ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নদী-খাল দখল থামছে না

প্রকাশিত: ০৬:৫০, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

নদী-খাল দখল থামছে না

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ৮ ডিসেম্বর ॥ পৌর শহরে সড়কের পাশের জমি, সরকারী পতিত জমি দখল হতে হতে এবার দখল হতে শুরু করেছে নদী আর খালের জমি। লুকিয়ে ছাপিয়ে নয়, প্রকাশ্যেই বীরদর্পে অপকর্মগুলোতে হাত দিয়েছেন কেউ কেউ। মূলত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নীরবতাই তাদের উৎসাহ জুগিয়েছে এমন অপকর্ম করতে। আর দখলের পাশাপাশি রামদাড়া খাল ও টাঙ্গন নদীতে দূষণ বাড়ছে পাল্লা দিয়ে। ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের বর্জ্য পানি অপসারণের একমাত্র বৃহদাকার রামদাড়া খালের পশ্চিমপ্রান্ত, যেখানে টাঙ্গন নদীর সঙ্গে মিলিত হয়েছে সেখানেই দেখা যায় নদীর পাড় থেকে প্রায় ৪০ ফুট ভেতরে পাকা পিলার এবং দেয়াল গেঁথে সীমানা প্রাচীর দিয়ে ঘিরে জায়গা দখল করে রাখা হয়েছে। তবে কাজ কিছুদূর এগুনোর পর প্রশাসন থেকে বাধা প্রদান করায় কাজ বন্ধ রয়েছে। এখানে ব্রিজের কোল ঘেঁষেই একজন অনুরূপভাবে দেয়াল দিয়ে খালের প্রায় এক চতুর্থাংশ দখল করে বসে আছেন। ব্রিজের নিচের অংশও দখলে নিয়েছেন কেউ কেউ। সময় সুযোগ পেলেই এখানে মাটি ভরাট করে নির্মাণ কাজ শুরু করবেন বলে জানান এলাকাবাসী। এ খালটি দু’পার্শ্বে আরও অনেকেই মাটি ফেলে ভরাট করে নিজের বাড়ির সীমানা বৃদ্ধি করেছেন। সুজন ঠাকুরগাঁও জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল লতিফ জানান, একাধিকবার সংবাদ প্রকাশ করে ও সম্মিলিতভাবে জেলা প্রশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তিনি জানান, সাবেক ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক আব্দুল আউয়াল বলেছিলেন, বিষয়টি তাঁর নজরে এসেছে। তিনি নিজে অবস্থা দেখেও এসেছেন। আগামীতে এ ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে কি না জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক জানিয়েছিলেন ‘যেটুকু নির্মাণ কাজ করা হয়েছে তা ভেঙ্গে ফেলতে হবে। একাজটি করতে হলে যে পরিমাণ টাকা দরকার তা ফান্ডে নেই। টাকার সংস্থান হলেই ভেঙ্গে ফেলে নদী এবং খাল অবমুক্ত করা হবে’। কিন্তু কার্যত তেমন কিছুই হয়নি বরং গত এক বছরে রামদাড়া খাল আর টাঙ্গন নদীতে দখল ও দূষণ বেড়েছে আরো। তাছাড়া টাঙ্গন নদীর বাঁধের ওপর ও আশপাশেও অবৈধভাবে গড়ে উঠছে বাড়ি ঘর। জেলা কারাগার ও জেলা প্রশাসকের বাংলোর পশ্চিমে নদীর বাঁধের ওপর লম্বা পাকা দালান তৈরি হয়ে গেছে। সাবেক জেলা প্রশাসক বলেছিলেন ‘নিজের জায়গা হলেও এভাবে বাড়ি করা যায় না। পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে বলে এগুলি অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’। এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী অরুন কুমার সেন জানান, আমরা শুধু নদী ভাঙ্গন রোধ ও নদী খনন করি। দখলের বিষয়টি দেখবেন প্রশাসন। জেলা শহরের পরিবেশবাদী আজমত রানা জানান, বিজিবি ক্যাম্পের পাশে সত্যপীর ব্রিজের নিচে রামদাড়া খালও দখল হয়ে যাচ্ছে। প্রায় খালের ওপর ও খাল ঘেঁষে পাকা ঘর তৈরি করেছেন অনেকে। আস্তে আস্তে এই খালও দখল হয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক ড. কে এম আখতারুজ্জামান সেলিম বলেন, কিছুদিন আগে সংশ্লিষ্ট কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় নদীর সীমানা নির্ধারণ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। নির্বাচনের পর সীমানা মাপজোকের কাজ শেষ করেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
×