ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রাহককে কলড্রপের টাকা বা ‘টক টাইম’ ফেরতে নীতিমালা অনুমোদন

প্রকাশিত: ০৫:৫২, ৯ ডিসেম্বর ২০১৮

গ্রাহককে কলড্রপের টাকা বা ‘টক টাইম’ ফেরতে নীতিমালা অনুমোদন

ফিরোজ মান্না ॥ মোবাইল ফোনের ‘কোয়ালিটি অব সার্ভিস’ (কিউওএস) নীতিমালা সম্প্রতি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রজ্ঞাপন জারির পর বিটিআরসি অপারেটরদের কাছে চিঠিও দিয়েছে। কিন্তু অপারেটররা মানের দিকে না তাকিয়ে সংযোগ বাড়িয়েই চলেছে। খোদ ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার মোবাইলের কলড্রপ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তার মতে মোবাইলে শতকরা ৩০ ভাগ কলড্রপ হচ্ছে। আন্তর্জাতিক মানে সর্বোচ্চ ৩ ভাগ কলড্রপ অনুমোদিত। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখার জন্য বিটিআরসিকে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। সূত্র জানায়, মোবাইলের ভয়েস কল ও ইন্টারনেটের উচ্চমূল্য, দুর্বল নেটওয়ার্ক কাভারেজ, নেটওয়ার্ক সমস্যা, ভয়েস কলের নিম্নমান, গ্রাহক সেবার অসন্তুষ্টি দূর করবে মানসম্মত সেবা তথা কোয়ালিটি অব সার্ভিস (কিউওএস) নীতিমালা। নীতিমালা বাস্তবায়নে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) মনিটর করবে। মানসম্মত সেবা দেয়ার বেলায় কোন অপারেটরের গাফিলতি প্রমাণ হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিটিআরসি। বিটিআরসি জানায়, প্রতিদিন মোবাইল অপারেটরদের গড়ে ২২২ কোটি মিনিট কলড্রপ হচ্ছে। সীমাহীন কলড্রপে মোবাইল গ্রাহকরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। গ্রাহকরা কলড্রপের ক্ষতিপূরণ ফেরত পাচ্ছে কিনা এমন কোন মনিটরও হচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহকরা অন্ধকারেই রয়ে যাচ্ছে। একটি মাত্র অপারেটর গত বছরের শেষ দিকে তাদের ৬০ লাখ মিনিট কলড্রপের হিসাব বিটিআরসিতে জমা দিয়েছিল। বাকি তিনটি অপারেটর কোন হিসাব জমা দেয়নি। তারা মুখে বলছে, কলড্রপের ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে। অপারেটররা দিনে কলড্রপ থেকে কয়েক শ’ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। এই টাকার কোন রাজস্ব সরকার পাচ্ছে না। গ্রাহকদের কলড্রপের টাকা বা ‘টকটাইম’ ফেরত দেয়ার নির্দেশটি বাস্তবায়নের জন্য মোবাইল অপারেটরদের গত বছরের জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয়া হয়েছিল। কিন্তু সে বছরের জুনের মধ্যে অপারেটররা এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করেনি। আরও পরে তারা বিটিআরসিকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, কলড্রপের টাকা গ্রাহককে ফেরত দেয়া হচ্ছে। নিয়মানুযায়ী প্রতিমাসের কলড্রপের হিসাব বিটিআরসিতে জমা দেয়ার কথা থাকলেও কোন অপারেটর এ হিসাব জমা দেয়নি। ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী বলেন, মোবাইল ফোনের কোয়ালিটি অব সার্ভিস নীতিমালার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নীতিমালা অনুযায়ী অপারেটররা গ্রাহককে মানসম্মত সার্ভিস দিতে বাধ্য। কিন্তু তারা তা করছে না। বিটিআরসিকে প্রতিটি অপারেটরের সার্ভিস মনিটর করে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ৩০ ভাগ কলড্রপ কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না। নিয়ম অনুযায়ী কলড্রপের টাকা গ্রাহককে ফেরত দেয়ার কথা। কোন কোন অপারেটর তাও করছে না। আইটিইউর নিয়ম অনুযায়ী শতকরা ৩ ভাগ কলড্রপ বৈধ। কিন্তু এর ওপরে গেলেই অপারেটরকে কলড্রপের টাকা ফেরত দিতে হবে। বিটিআরসি সূত্র মতে, বর্তমানে চার অপারেটরের দিনে মোট কলের সংখ্যা গড়ে ২২২ কোটি মিনিট। বিটিআরসির হিসাব অনুযায়ী বর্তমানে দেশে মোবাইল গ্রাহকের সংখ্যা সাড়ে ১৪ কোটি। অপারেটররা বলছে, ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জের (আইসিএক্স) ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্কের দুর্বলতার কারণে কলড্রপ হচ্ছে। এর বাইরে ফাঁকা স্থানে হঠাৎ উঁচু ভবন নির্মাণ এবং থ্রিজি নেটওয়ার্ক কার্পেটিংয়ের কারণেও কলড্রপ হয়। কলড্রপ একদম হবে না এ কথা বলা যাবে না।
×