই পার্টটা খেয়াল রাখা ইম্পর্টেন্ট। তবে আসলে তিনটা ম্যাচের দিকে তো এখনই বলা যায় না। ওদের জন্য ফরমেট যত ছোট হবে, তত বেশি সুট করবে। আমার কাছে মনে হয় প্রথম ম্যাচের দিকেই ফোকাস থাকাই বেটার। প্রস্তুতি ম্যাচের উইকেট যেমন ছিল, এখানের (মিরপুরের) উইকেট নিশ্চিত ওরকম থাকার কথা না। কারণ এখানে তিন শ’ রানের ইনিংস আবার চেজ খুব কমই হয়। সেক্ষেত্রে ভলিউমটা ভিন্ন হতে পারে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রস্তুতি ম্যাচে যেটা আত্মবিশ্বাস দরকার ছিল, যা যা দরকার ছিল করতে পেরেছে। এখন আসল কাজ শুরু কাল (আজ) থেকে। প্রথম ম্যাচটা আসলে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তার পরেরটা পরে ভাবা যাবে। * সেরা অবস্থায় খেলতে নামছেন? মাশরাফি ॥ আসলে ফরমেট তো একেকটা একেকরম। টেস্টে যেমন গেছে ওয়ানডেতেও তেমন যাবে সেটা বলা যায় না। কাজেই ফর্মে যারা আছে তাদের দায়িত্ব আরও বেশি। এশিয়া কাপ থেকে অবশ্যই এই ফরমেটেও ভাল খেলছে। আশাকরি ছন্দ থাকলে সুবিধা হবে। * সাকিব-তামিম ফেরায় আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে? মাশরাফি ॥ অবশ্যই সাকিব, তামিম দলে থাকা আমাদের জন্য বিরাট এ্যাডভান্টেজ। প্রস্তুতি ম্যাচেও তামিম দারুণ খেলেছে, এটা তামিমের জন্যও স্বস্তি, আমাদের জন্যও স্বস্তি। সাকিব হয়তো দুইটা টেস্ট ম্যাচ খেলে কিছুটা মানিয়ে নিয়েছে। তামিমের হয়তো কিছুটা সময় লাগতে পারে। কিন্তু ওরা দুইজন থাকা আমাদের জন্য, প্রত্যেক খেলোয়াড়ের জন্য স্বস্তিদায়ক ব্যাপার। * ফর্মে থাকা চার ওপেনার... মাশরাফি ॥ আমাদের ১৬ জনের যে স্কোয়াড আছে। আপনি যদি ওইভাবে দেখেন যে নরমালি হোমে সাধারণত ১৪ জন রাখা হয়। বা মেক্সিমাম ১৫ জন রাখা হয়। সেখানে ১৬ জন রাখার কারণ যাতে তাদের কনফিডেন্স ডাউন না হয়, মনিটরিং করা। এই জায়গায় এখানে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে যে ক’জন রিসেন্টলি ভাল খেলেছে বা খেলছে তাদের রাখা। আর আপনি যেটা বললেন ভাল (মধুর) সমস্যা হলো সবাই ফর্মে আছে টপঅর্ডারে। যেটা আমরা অনেকদিন থেকে চাচ্ছিলাম। একটা সিদ্ধান্ত যেতেই হবে। ভাল হলে মনে হবে এটাই ঠিক আছে। খারাপ হলে মনে হবে যে রান করেও বাদ গেছে হয়তো ওকেই খেলালে ভাল হতো। কথাবার্তা অনেক চলবে। এখনও অনেকের চিন্তা-ভাবনা আছে। কোচ, নির্বাচকদের সঙ্গে আলাপ করে একটা সিদ্ধান্ত নিতেই হবে। ইমরুল ছয়ে ব্যাটিং করেছে। এক্সট্রা অর্ডিনারি একটা ইনিংস খেলেছে। সৌম্য ফাইনালে সাত নম্বরে নেমে দারুণ ব্যাটিং করেছে। হতে পারে। বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা এমন কিছু করতেও পারি। * উইকেট... মাশরাফি ॥ যখন ডিউ (শিশির) থাকবে। ডিউ কতটা প্রভাব ফেলবে সেটা কিন্তু অনেক কিছু ম্যাটার করে। আসলে দিন রাতের খেলায় এই টাইমটায় আপনার ডিউ এফেক্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। স্পিনাররা কতটুকু সাহায্য পাবে। তবে আমাদের পেস বোলাররাও ভাল ব্যাকআপ করছে। আপনি যদি ২০১৫ থেকে দেখেন। আমরা একটা রিদমে খেলছি। তিনজন পেস বোলার সবসময় খেলছি। এমনকি কখনও চারজন খেলানো হচ্ছে। সো টেস্ট ম্যাচের ওপর নির্ভর করে আপনি ডিসাইড করতে পারবেন না। আপনাকে ওইভাবে খেলতে হবে। আপনি আমি স্টিল তিনজন পেস বোলার খেলাব এবং খেলাতে চাই এটা নিশ্চিত। ফল আপনার পক্ষে আসছে কিনা সেটা ম্যাটার করে। তিনজন ফাস্ট বোলার নিয়ে এমনকি ফ্ল্যাট উইকেটেও আমরা খেলেছি। আর ওয়ানডে ক্রিকেটে স্পিনের একটা ডিসএ্যাডভান্টেজ আছে কারণ ৪০ ওভার পর্যন্ত পাওয়ার প্লে থাকে। যখন পাঁচটা বোলার ওপরে থাকে তখন স্পিনে মারা খুব ইজি। ফাস্ট বোলিং থাকলে হয় কি আপনি যে কোন এক জায়গা ব্লক করে বল করতে পারেন। স্পিনার আনলে খুব এক্সট্রা অর্ডিনারি না হলে এটা টেস্ট ক্রিকেট না, ওয়ানডের সিচুয়েশন টেস্টে হয় না। ওয়ানডেতে আপনার শটস খেলবে, রান করতে চাইবে প্রতিপক্ষে যেই থাকুক। সেক্ষেত্রে এক্সট্রা অর্ডিনারি না হয়, সাকিব বা মিরাজ ভাল করছে, ভাল করছে না তা নয়। তবে আমাদের সাফল্যের হার ফ্ল্যাট উইকেটেও পেস বোলারদের বেশি। কাজেই ওদিকটা খেয়াল রাখা জরুরী। * বাংলাদেশ কী ফেবারিট হিসেবে শুরু করছে? মাশরাফি ॥ আমি বলব সমানভাবে। কারণ যেটা বললাম যে, ওদের দলে কিছু আছে যেটা, দুর্দান্ত একজন ফাস্ট বোলার আছে। জোরে বোলিং করবে। যেটা হয় যে, জোরে বোলারদের অনেক সময় হুটহাট করে উইকেট পড়ে গেলে শুরুতে চাপ আসলো, তাই এই জায়গাগুলো চিন্তা করার বিষয় আছে। একইভাবে যেটা বললাম যে, ওদের কিছু আমাদের থেকে অনেক বেশি সাহায্য পাবে, ওদের মাসল পাওয়ার যেটা আছে। যেটা এই ধরনের ফরমেটে খুব বেশি কাজ করে। বিশেষ করে ৪০ ওভার পর্যন্ত যে ফিল্ডিং বাধ্যবাধকতা আছে। তাই আমাদের ওদের যেন জুটি বড় করতে না পারে সেদিকটাও খেয়াল রাখতে হবে। এমনি তো জেতা সম্ভব না। অবশ্যই হোম ওয়ার্ক, একই সঙ্গে মাঠে বাস্তবায়নটা শতভাগ ঠিক থাকতে হবে। অন্তত ৮০ ভাগ ঠিক থাকলে হয়তোবা ভাল ম্যাচ হবে। আমি আশা করছি না যে টেস্টের মতো বা আগে পরে যেসব ম্যাচ জিতে আসছি এত সহজ হবে। * আপনার ২০০তম ম্যাচ... মাশরাফি ॥ ধন্যবাদ মনে করার জন্য। আমার আসলে খেয়াল ছিল না। আমি আগেও বলেছি, এগুলো আমাকে টাচ করে না। এগুলো আমার কাছে এত গুরুত্বপূর্ণও না। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কালকের (আজ) ম্যাচটা জেতা। এইদিক থেকে ভাল লাগছে যে, বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডে ফরমেটে অন্তত ২০০তম ম্যাচ হচ্ছে। এটা অবশ্যই ভাল লাগবে একটা সময়। যখন মানুষ বলবে, তুমি বাংলাদেশের হয়ে ২০০টা ম্যাচ খেলেছো। এটা অবশ্যই একটা অর্জন। ওই জায়গা থেকে অবশ্যই ভাল লাগবে। কিন্তু কালকের (আজকের) ম্যাচের ওপরে আর কিছুর গুরুত্ব একেবারেই নাই। এটা চিন্তা করে খেলার সুযোগ নেই। কালকের (আজকের) ম্যাচটা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জিততে হবে এটাই।
×